হাসি নেই ‘শখের হাঁড়ি’র কারিগরদের মুখে



হাসান আদিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
শখের হাঁড়িতে আলপনা করছেন দক্ষ ও ক্ষুদে কারিগর, ছবি, বার্তা২৪.কম

শখের হাঁড়িতে আলপনা করছেন দক্ষ ও ক্ষুদে কারিগর, ছবি, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মাত্র পাঁচ দিন পরই বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। তবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বৈশাখী অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষণা করেছে সরকার। ফলে গ্রাম থেকে শহর, কোথাও বসবে না এবারের বৈশাখী মেলা। গগন কাঁপিয়ে বাজবে না ভেঁপু, নজর কাড়বে না রং-বেরঙের মাটির হাঁড়ি!

নিস্তব্ধ কুমারপাড়ার মৃৎশিল্পীদের কপালে কেবল-ই চিন্তার ভাঁজ! উৎসব ঘিরে রুটি-রুজির সব আয়োজন যে ভেস্তে গেছে তাদের! কেউ কেউ হাতে থাকা স্বল্প সঞ্চয় লগ্নিও করেছিলেন হাঁড়ি-পাতিল বানানোর কাজে।

হয়তো ইচ্ছে ছিল- লাভের মুখ দেখলে মেয়ের বিয়ে দিব। কেউ-বা তুলতে চেয়েছিলেন মাথা গোজার জন্য ছোট্ট ঘর। তবে এবারের লগ্নি জলেই যাচ্ছে অসহায় মৃৎশিল্পীদের। বেঁচে থাকার তাগিদে পহেলা বৈশাখের প্রস্তুতি ফেলে ত্রাণের আশায় ছুটছেন মৃৎশিল্পীরা।

শখের হাঁড়ি তৈরি করছেন গুণী কারুশিল্পী সুশান্ত পাল, ফাইল ছবি

তবে এখনো আশা দেখছেন ‘ঐতিহ্যবাহী শখের হাঁড়ি’ তৈরির প্রধান কারিগর সুশান্ত কুমার পাল। রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগধানী বসন্তপুরে তার বাড়িতে চলছে পুরোদমে প্রস্তুতি। স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, নাতি-নাতনি সকলে মিলে ছোট ছোট মাটির হাঁড়িতে নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলছেন কারুকাজ।

কিন্তু তাদের মুখে নেই বৈশাখের আগমনে সেই চিরায়ত হাসি। তবে হতাশায় কুচকে যাওয়া কপালের ভাঁজের নিচে দু’চোখে এখনো জ্বল-জ্বলে স্বপ্ন। এই বুঝি হয়ে যাবে- সব ঠিকঠাক! সব জীর্ণতা-গ্লানি ধুয়ে-মুছে বৈশাখে নতুন রূপে সাজবে সোনার বাংলা।

তাইতো শখের হাঁড়ির খ্যাতিমান কারুশিল্পী ৫৯ বছর বয়সী সুশান্ত পাল সাবলীলভাবে জানালেন, ‘১০-১১ তারিখে হাঁড়ি নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে।’

শখের হাঁড়ি

অথচ রাজশাহীতে চলছে অঘোষিত লকডাউন। খবরটি স্মরণ করিয়ে দিয়ে কীভাবে যাবেন- জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে তো আর যাওয়া হবে না। যদি পরিস্থিতি ভালো হয়, তবে অবশ্যই ঢাকা যাবে আমার শখের হাঁড়ি।’

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) শখের হাঁড়ির কারিগর সুশান্ত পালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনেই সুশান্ত পাল তৈরি করছেন ছোট ছোট হাঁড়ি। পাশেই কাজ করছেন তার ছেলে সঞ্জয় কুমার পাল। তাকে সাহায্য করছেন তার স্ত্রী ও বাড়ির আরও দুই জন সদস্য।

বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে হাঁড়িগুলোর গায়ে সুনিপুণভাবে আলপনার কাজ। পরম মমতায় রঙ-তুলির শেষ আঁচড়ে নকশা সাজাচ্ছেন সুশান্ত পালের স্ত্রী ও ছোট্ট নাতনি সঞ্জিতা রাণী পাল। কখনো দাদা-দাদির দেখানো আঁচড়ে, কখনো নিজের মনমতো এঁকে চলেছে শিশুটি।

সুশান্ত পালের ছেলে সঞ্জয় পাল বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এবার অধিকাংশ মৃৎশিল্পী কাজ আর করছেন না। তবে আমরা হাল ছাড়িনি। কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বিগত বছরগুলোর মতো না, এবার অনেক কম।’

