কুমিল্লা মেডিকেলে হবে করোনা পরীক্ষা
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এজন্য মেডিকেল কলেজটির মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে বায়োসেফটি লেভেল-থ্রি পর্যায়ের একটি ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও এই ল্যাবরেটরি স্থাপনের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। এখন দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি পিসিআর মেশিন সরবরাহ করার প্রক্রিয়া চলছে।
সোমবার (৬ এপ্রিল) কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো.মুজিবুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পিসিআর মেশিন পাওয়া গেলে ঢাকা থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল এসে কুমিল্লায় মেশিনটি স্থাপন করবেন। আর এই ল্যাবরেটরি পরিচালনার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের কয়েকজনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ল্যাবরেটরি স্থাপন ও কর্মী প্রশিক্ষণের পর চলতি মাসের শেষ দিকে কুমিল্লাতেই করোনাভাইরাস পরীক্ষা শুরু করা যাবে। এতে কুমিল্লাসহ আশপাশের জেলার মানুষের হয়রানি কমে আসবে।
এ জেলার ১৭টি উপজেলার প্রায় ৬০ লাখ মানুষসহ চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনীসহ ছয় জেলার প্রায় দেড় কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস। স্বাভাবিক সময়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জটিল রোগ নিয়ে প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে আসে এই ছয় জেলার রোগাক্রান্ত মানুষ। কিন্তু এখানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহভাজনদের পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই করোনা পরীক্ষার জন্য এসব জেলার মানুষকে ছুটতে হচ্ছে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামের দিকে। এজন্য কুমিল্লায় বায়োসেফটি লেভেল-থ্রি ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হলে সহজেই এই ভাইরাস নির্ণয় করতে পারবেন এসব মানুষ।
চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক ডা. আতাউর রহমান জসিম বলেন, এমনিতেই পাঁচশ’ বেডের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি আইসিইউ ওয়ার্ড থাকা প্রয়োজন। যাতে থাকবে ৫০টি বেড। আর করোনা চিকিৎসাতেও আইসিইউ বিভাগের প্রয়োজন।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আইসিইউ'র প্রয়োজন। যা এই হাসপাতালে নেই। হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপনের জন্য একটি এ বি জি মেশিন সংগ্রহ করতে হবে। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। অল্পদিনের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান তিনি।
ডা. মুজিবুর রহমান আরো জানান, কুমিল্লা মেডিকেলে করোনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরি ও আইসিইউ স্থাপিত হলে কুমিল্লার ৬০ লাখ লোক ও আশপাশের আরো পাঁচ জেলার মানুষ উপকৃত হবে।
কুমিল্লা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালীর ছয় জেলাকে কেন্দ্র করে বায়োসেফটি লেভেল-থ্রি ল্যাবরেটরি স্থাপন করা জরুরি।