লকডাউনের বালাই নেই গ্রামে

‘ঘরে বউ-পোলাপানের ক্যাচরম্যাচর, তাই দোকানে আড্ডা’



জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
দোকানে চলছে আড্ডা, ছবি: বার্তা২৪.কম

দোকানে চলছে আড্ডা, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মহামারি নোভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রশাসনের নেয়া পদক্ষেপে কার্যত তেমন কোনো হেরফের হয়নি গ্রামীণ জীবনযাত্রায়।

পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানে সেই সাবেকি আড্ডা। ন্যূনতম সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা দূরের কথা, সব কিছুই যেন চলছে পুরনো ছকে। বুধবার (৮ এপ্রিল) এমন চিত্রই দেখা গেল রাজধানী লাগোয়া সাভারের টেউটি গ্রামে।

সকাল ১০টা। ভাটপাড়া পেরিয়ে টেউটি গ্রামে ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়ে একটি চায়ের দোকান। সেখানে বেশ কিছু মানুষের জটলা। চা বিক্রেতা এক নারী। তার সামনে কেউ সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে, কেউ বা চায়ের কাপে চুমুকে চুমুকে ডুবে আছেন গ্রাম্য আড্ডায়।

সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে কিছুটা সংযত হলেন চা বিক্রেতা নারী। নিজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে বললেন, ‘দোকান না খুললে খামু কি? কাস্টমাররা আহে (আসে) তাই দোকান খোলা রাখি। চা সিগারেট বিক্রি অইরা কোনোমতে পেটটা চলে।’

চলছে ক্রিকেট খেলা, ছবি: বার্তা২৪.কম

সেখানে কথা হয় মাহামুদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। পেশায় রাজমিস্ত্রির যোগালি (সহকারী)। ‘শহরে তো সব কিছু বন্ধ। কাম কাইজ নাই। বাইত্তে কতক্ষণ থাকতে মন চায় কন? এই ধরেন দুপুর পর্যন্ত এইহানে সেইহানে ঘুরাঘুরি কইরা বাইত্তে যামু। খাইয়া একটু ঘুমামু। তারপর আবার বিকালে বাইরামু। এমন কইরাই আমাগো দিন চলতাছে,’ বলছিলেন মাহমুদুল্লাহ।

আব্দুল জব্বার নামে আরেকজন বললেন, ‘আমরা কর্মজীবী মানুষ। প্রতিদিনের অভ্যাস সকাল বেলা ঘর থেকে বাইরানো। শহরে তো কাম কাইজ নাই। তাই দোকানে বইসা গ্রামের মানুষের লগে আড্ডা দিতেছি।’

‘আরে কইলেই কী আর বাসায় থাকন যায়? বাসায় চাউল নাই, বাজার নাই। সকাল থন বউয়ের ক্যাচরম্যাচর (চেঁচামিচি), পোলাপানগো ক্যাওম্যাও (চিৎকার)। আর ভাল্লাগে না, তাই বাইরে আছি,’ রং মিস্ত্রি আবুল কালাম আজাদের এ কথায় কিছুটা হাস্যরসের তৈরি হয়। চায়ের দোকান থেকে কিছুটা নামার (নিচু জায়গা) পথ ধরতেই দেখা যায়, বেশ কিছু শিশু ব্যস্ত কেরাম খেলা নিয়ে। বিভিন্ন পরিবার থেকে আসা শিশুদের জটলায় দেখা যায়নি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ন্যূনতম নজির। অবশ্য দেখার কথাও না।

সন্তানের খোঁজ নিতে এসেছিলেন গৃহবধূ সুফিয়া খাতুন। সন্তান অন্যদের সঙ্গে কেরাম খেলছে- দেখে আশ্বস্ত হয়ে ফিরে গেলেন তিনি। যাবার পথে বললেন, ‘পোলাপাইন গো কি আর ঘরে রাখন যায়! স্কুল নাই। পড়ালেহা নাই।’

দোকানে চলছে আড্ডা, ছবি: বার্তা২৪.কম

‘ভয় লাগে, কোন সময় কোন ডোবা কিংবা পুসকুনিতে যায়! বনে বাদারে কই না কই যায়! তার চেয়ে ভালো বাড়ির লগেই খেলতাছে,’ যোগ করেন তিনি।

শিশুদের ছাড়িয়ে কিছুটা এগুতেই দেখা যায়, এক বৃদ্ধ তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘাস কাটছেন। গত ২৪ মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত কারো কোনো সাহায্য সহযোগিতাই পাননি এই বৃদ্ধ। না পেরেছেন জনপ্রতিনিধিদের কাছে হাত পাততে। না পেরেছেন ত্রাণ প্রত্যাশী মানুষের সারিতে দাঁড়াতে। একমাত্র ছেলে থাকে প্রবাসে। অবরুদ্ধ থাকায় এ মাসে এখনো তিনি কোনো টাকা পাঠাতে পারেননি।