শখের হাঁড়িতে রঙ করতে ব্যস্ত এক নারী, ফাইল ছবি

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন করে হাঁড়ি বানাচ্ছি না, বানানোগুলোতে রঙ করা হচ্ছে। কাজ যা হাতে নিয়েছি, তাও যদি বিক্রি করা যেত তবে আসল টাকাটা উঠতো। তবে সেই আশা আস্তে আস্তে কমে আসছে। মনে হচ্ছে না- এবার হাঁড়ি নিয়ে বাইরে যেতে পারব।’

এদিকে, রাজশাহী নগরীর মিয়াপাড়া, গণকপাড়া, ঘোড়ামারা, শেখেরচক ও কুমারপাড়ায় ঘুরে দেখা গেছে ভিন্নচিত্র। সেখানে অধিকাংশ মৃৎশিল্পীরা আর কাজ করছেন না। তারা পহেলা বৈশাখে বেচা-বিক্রির আশা ছেড়েই দিয়েছেন। জানালেন- বেঁচে থাকার তাগিদে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা এবং রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ত্রাণ সহায়তার জন্য ধরনা দিচ্ছেন তারা।

২৫ বছর ধরে মৃৎশিল্পী হিসেবে কাজ করেন কুমারপাড়ার সুধীর পাল। তিনি বলেন, ‘এক মাস আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। হাড়ি-পাতিল বানানো শেষ। এখন শুধু কিছু পোড়ানো এবং রঙ করার কাজ বাকি। কিন্তু বৈশাখ হবে না, তাই শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দিয়েছি। কাজ পুরোপুরি বন্ধ।’

শখের হাঁড়িতে আলপনা করছে এক শিশু কারুশিল্পী

আরেক কারিগর গণেষ পাল বলেন, ‘বাবা-দাদাদের পেশায় আমি ২৭ বছর। দুর্গাপূজার পর বৈশাখে কিছুটা আয় রোজগার হয়। কিন্তু এবারই প্রথম পহেলা বৈশাখে কোথাও মেলা হচ্ছে না। মেলা না হলে, মানুষ না জমলে মাটির হাঁড়ি-পাতিলসহ তৈজসপত্র কিনবে কারা? বৈশাখ বাতিল শোনার পর থেকে সব কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’

শ্রমিক অরবিন্দ বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে কাজ করছি। মালিক সপ্তাহে তিনদিন মজুরি দেয়। আর বাকিটা বৈশাখে বিক্রির পর দেওয়ার কথা। এখন কাজ বন্ধ, বকেয়া টাকাও দিতে পারছে না। তাদেরকে চাপই বা দেব কীভাবে? তারাও খুব লসের মধ্যে আছে।’

ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টার ফসলে উঁকি দিচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন



রবিউল এহ্সান রিপন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ভুট্টার আবাদ

ভুট্টার আবাদ

  • Font increase
  • Font Decrease
ঠাকুরগাঁওয়ের মাঠ ঘাটে ছেয়ে গেছে ভুট্টার আবাদ। যেসব মাঠে আগে দেখা যেতে গমের আবাদ সেসব মাঠে এখন ব্যাপকভাবে আবাদ হচ্ছে ভুট্টা। গমের থেকে ভুট্টার তিন গুণ ফলন বেশি হওয়ায় গমের স্থান দখল করে নিয়েছে ভুট্টা। গত বার ভুট্টায় লাভ পেয়ে কৃষকরা এবার ব্যাপক হারে চাষ করেছেন। ভুট্টা গাছের চেহেরা ও ফল ভালো আসায় লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
 
ভুট্টা গাছে চেহারায় ফসলি মাঠ গুলো হয়ে উঠেছে সবুজে ঘেরা। যতদূর চোখ যায় দেখা যায়, ভুট্টা গাছের সবুজ রং ও সাদা ফুলে ভরে উঠেছে ফসলের মাঠ। পোলট্রি খাত, হাস-মুরগি, গবাদি পশু ও মানুষের খাদ্যের তালিকায় ভুট্টার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার এর চাহিদা ব্যাপকভাবে বাড়ছে।   
 
গমের তুলনায় ভুট্টায় বেশি লাভ পাচ্ছেন কৃষকরা। তাই জেলায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ভুট্টার চাষ। কৃষকরা গত বছর ভুট্টার দাম বেশি পাওয়ায় এবছর আরও বেশি করে চাষ করেছেন বিভিন্ন আগাম উচ্চ ফলনশীল জাতের ভুট্টা। এছাড়াও এবার যারা আলু চাষ করেছেন তারা আলু তুলে আবার রোপণ করেছেন ভুট্টা।

আবহাওয়া ভালো থাকলে ও গত বছরের মতো এবারও দাম পেলে ভুট্টা চাষে এবছর অধিকহারে লাভবান হওয়ার আশা ও স্বপ্ন দেখছেন জেলার কৃষকরা।
 
