শ্রমিক কলোনির ভিন্নরূপ, সঙ্গরোধে কাজ করছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক
করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসার জন্য এখনও পর্যন্ত কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। প্রতিরোধই এই ভাইরাস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। সঙ্গরোধ ও ঘরে থাকাই এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচাতে পারে।
তাইতো বারবার মাইকিং করে সঙ্গরোধ ও ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরাও করছেন সতর্ক। ফলে সাভারের শ্রমিক কলোনিগুলো এখন জনশূন্য।
করোনাভাইরাস সারা দুনিয়া দাপিয়ে অনেক উন্নত রাষ্ট্রকে বিধ্বস্ত করে এখন হানা দিয়েছে বাংলাদেশে। আক্রান্ত রাষ্ট্রগুলো লকডাউন ও সঙ্গরোধের মাধ্যমে এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বাংলাদেশেও প্রায় দ্বিগুণ হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন কারো না কারো জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিচ্ছে এই ভাইরাস। তাই অন্যান্য আক্রান্ত দেশকে অনুসরণ করে সাভারের বিভিন্ন শ্রমিক কলোনি হয়েছে স্বেচ্ছায় লকডাউন। সঙ্গরোধ নিশ্চিত করতে কাজ করছে স্থানীয়রা।
সোমবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজার এলাকার বিভিন্ন শ্রমিক কলোনি ঘুরে দেখা যায় প্রায় সব কলোনিই স্তব্ধ। মানুষের পায়ের আওয়াজ তো দূরের কথা ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজ পর্যন্ত শোনা যায়নি। মাঝে মাঝে শুধু শোনা যায় স্বেচ্ছাসেকদের গাড়ির হুইসিল। একদিনের ব্যবধানে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে শ্রমিক কলোনিগুলোর।
আশুলিয়ার কাঠগড়ার উত্তরপাড়া এলাকার শ্রমিক কলোনিতে সঙ্গরোধ নিশ্চিত করতে কাজ করছেন স্থানীয় আল মামুন শিকদার কুদ্দুস। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এই পুরো কলোনিতে কিছু স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছি। তারা প্রতিটি গলিতে টহল দিচ্ছে। এমন প্রত্যেক এলাকায় স্বেচ্ছায় কাজ করলে এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচবে শ্রমিকরা, সাথে আমরাও। এখন পুরো কলোনি সঙ্গরোধে ও ঘরে অবস্থান নিয়েছে। এমন পরিবেশ বাজায় রাখতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
কলোনির এক ওষুধ বিক্রেতা বলেন, বর্তমানে সব শ্রমিক বাড়ি বাড়ি অবস্থান নিয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাহিরে বের হচ্ছে না। প্রয়োজন ছাড়া স্বেচ্ছাসেবকরা কাউকে বের হতে দিচ্ছে না। তারা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাসায় পৌঁছে দিতেও রাজি আছে। আমরাও চাই উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশমত শ্রমিক কলোনিগুলো চলুক। তাতে আমরা সবাই সুরক্ষিত থাকবো।
বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সারোয়ার হোসেন বলেন, স্বেচ্ছাসেবক ভাইদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। প্রতিটি কলোনিতেই এভাবে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করলে আমার শ্রমিকরা সুরক্ষায় থাকবে। এসময় শ্রমিকদের উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনাসমূহ মেনে চলার অনুরোধ জানান তিনি।