চোর-পুলিশ খেলায় বন্ধ হবে না ইয়াবা পাচার



কান্ট্রি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার: সারা দেশে চলছে র‌্যাব-পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান। এতে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে প্রায় দুই শতাধিক ইয়াবা কারবারি। এর মধ্যে ইয়াবা রাজ্যখ্যাত কক্সবাজার ও টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে চার ইয়াবা ব্যবসায়ী। তবে এতো কঠোর অভিযানের মধ্যেও থেমে নেই কক্সবাজারের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা।

প্রতিদিনই কোনো না কোনো পয়েন্ট থেকে ইয়াবাসহ পাচারকারী বা পরিত্যক্ত ইয়াবা উদ্ধার করছে র‌্যাব-পুলিশ। এ অভিযানে সঠিক মাদক ব্যবসায়ীরা ধরা পড়ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সংশ্লিষ্টরা। তবে এ অভিযানে বেশিরভাগ ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মগোপন করেছে।

জানা যায়, গত ২৩ মে কক্সবাজারের কলাতলী বাইপাস সড়কের পাশের একটি পাহাড় থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মো. হাসান নামে এক ইয়াবা ব্যবসায়ীর লাশ পাওয়া যায়। মূলত তখন থেকেই মাদকবিরোধী অভিযানের প্রভাব লক্ষ্য করা যায় কক্সবাজারে। এরপর মহেশখালী ও টেকনাফে দুইদিনের ব্যবধানে দুই ইয়াবা ব্যবসায়ীর লাশ পাওয়া যায়। এরমধ্যে একজন টেকনাফের সাবরাংয়ের ইউপি সদস্য ও এমপি বদির বেয়াই আখতার কামাল। এরপর মেরিনড্রাইভ সড়কে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হন। এ ঘটনায় র‌্যাবের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে তার পরিবার। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে একরামের মৃত্যুর একটি অডিও রেকর্ড প্রকাশ করা হয়। অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। এক পর্যায়ে বিতর্কের মুখে অভিযান বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর আবারো বিশেষ অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের মধ্যেও বন্ধ হয়নি টেকনাফ থেকে ইয়াবা পাচার। প্রতিদিনই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে আটক হচ্ছে বিভিন্ন মাদক পাচারকারী বা ব্যবসায়ী।

মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরুর আগে কক্সবাজারের ১১৫১ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি পাঁচটি সংস্থা। সেখানে ৬০ জনকে গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। শুরুর দিকে ওই ৬০ জন গডফাদারকে প্রাথমিক টার্গেট হিসেবে ইঙ্গিতও দিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু সেই টার্গেট শুধু টার্গেটই রয়ে যায়।

গত ২১ মে থেকে শুরু হওয়া অভিযান চলাকালের ৩ মাসে ইয়াবাসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে, চলতি মাসের শুরুতে (১ জুলাই) চট্টগ্রাম নগরের শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বোরহান উদ্দিন (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাকে তল্লাশি করে সঙ্গে থাকা একটি দেয়াল ঘড়ির ভেতর থেকে ৭ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

গত ১২ জুলাই কক্সবাজারের উখিয়ায় ১৫ হাজার পিস ইয়াবা এবং ১৮ ক্যান বিয়ারসহ যুবককে আটক করেছে র‌্যাব। তার নাম নুর আহম্মেদ (৩৫)। তিনি উখিয়ার পালংখালী আনজুমান পাড়ার মৃত ছগির আহম্মেদের ছেলে।

গত ৯ জুলাই টেকনাফের হ্নীলা পশ্চিম লেদায় অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার ইয়াবাসহ দুইজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন- হ্নীলার পূর্ব লেদার অজি উল্লাহর ছেলে মফিজুর রহামান (৩০) ও মোচনী নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আই ব্লকের মৃত ফজল করিমের ছেলে মো. ফয়সাল (২২)। গত ১৫ জুলাই চট্টগ্রামে র‌্যাব-৭ শিশুসহ তিন ব্যক্তির পেট থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে।