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামের কৃষক শাহিন ইকবাল ৬ বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দিকে ভুট্টার গাছ পালা ও গাছে ভুট্টার মোচা ভালো এসেছে। আল্লাহ সহায় থাকলে এবার ভুট্টাতে কৃষকরা অধিক লাভবান হতে পারবো।’

ভুট্টা চাষী লোকমান আলী বলেন, ‘গম ও আলুতে তেমন লাভ না হওয়ায় জেলার অধিকাংশ কৃষক চাষ করেছেন ভুট্টা। ৫০ শতাংশের এক বিঘা জমিতে এবার ভুট্টা চাষ করতে সর্বোচ্চ খরচ হবে ৩০-৩৫ হাজার টাকা আর পরিচর্যা অনুযায়ী ফলন হয় কমপক্ষে ৮০-১০০ মণ। কারও কারও এর চেয়েও বেশি ফলন হয়। এক বিঘা জমির ভুট্টা বিক্রিয় হয় কম পক্ষে ৮০-৯০ হাজার টাকা। অন্যদিকে এক বিঘা জমিতে গম হয় মাত্র ২০-২৫ হাজার টাকার। তাই গমের তুলনায়ভুট্টায় বেশি লাভ পাওয়ায় ভুট্টার চাষ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

পীরগঞ্জ উপজেলার মন্ডলপাড়া গ্রামের কৃষক হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমি গতবার ভুট্টা চাষ করেছিলাম ৩ বিঘা জমিতে। দাম ভালো পাওয়ায় এবার চাষ করেছি ৫ বিঘাতে। গাছের চেহেরা খুবই ভালো আছে তাতে আবহাওয়া ভালো থাকলে গতবারের তুলনায় এবার আরও বেশি ফলন হতে পারে।’

রাণীশংকৈল উপজেলার কুমরগঞ্জ এলাকার কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘কৃষকরা ব্যাপকভাবে ভুট্টার আবাদ করেছেন। গত বছর আমি ৮০ কেজি ওজনের কাচা এক বস্তা ভুট্টা বিক্রি করেছি ২ হাজার ২শত টাকায়। এবারও যদি এমন দাম থাকে তাহলে কৃষকরা ভুট্টাতে অনেক লাভবান হবে।’

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারি এলাকার কৃষক সমসের আলী বলেন, ‘আলু করে শুধু লস হয়। দাম তেমন পাওয়া যায় না। গেলবার ভুট্টার দাম ভালো ছিল। তাই আমিও এবার আগাম জাতের ভুট্টা চাষ করেছি।

 
হরিপুর উপজেলার কামাপুর গ্রামের কৃষক মনসুর আলী বলেন, ‘গতবছর ভ্ট্টুা চাষ করে লাভবান হওয়ায় কৃষকরা এবার বেশি করে ভুট্টা চাষ করেছেন। যে আমাদের পরিবার থেকেই শুধু ১৫ বিঘা জমিতে চাষ করেছি ভুট্টা। আশা করছি এবার ভুট্টার দাম ভালো পাবো। কারণ যেহেতু বর্তমানে সবকিছুর দামে বেশি তাই আশা করি ভুট্টার দামও বেশি পাবো।’

জেলায় মোট ১ লক্ষ্য ৫১ হাজার ৫৯৩ হেক্টর আবাদি জমির মধ্যে চলতি মৌসুমে শুধু ভুট্টা চাষ হয়েছে প্রায় ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লক্ষ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর চাষ হয়েছিল ৩৩ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছিল ৩ লাখ ৬২ হাজার ৫৮১ মেট্রিক টন ভুট্টা। এক বছরের ব্যবধানে জেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি মৌসুমে গম চাষ হয়েছে ৩৬ হাজার ৬৫৭ হেক্টও জমিতে অথচ গতবছর চাষ হয়েছিল প্রায় ৪৫ হাজার হেক্টর। এক বছরে প্রায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে গমে আবাদ কমেছে। এছাড়াও গত মৌসুমে জেলায় আলু চাষ হয়েছিল ২৭ হাজার ৬৭৭ হেক্টর কিন্তু এবার তা কমে হয়েছে ২৬ হাজার ১৬৭ হেক্টর আবাদ হয়েছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক।  

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গম ও আলুর থেকে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ ভুট্টার চাহিদা, বাজার মূল্য ভালো থাকায় এবং একই পরিমাণ জমিতে গমের তুলনায় ভুট্টার ফলন প্রায় তিন গুণ বেশি হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আশা করছি চলতি মৌসুমে ১ হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ১১ টন করে জেলায় মোট ৩ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদ হবে। আমরা জেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের ভুট্টা চাষে সেচ, রাসায়নিক প্রয়োগসহ পোকা রোধের বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’
;

সংলাপ নয়, অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের জন্য বিএনপিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে: সিইসি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নয়, অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সিইসি।

