'বঙ্গবন্ধু জনদরদি ও আপসহীন ছিলেন'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাষ্ট্রপতি, ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রপতি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান ছোট বেলা থেকেই অত্যন্ত মানব দরদি ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জীবনে তাকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে অমানবিক নির্যাতন। তিনি কোনো দিন আপস করেননি। তিনি ছিলেন মানবদরদি।

মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান ‘মুক্তির মহানায়ক’ এর অংশ হিসেবে ভাষণটি সব টেলিভিশন চ্যানেলে একযোগে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।

রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য স্মরণীয়। আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই জাতির পিতাকে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপনের লক্ষে সরকার মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছে। এই মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য আমি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।

ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেন, আজ ১৭ মার্চ, বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। এ বছর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমি এই মহান নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। বছরজুড়ে দেশ-বিদেশে সাড়ম্বরে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে সরকার ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করেছে। জন্মশতবার্ষিকীর এই বর্ণাঢ্য আয়োজন যথাযথ উৎসাহ ও উদ্দীপনার মাধ্যমে উদযাপনের জন্য আমি দেশবাসী ও প্রবাসী বাঙালিদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষ শৈশব থেকেই ছিলেন অত্যন্ত মানবদরদি কিন্তু অধিকার আদায়ে আপসহীন। চল্লিশের দশকে এই তরুণ ছাত্রনেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী’র সংস্পর্শে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ১৯৪৮ সালে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’, ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮-এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর ৬-দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন।

এজন্য তাকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে অমানুষিক নির্যাতন। কিন্তু বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে আপস করেননি। বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বাঙালির আবেগ ও আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন‍,‍‍ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, যা ছিল মূলত স্বাধীনতার ডাক।

আবদুল হামিদ বলেন, ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অতর্কিতে নিরস্ত্র বাঙালির উপর আক্রমণ চালালে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা ঘোষণা করেন বাঙালি জাতির বহুকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, একটি ভাষণ কীভাবে গোটা জাতিকে জাগিয়ে তোলে, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহিত করে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ তার অনন্য উদাহরণ। ইউনেস্কো ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ওয়ার্ল্ড ডকুমেন্টারি হেরিটেজ মর্যাদা দিয়ে মেমোরি অব দি ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার -এ অন্তর্ভুক্ত করেছে। এ ভাষণের কারণে বিশ্বখ্যাত নিউজউইক ম্যাগাজিন ১৯৭১ সালের ৫ই এপ্রিল সংখ্যায় বঙ্গবন্ধুকে পয়েট অফ পলিটিক্স হিসেবে অভিহিত করে। মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি অবস্থায় শাসকগোষ্ঠী তাকে ফাঁসির হুকুম দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি তাদের কাছ নতি স্বীকার করব না। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা।’ দেশ ও জনগণের প্রতি তার অসামান্য অবদানের জন্য বাংলা, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু আজ এক ও অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে।

জাতির পিতার রাষ্ট্রগঠন প্রক্রিয়া ও ঘাতকের হাত তার রক্তে রঞ্জিত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে জাতির পিতা ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতির পুনর্গঠনে তিনি সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। মিত্রবাহিনীর সদস্যদের দেশে প্রত্যাবর্তন, স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশের সংবিধান রচনা, জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণ, সব স্তরে দুর্নীতি নির্মূল, কৃষি বিপ্লব, কলকারখানাকে রাষ্ট্রীয়করণসহ দেশকে ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে তোলার সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নীতি ও আদর্শের প্রতীক। বঙ্গবন্ধু রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’সহ তার ওপর লিখিত গ্রন্থ অধ্যয়ন করে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে পারবে এবং তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আগামীতে জাতি গঠনে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের অঙ্গীকারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু তার আদর্শ আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তার নীতি ও আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সাহসী, ত্যাগী ও আদর্শবাদী নেতৃত্ব— এ প্রত্যাশা করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করাই হোক মুজিববর্ষে সবার অঙ্গীকার।

   

নোয়াখালীতে ইয়াবাসহ গৃহবধূ আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় ২০০ পিস ইয়াবাসহ এক গৃহবধূকে আটক করেছে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

আটক নাজমা আক্তার (৪০) নোয়াখালী পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের মার্টার পাড়ার সিরাজ মঞ্জিলের নুর নবীর স্ত্রী।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরের দিকে আসামিকে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেয়। এর আগে, গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টার পাড়ার সিরাজ মঞ্জিল থেকে তাকে আটক করা হয়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানায়, আটক নাজমা নোয়াখালী পৌরসভার মাস্টার পাড়ার সিরাজ মঞ্জিলে ভাড়া থাকত। ওই ভাড়া বাসা থেকে সে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। অভিযানে নাজমা তার পরিহিত স্যালোয়ারের ডান কোচের ভিতর থেকে ২০০ পিস ইয়াবা বের করে দেন।

জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হামিদ বলেন, এ ঘটনায় আসামির বিরুদ্ধে সুধারাম মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

;

থাই পিএমও-তে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে থাই প্রধানমন্ত্রী জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাগত জানান।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দু’নেতা দ্বিপাক্ষিক পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে। এরপর কিছু ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে সেখানে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক নথিতে সই হবে।
দুই নেতা একান্তেও বৈঠক করবেন।

গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন অভ্যর্থনা জানান এবং এরপর সেখানে থাই কুহ ফাহ ভবনের সামনের উন্মুক্ত স্থানে তাকে লাল গালিচা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। প্রধানমন্ত্রী গার্ড পরিদর্শন করেন।
শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসের অতিথি বইতে স্বাক্ষর করেন এবং এরআগে থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।

গভর্নমেন্ট হাউস ত্যাগের আগে শেখ হাসিনা সেখানে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ড গেছেন।

সূত্র-বাসস

;

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৩৯



Sajid Sumon
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কে. এন. রায় নিয়তি জানান, আসামিদের কাছ থেকে ৪০০ পিস ইয়াবা, ২২ কেজি ৫৮৯ গ্রাম গাঁজা, ১৯০ গ্রাম হেরোইন ও ১০ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে ডিএমপির থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

;

বীর মুক্তিযোদ্ধার কুশপুত্তলিকা দাহ, পৌর মেয়রের বিচারের দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মো. মঞ্জুরুল আলমের কুশপুত্তলিকা দাহ করে প্রকাশ্যে অবমাননার ঘটনায় মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাটের বিচারের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে জেলা শহরের একটি চাইনিজ রেস্তোরায় মেয়র রুবেল ভাটের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা এ সাংবাদিক সম্মেলন করেন। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে অবমাননার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুবিচার চেয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মঞ্জুরুল আলমের ব্যবসায়ীক অংশীদার সৈয়দ আহম্মদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজল ইসলাম, জাফর আহমেদ ভূঁইয়া ও মোকতার আহমেদ ভূঁইয়া।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মঞ্জুরুল আলম বলেন, ২০২২ সালে রায়পুর থানা মসজিদ সংলগ্ন আমি ও আমার অংশীদার যৌথভাবে একটি ৯ তলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করি। শুরু থেকেই মেয়র রুবেল ভাট আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে আসছে। কিন্তু আমি চাঁদা দেবো না বলছি। এরমধ্যেই পঞ্চম তলার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ষষ্ঠ তলার কাজ চলমান রয়েছে। গত ৪ মার্চ মেয়র রুবেল ভাটের লোকজন এসে আমাদের ভবনের সামনে রাউন্ড দেওয়াল ভেঙে দেয়। আমি এসে কারণ জানতে চাইলে তারা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। একইদিন আমি ওমরাহর জন্য রায়পুর থেকে চলে যায়। আমার অংশীদার সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ আহম্মদ অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপরও পরদিনের একটি মারামারির ঘটনা সাজিয়ে মেয়র তার কার্যালয়ের কার্যসহকারী মহিন উদ্দিন বিপুকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এ চাঁদা দাবির ঘটনায় আমি মেয়র রুবেলভাটসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়পুর আদালতে ২১ এপ্রিল মামলা দায়ের করি। এর জের ধরে আমার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) মানববন্ধন করা হয়েছে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে মেয়রের লোকজন আমার কুশপুত্তলিকা দাহ ও ঝাড়ু মিছিল করেছে। আমি এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চাই। আমি প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মঞ্জুরুল আলমের ব্যবসায়ীক অংশীদার সৈয়দ আহম্মদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বর্তমান সরকারের অন্যতম স্লোগান। এরপরও মেয়র রুবেল ভাট একজন মুক্তিযোদ্ধার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে। মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করিয়েছে। যারা দেশ স্বাধীন করেছে তাদের এমন অপমান কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, আমি ঢাকায় ছিলাম। আগে জানতাম না, পরে শুনেছি। আমি পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র আমার পক্ষে লোকজন আসতেই পারে। কেউ যদি এসে মিছিল বা অন্য কিছু করে তাতো আমার বিষয় না। পক্ষে-বিপক্ষে লোকজন থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বলেন, মেয়রের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তে আদালতের নির্দেশনা পেয়েছি। আগামি ৬ জুনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। এছাড়া পৌর কর্মচারী বিপুও একটি মামলা করেছেন মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল আলমের বিরুদ্ধে। দুটি মামলাই তদন্ত চলছে। মুক্তিযোদ্ধার কুশপুত্তলিকা দাহের ঘটনাটি জানা নেই।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান খান বলেন, মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মিছিল হয়েছে শুনেছি। কুশপুত্তলিকা দাহ করার ঘটনাটি জানা নেই। কেউ আমাকে বলেনি। এমন ধরণের ঘটনা অবশ্যই ঘৃণিত কান্ড। এ ঘটনায় তিনি মানহানি মামলা করতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাঁকে সহযোগীতা করা হবে।

;