‘নিজেরা কেমতে চলি তার তো কেউ খোঁজ খবর নেয় না। ঘরতে বাইর না হইলে গরুর বাছুরের খাওন দিবো কেডা?’ প্রশ্ন শুকুর আলীর। তার সঙ্গে কথা বলে গ্রামের শেষ সীমানায় এসে দেখা যায় বেশ কিছু শিশু কিশোর মিলে ক্রিকেট খেলছে।

গ্রামের এই খণ্ড খণ্ড চিত্রই বলে দেয় প্রাণঘাতী মহামারি করোনাভাইরাস ঠেকাতে সরকারের অঘোষিত লকডাউন গ্রামীণ জীবনে খুব বেশি পরিবর্তন আনেনি।

নিশ্চিন্তে কেরাম খেলছে শিশু-কিশোরেরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

তাদের ধারণা, এই মহামারি শহরের মানুষের ওপর দিয়েই যাবে। গ্রামে হয়তো আসবে না। এই বিশ্বাস থেকে এক রকম স্বাভাবিক আমেজ বিরাজ করছে গ্রামীণ পরিবেশে।

শহর থেকে অসংখ্য মানুষ গ্রামে ছুটে আসায় গ্রাম জুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষগুলো দিনভর এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরছেন। দেখা করছেন আত্মীয়-স্বজনদের সাথে। আর বিকেল বেলা সবাই জড়ো হচ্ছেন বটগাছের নিচে কিংবা খাল বিলের পাড়ে।

ঘাস কাটছেন এক দম্পতি, ছবি: বার্তা২৪.কম

বাস্তবিক অর্থে শহর সাভারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কিছুটা কড়াকড়ি থাকলেও গ্রামীণ পরিবেশ একেবারেই ঢিলেঢালা।

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে গত ২৬ মার্চ থেকে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। কয়েক দফায় সেই ছুটি ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হলেও গ্রামীণ পরিবেশে এই নিয়ে দেখা যায়নি সাধারণ কোনো সচেতনতাবোধ।

চলছে ক্রিকেট খেলা, ছবি: বার্তা২৪.কম

সঙ্গরোধ থেকে শুরু করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান এমনকি মানুষকে নিজ নিজ বাড়িতে থাকার আহ্বান জানালেও কার্যত তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি গ্রামীণ জীবনে।

অথচ শহর থেকে আসা মানুষগুলো এখন গ্রামে ছড়িয়ে গেছেন সবার মাঝে। গ্রামীণ জীবনেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো বকল্প নেই, সেটাও মানতে চাইছেন না বেশিরভাগ মানুষ। এ পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারের নেয়া নানান পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হয়, সেটা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে।

   

বৃষ্টির পরও ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা তীব্র দাবদাহের পর রাজধানীতে বৃষ্টির পরও বাতাসের মান 'অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ৯টা ৩৩ মিনিটে ১৫৮ এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ষষ্ঠ।

১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর', ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' বলা হয়, ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

ভারতের দিল্লি, নেপালের কাঠমান্ডু ও পাকিস্তানের লাহোর যথাক্রমে ৩১৮, ১৯৭ ও ১৯৩ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম তিনটি স্থান দখল করেছে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।

;

জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশের ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গৃহীত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের পক্ষে রেজুলেশনটি উত্থাপন করেন।

১১২টি দেশ এই রেজুলেশনটিতে কো-স্পন্সর করেছে।

এ বছর আলোচ্য রেজুলেশনটি একটি বিশেষ তাৎপর্য্য বহন করে। কেননা এ বছরে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা ও এ বিষয়ক কর্মসূচি ২৫তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদে সরকার পরিচালনার সময় ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি গৃহীত হয়।

এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশনটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করে আসছে, যা শান্তি ও অহিংসার সংস্কৃতিকে উন্নীত করার জন্য ৮টি বিশেষ ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহনের জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে।

এছাড়া সাধারণ পরিষদের সভাপতির নেতৃত্বে ২০১২ সাল থেকে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘে একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরামের আয়োজন করে আসছে।

প্রস্তাবটি উপস্থাপনের সময় রাষ্ট্রদূত মুহিত বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে শান্তির সংস্কৃতির অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, আজ বিশ্ব ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব এবং মানবিক মর্যাদা অবজ্ঞার মুখোমুখি। এই ক্রমবর্ধমান সংঘাত ও সহিংসতা উত্তরণে মানবমনে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার ভাবকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে, সমতা ও সব মানুষের সমমর্যাদার চেতনাকে সমুন্নত করতে হবে এবং সর্বোপরি যুদ্ধের চেয়ে শান্তিকে অনেক বেশি লাভজনক করে তুলতে হবে।