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘অনানুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকের জন্য বিএনপি মহাসচিবকে একটি চিঠি দিয়েছিলাম যে, আপনারা অনানুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে পারেন। বৃহস্পতিবার শেষ বেলায় চিঠিটা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন বক্তব্য থেকে মনে হচ্ছে চিঠিটা তারা পেয়েছেন।’

;

ধনী-গরিব সবার বিনামূল্যে ইফতার



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
ধনী-গরিব সবার বিনামূল্যে ইফতার

ধনী-গরিব সবার বিনামূল্যে ইফতার

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পৌর শহরের শহীদ হারুনপার্ক চত্বরে প্রতিদিন বিনামূল্যে দুই শতাধিক মানুষকে ইফতার করানো হয়।

মাহে রমজানের প্রথম দিন থেকেই দুস্থ মানুষদের জন্য এমন ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এসো গৌরীপুর গড়ি’। তবে কিছুদিনের মধ্যেই এই ইফতার সর্বজনীন হয়ে উঠেছে। বিনামূল্যে এই ইফতার আয়োজন চলবে রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শহীদ হারুন পার্কের ফটকে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে সবাই মিলে ইফতার। হারুনপার্ক চত্বরে সামিয়ানা ও ত্রিপল বিছিয়ে এই ইফতার আয়োজন করা হয়।প্রতিদিন ইফতারের সময় ঘনিয়ে এলেই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা মাইকিং করে ইফতারে অংশ গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। আজান হওয়ার সাথে সাথে শ্রমজীবী, অসহায়, দুস্থ সহ নানা শ্রেণির মানুষ এক কাতারে বসে ইফতার করে।

ইফতারে খাওয়ানো হয় রান্না করা খিচুড়ি, খেজুর ও শরবত। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা নিজেরাই এখানে খাবার পরিবেশন করেন। সংগঠনের সদস্যদের চাঁদা ও বিত্তবানদের অনুদানে এই ইফতার আয়োজন করা হয়।

প্রথমদিকে এই ইফতার আয়োজনে দুস্থ ও অসহায়রা অংশগ্রহণ করতো। পরবর্তীতে নানা শ্রেণির মানুষ এখানে আসতে শুরু করে। ভেদাভেদ ভুলে ধনী-গরিব সবাই এক কাতারে বসে ইফতার করে এখানে। সবাই মিলে উৎসব আনন্দের পরিবেশে প্রতিদিন শহীদ হারুনপার্ক চত্বর পরিণত হয় ইফতার মিলনমেলায়।

এসো গৌরীপুর গড়ির প্রধান সমন্বয়কারী আবু কাউছার চৌধুরী রন্টি বলেন,করোনাকালে আমরা দুস্থদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্যাকেট জাত ইফতার খাবার বিতরণ করি। তবে ২০২২ সালে‘সবাই মিলে ইফতার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ইফতার কর্মসূচির উদ্যোগ নেই। একসাথে বসে সবাই ইফতার করলে সম্প্রীতি বাড়বে এটাই আশাবাদ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনীন বলেন, এসো গৌরীপুর গড়ির ইফতার আয়োজনটা প্রশংসার দাবিদার। সকল ভেদাভেদ ভুলে নানা শ্রেণির মানুষ এখানে বসে ইফতার করছে। এই সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে পড়া উচিত।

 

;

সড়কে প্রাণ গেল দম্পতির, মেয়ে নাতিসহ গুরুতর আহত ৩



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইঞ্জিন চালিত ভ্যানের সঙ্গে মাছবোঝাই পিকআপের সংঘর্ষে এক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন ভ্যানের দুই যাত্রী।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল ৬টার দিকে উপজেলার মোবারকগঞ্জ চিনিকলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, ঝিনাইদহ সদরের বিষয়খালী গ্রামের ছাবদার আলীর ও তার স্ত্রী পারভীনা বেগম। এ ঘটনায় আহত হয়েছে তাদের মেয়ে সাথী খাতুন, ভ্যানের চালক করিম ও তাদের নাতি ছেলে শিশু। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ইকবাল কবির জানান, সকালে ফজরের নামাজ শেষে ভ্যানযোগে মেয়েকে যশোরে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশে ছাবদার আলী তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রওনা দেন। কালীগঞ্জের মোবারকগঞ্জ চিনিকলের সামনে পৌঁছালে পেছনের দিক থেকে আসা মাছবোঝাই পিকআপ ভ্যান যাত্রীবাহী ওই ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান পারভীনা খাতুন। গুরুতর আহত অবস্থায় তার স্বামী ছাবদার আলী, মেয়ে সাথী খাতুন, ছেলে ও ভ্যান চালক করিমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

তিনি আরও জানান, সেসময় শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ছাবদার আলীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।

;