কয়েকদিন আগে লক্ষাধিক ইয়াবাসহ ঢাকায় গ্রেফতার হন কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার আব্দুল্লাহ খানের ছেলে শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী আরিফ খান। টানা কয়েকদিন আটকে রাখার পর মাত্র ১২ হাজার ইয়াবা দেখিয়ে তাকে চালান দেয় পুলিশ। এ ঘটনায় ঢাকার ওয়ারী থানায় দায়ের হওয়া ইয়াবা মামলায় কক্সবাজারের অনেকে আসামি হয়েছে।

গত ২৬ মে কক্সবাজার শহরের কলাতলীতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার পিস ইয়াবাসহ নেছার আহমদ (৫০) নামে এক পাচারকারীকে আটক করে র‌্যাব। গত ২৩ মে মেরিনড্রাইভ সড়কের টেকনাফের হাবিরছড়া এলাকা থেকে আড়াই লাখ ইয়াবা উদ্ধার করে টেকনাফ থানা পুলিশ।

একই তারিখে কক্সবাজার শহরের কলাতলীর সার্ফিং চত্বর থেকে মিউজিক ভিডিও করতে আসা ‘সরকার প্রোডাকশন হাউস’ এর ১০ সদস্যকে ১ লাখ ৮ হাজার ইয়াবাসহ আটক করেছে র‌্যাব।

ওই সময় ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটিও জব্দ করা হয়। গত ২৫ মে ১২শ ইয়াবাসহ তিন পাচারকারীকে আটক করে চকরিয়া থানা পুলিশ। একইদিন পেকুয়ায় ইয়াবাসহ এক মাদক পাচারকারীকে আটক করে পুলিশ।

গত ২২ মে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এলাকা থেকে ৩০ হাজার ইয়াবাসহ আলী উল্লাহ নামে একজনকে আটক করে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের গোয়েন্দারা। একইদিন কক্সবাজার শহরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে আলী জোহর নামে এক পাচারকারীকে ২ হাজার ইয়াবাসহ আটক করে তারা।

গত ২০ মে লিংরোড এলাকা থেকে ৬ হাজার ইয়াবাসহ মো. রিফাত নামে এক যুবককে আটক করে র‌্যাব।
গত ২৪ মে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৬ হাজার ইয়াবাসহ ঈগল পরিবহনের ড্রাইভার আবদুল আজিজ শেখ (৪৭) ও সুপারভাইজার মো. সোহেল রানাকে (২৭) আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

এদিকে কোস্টগার্ডের হিসেব অনুযায়ী, এই সংস্থাটি গত ৭ মাসে ৮০ লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। সর্বশেষ গত ১৩ জুলাই টেকনাফের সাইরংখাল এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে।

টেকনাফের পৌর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ কাউছার জানান, অভিযানের সময় কিছুদিন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিন ধরে আবারও বিচরণ বেড়েছে। এখন পুরোদমে ইয়াবা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে তারা।
এদিকে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে আরও ৭টি ক্যাম্প স্থাপন করেছে র‌্যাব। তারা সাঁড়াশি অভিযানের আভাস দিলেও কিন্তু ইয়াবা পাচার বন্ধ হচ্ছে না। তাই এসব অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।

কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া অভিযান নিয়ে অনেক আশা করেছিলাম। মনে করেছিলাম এবার অন্তত ইয়াবার বদনাম থেকে কিছুটা মুক্তি পাবে কক্সবাজার। কিন্তু যেই লাউ সেই কদু। অভিযান চলে কিন্তু ইয়াবা পাচার বন্ধ হয় না। এভাবে চোর-পুলিশ খেলা খেললে কখনোই ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ হবে না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বার্তা২৪.কমকে জানান, মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। এর মধ্যেও অনেক ব্যবসায়ী আড়াল থেকে বিভিন্ন পাচারকারীর মাধ্যমে ইয়াবা পাচারের চেষ্টা করছে। এসব ইয়াবাসহ বিভিন্ন থানায় আটক হচ্ছে পাচারকারীরা।