এবারের রেজুলেশনটিতে শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচির ২৫তম বার্ষিকী যথাযথভাবে পালন ও উদযাপনের জন্য সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে দিনব্যাপী একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম আহ্বান করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া এ রেজুলেশনে সাধারণ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্র, জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থা, নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মিডিয়াসহ অন্যান্য অংশীজনদের শিক্ষা ও জনসচেতনতা সম্প্রসারণসহ অন্যান্য আয়োজনের মাধ্যমে যথাযথভাবে এই বার্ষিকীটি পালনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, ‘জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণা প্রবর্তনের বাংলাদেশের উদ্যোগটি আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈষম্য, বর্ণগত অসহিষ্ণুতা এবং পরাধীনতা আমাদের একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে। এ কারণেই আমরা শান্তির প্রসারকে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক নীতিতে পরিণত করেছি।’

রেজুলেশনটির বিবেচনার পূর্বে শান্তির সংস্কৃতির উপর সাধারণ পরিষদে একটি সাধারণ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বহুসংখ্যক সদস্য রাষ্ট্র বক্তব্য প্রদান করে। এ সময় তারা শান্তির সংস্কৃতির ঘোষণা এবং এ বিষয়ক কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাদের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে।

প্রতিনিধি দলগুলো জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

১১২টি দেশ এবছর বাংলাদেশের এই রেজুলেশনটিকে কো-স্পন্সর করেছে, যা ‘শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজুলেশনটির প্রতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অব্যাহত সমর্থনের সাক্ষ্য বহণ করে।

সূত্র- ইউএনবি

;

গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা-জয়দেবপুর রেল সড়কের গাজীপুরের ছোট দেওড়া কাজীবাড়ি এলাকায় তেলবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতেহ মো. সফিকুল ইসলাম এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

শুক্রবার (৩ মে) দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল ফাতেহ মো. সফিকুল ইসলাম। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

জেলা প্রশাসক জানান, দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ্ আল আরেফিন জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরে তেলবাহী ও যাত্রী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। আহতদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

;

হবিগঞ্জে এক পরিবারের ৪ সদস্যের দাফন সম্পন্ন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, হবিগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হবিগঞ্জের মাধবপুরে ট্রাক ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়েছিল। শুক্রবার (৩ মে) নিহতদের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

শুক্রবার সকাল সোয়া ১০ টায় ১ম নামাজে জানাযায় পুলিশ তিনজন। পরে সাড়ে ১০ টায় কামরুন নাহারের নামাজের জানাযা তাদের নিজ বাড়ির উঠানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজা পরিচালনা করেন বাড়ির মসজিদের ইমাম, হাফেজ মো. রবিউল হুসাইন, নামাজে পরিবার পরিজনসহ প্রায় ২ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করেন। জানাযা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি কবরে দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে সকাল ৬ টা নাগাদ নিহতদের মরদেহ পটুয়াখালীর গলাচিপার সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে তাদের নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়।  

নিহতরা হলেন, মৌজালী মৃধার মেঝো ছেলে মোঃ জামাল হোসাইন (৪২), ছোট ছেলে এনামুল হক খোকন (৩৫), নিহত জামাল মৃধার স্ত্রী কামরুন নাহার (৩০) ও ছেলে কাওসার হোসাইন অনন্ত (১২)। এছাড়াও তাদের সাথে ড্রাইভারও মারা গেছেন।

মো. জামাল হোসাইন (৪২) ঢাকার সাভারে অবস্থিত পাইয়োনিয়ার গ্রুপের (pioneer group) মেক্স কম ইন্টারন্যাশনাল বিডি লিমিটেড এর ইলেকট্রিশান ইনচার্জ পদে কর্মরত ছিলেন। ছোট ভাই এনামুল হক খোকন (৩৫) একই এলাকার বেবিলন গ্রুপের অবনী ফ্যাশনের সিনিয়র সুইং অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন।  

নিহত জামালের খালাতো ভাই মো. ফেরদৌস বলেন, ‘জামাল ভাই তার ছেলে কাওসারের মানত পালনে ৩০ এপ্রিল রাতে হজরত শাহজালাল (রাঃ) মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সিলেটে জান। সাথে ভাবি ও খোকন ভাইও ছিল। ১লা মে তারিখ সারাদিন সিলেট থাকেন এবং রাতে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। তাদের সাথে ১০ টার পরে সর্বশেষ কথা হয়। আমরা রাত দুইটার দিকে দুর্ঘটনার খবর পাই।’  

নিহত জামাল ও খোকনের মামা মো. সোনা মিয়া বলেন, আমার ভাগিনা জামাল ও খোকন ঢাকার সাভারে চাকরি করতো। তারা খুবই ভদ্র ও শান্ত সভাবের ছিলো। ওদের মৃত্যু আমার বোন স্বাভাবিক ভাবে মানতে পারে নাই। এই পরিবারে বর্তমানে তেমন কোনো উপার্জনক্ষম কোনো বেক্তি না থাকায় অসহায় হয়ে পরেছেন। তাই আমরা সরকারের সর্বোচ্চ সহযোগিতা কামনা করছি৷ 

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, নিহতদের মরদেহ আজ সকালে গলাচিপা উপজেলায় এসে পৌঁছেছে  ইতিমধ্যে জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহতের পরিবারের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে।

;