রাসায়নিক পদার্থযুক্ত মৎস্য পণ্য বাজারজাতে সর্বোচ্চ ৭ বছরের জেল
রপ্তানি বা অভ্যন্তরীণ বাজারে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থযুক্ত মৎস্য বা মৎস্য পণ্য বাজারজাত করলে শাস্তির মেয়াদ ও আর্থিক জরিমানা বাড়িয়ে মৎস্য ও মৎস্য পণ্য আইন (পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (০৬ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি জানান, রপ্তানি বা অভ্যন্তরীণ বাজারে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থযুক্ত মৎস্য বা মৎস্য পণ্য বাজারজাত করলে শাস্তি বাড়িয়ে সর্বোচ্চ সাত বছর করা হয়েছে, তবে সেটি পাঁচ বছরের নিচে নয়। কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও উভয় দণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ধারা ৩১, ৩২ ও ৩৪ ধারায় অপরাধ ও দণ্ডের বিধান রয়েছে। ধারা ৩৩ এ পচা বা দূষিত মাছ বিক্রি করলে অনধিক ৫০ হাজার টাকা প্রশাসনিক জরিমানার বিধান রয়েছে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের মৎস্য ও মৎস্য পণ্যের বর্তমান রপ্তানি বাজার ধরে রাখা এবং নতুন বাজারে অনুপ্রবেশ, মানসম্পন্ন মৎস্য ও মৎস্য পণ্য আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাজারে বাজারজাতকরণের জন্য অধ্যাদেশটি প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন ও বহিতক্রম করে বাংলাভাষায় আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়। প্রস্তাবিত আইনটিতে ৯টি অধ্যায়ে ৫০টি ধারা রয়েছে। ধারা ২ এ প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োগযোগ্য বিবেচনায় 'অপদ্রব্য, অনাপত্তি, আঞ্চলিক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয় উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ম্যানেজার, ট্রেসিবিলিটি, পরিদর্শক, পরিদর্শনকারী, কর্মকর্তা, মিথ্যা সনদ বা দলিল, স্বাস্থ্যকরত্ব সনদ, স্থাপনা এর নতুন সংজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, লাইসেন্স ছাড়া কোন ব্যক্তি মৎস্য ও মৎস্য পণ্য রপ্তানি, কারখানা বা স্থাপনা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করতে পারবেন না। আইনে মৎস্য ও মৎস্য পণ্যের মান নির্ধারণের এখতিয়ার উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে (ধারা-৩)। সরকার মান পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনে পরীক্ষাগার স্থাপন করতে পারবে। লাইসেন্সের শর্তভঙ্গসহ অসত্য তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন, একাধারে তিন বছর লাইসেন্স নবায়নে ব্যর্থতা, লাইসেন্স হস্তান্তর বা বিক্রয় ইত্যাদি কারণে লাইসেন্স বাতিল করা হবে মর্মে বিধান করা হয়েছে। পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা পরিদর্শনকালে কারখানা বা স্থাপনার স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় না রাখা এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের মানের ব্যত্যয় হলে অপরাধীর বিরুদ্ধে অনধিক পাঁচ লাখ টাকা প্রশাসনিক জরিমানার বিধান দেওয়া হয়েছে (ধারা ১৪)।
এছাড়াও বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্ট আইন ২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের ভিডিও ফুটেজে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। বৈঠকে সবাই মাস্ক পরে ছিলেন ও আলাদা আলাদা টেবিলে বসার ব্যবস্থা ছিল।