র‌্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘গত কয়েকদিনে আমরা অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু এক শ্রেণির ব্যবসায়ী এখনো নিজেদের সক্রিয় রাখার চেষ্টা করছে। আমরা ইয়াবা বা মাদক পাচারের বিরুদ্ধে সজাগ রয়েছি।’

টেকনাফস্থ ২ বিজিরি অধিনায়ক লে. কর্নেল আসাদুজ্জামান চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে জানান, সীমান্তে ইয়াবা পাচার প্রতিরোধে এলাকায় স্কুল-কলেজগুলোতে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ইয়াবা পাচার বা অন্য কোনো মাদক যাতে সীমান্ত দিয়ে না ঢুকে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।

   

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতির মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিকিৎসাধীন অবস্থায় গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের এক হাজতি মারা গেছেন। মারা যাওয়া হাজতি নীলফামারীর ডোমার থানার মটুকপুর গ্রামের রুমেল হোসেনের মেয়ে আমিনা বেগম (৪০)। কারাগারে তার হাজতি নং- ৩৯৪/২৪।

শনিবার (১৮ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, মহিলা কারাগারে বন্দি আমিনা বেগমের হঠাৎ বুকে ব্যথা হয়। পরে তাৎক্ষণিক কারাগার থেকে তাকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার শাহজাহান মিয়া বলেন, বুকে ব্যথা উঠলে আমিনাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। কারাবিধি মেনে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

;

শিশু জায়েদ হাসানের দায়িত্ব নিচ্ছেন না মামা, দেওয়া হচ্ছে দত্তক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ভালুকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত মা ও বেঁচে যাওয়া দেড় বছরের শিশু জায়েদ হাসান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা এখন পুরাপুরি সুস্থ। উচ্চ আদালত শিশুটিকে তার মামার জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দিলেও জায়েদের সুন্দর ভবিষ্যত ও নিজের পরিবারের অবস্থার কথা চিন্তা করে দায়িত্ব নিচ্ছেনা মামা রবিন মিয়া। এ কারণেই দেওয়া হবে দত্তক।

আগামীকাল রবিবার(১৯ মে) শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভার আগ পর্যন্ত দত্তক দেওয়ার জন্য আবেদন গ্রহণ করা হবে ও সব আবেদন বোর্ড সভায় পেশ করা হবে এবং আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে একটি পরিবারের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে।

শিশু জায়েদের মামা রবিন মিয়া বলেন আমি পেশায় একজন পিকআপ চালক। মা, বাবা পরিবার ও তিন সন্তান নিয়ে অনেক কষ্ট করে দিন চলে। তাই আমি চাই না আমার কাছে এসে ভাগিনার সুন্দর জীবনটা নষ্ট না হয়। আমি চাই সে একজন ভালো মানুষের ঘরে গিয়ে মানুষের মত মানুষ হোক আমি শান্তি পাবো। সেজন্যই শিশু কল্যাণ বোর্ডের কাছে একটি অনাপত্তি পত্র দিয়েছি।

ময়মনসিংহ জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক ও শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব আব্দুল মজিদ বলেন জায়েদের মামা চান ভাগ্নের সুন্দর ভবিষ্যত। এজন্য শিশু কল্যাণ বোর্ডের প্রতি আস্থা রেখে একটি অনাপত্তিপত্র দিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবার জায়েদকে পেতে আবেদন করছে। তাদের মধ্যে থেকে যাচাই-বাছাই করে আগামীকালের বোর্ড সভা সিদ্ধান্ত হবে জায়েদকে কোন পরিবারে দেওয়া হবে ।

উল্লেখ্য, গত ১০ মে রাত তিনটার দিকে ভালুকা উপজেলার স্বয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় শিশু জায়েদ ও তার মা জায়েদা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ভোররাতেই সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। শিশুটিকে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ও শিশুর মা'কে হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। পরদিন সকালে শিশুটির মা মারা যায়। তবে,আহত শিশুটি হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডেই চিকিৎসাধীন থাকে।

;

যশোরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করায় যশোর সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক ও যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাতেমা আনোয়ারকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানাযায়, গত বৃহস্পতিবার ১৬ মে প্রেসক্লাব যশোরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জামাতাও বিএনপি করেন। তার এমন একটি বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যে বক্তব্য দেওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছিলো যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে দলীয় পদ থেকে বাতিল ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শুক্রবার রাতে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদারের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদারের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যশোর সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক ও আসন্ন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাতেমা আনোয়ার বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এই সাংবাদিক সম্মেলনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

তার বক্তব্যের বিষয়টি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন এবং সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তাকে যুব মহিলা লীগের আহবায়ক পদ ও প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলসহ কেন্দ্রের কাছে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর সুপারিশও করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ফাতেমা আনোয়ারের স্বামী আনিসুর রহমান লিটন ওরফে ফিঙ্গে লিটন পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেডভুক্ত আসামি। তিনি খুন-গুম, মাদক, সোনা, অস্ত্র চোরাচালানসহ একাধিক অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে দেশের বাইরে পলাতক অবস্থায় আছেন। দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় তার নাম রয়েছে। তিনি ইন্টারপোলেরও ওয়ান্টেড আসামি।

এই বিষয়ে ফাতেমা আনোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, একজন রাষ্ট্রনায়ককে নিয়ে কেউ কথা বা মন্তব্য করবে এটা রাষ্ট্রের নাগরিকের অধিকার। আমার বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা আমাকে অবিচার করছে বলে মনে করছি।

;

স্বেচ্ছাসেবক লীগের মিছিল শেষে কথা কাটাকাটির জেরে তরুণ খুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে মানিকমিয়া এভিনিউর সংসদ ভবন এলাকায় কথা কাটাকাটির জেরে ছুরিকাঘাতে এক তরুণকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম মেহেদী হাসান (১৮)।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শোভা যাত্রার আয়োজন করে ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ। শোভাযাত্রায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. চয়নের ভাগ্নে সদ্য এসএসসি পাশ করা ছাত্র মেহেদী অংশ নেন। শোভাযাত্রা শেষে বাড়ি ফেরার পথে মিছিলে কথা কাটাকাটি হয় অন্য এক গ্রুপের সঙ্গে। কথা কাটাকাটির জেরে সবার সামনেই সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে হামলা চালায় অপর পক্ষ। সেই চাকুর আঘাতে প্রাণ যায় মেহেদীর।

শনিবার (১৮ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এলাকায় সংসদ ভবন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত মেহেদী ছোলমাইদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পাস করেছেন।

নিহতের মামা চয়ন বলেন, মিছিল শেষ করে আমরা এলাকায় যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিলাম। আমাদের জন্য বাস রেডি ছিল। বাসে ওঠার সময় রাস্তা পারাপার নিয়ে আমার এক বন্ধুর সঙ্গে কয়েকটি ছেলের কথা কাটাকাটি হয়। তখন হুট করে ওই ছেলেগুলো সুইচ গিয়ার বের করে আঘাত করা শুরু করে। তখন আমার ভাগ্নে তাদের থামাতে যায় এবং কথা কাটাকাটি হয়। তখন ওরা মেহেদীকে চাকু দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে।

তিনি বলেন, যারা চাকু দিয়ে মেরেছে তাদের আমি চিনতে পারিনি। সবার সামনে এভাবে মেরে ফেললো আমার ভাগ্নে কে। আমরা পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগ করি। মেহেদীর মা আওয়ামী লীগ নেত্রী। আমার ভাগ্নের এমন হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহাদ আলী বলেন, ঘটনা শুনেছি। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। এই বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;