সোনালী ব্যাংককে ডোবাচ্ছে খুলনার পাট ব্যবসায়ীরা!



ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪ডটকম

  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনা: রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংক খুলনার ছয়টি শাখা থেকে পাট ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়া হয়েছিল এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা। তার মধ্যে দেড় হাজার কোটি টাকার অধিক খেলাপি। রাষ্ট্রের এ বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় না করেই নতুন করে আরও এক হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে সাতজন চিহ্নিত খেলাপিকে ৭১ কোটি টাকা পুনরায় ঋণ দেয়ার অনুমোদন হয়েছে।

তাদের কাছে সোনালী ব্যাংকের পূর্বের ২৩১ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। এভাবে অর্থ নিয়ে তা ফেরত না দিয়ে সোনালী ব্যাংককে ডোবাচ্ছে খুলনার পাট ব্যবসায়ীরা।

ব্যাংকের তথ্য মতে, প্রভাবশালীদের তদবির ও চাপের কারণে ২০০৮-২০১৬ সাল পর্যন্ত ১১৩ পাট ব্যবসায়ীকে ঋণ দেয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে ১০৮ জন ঋণ খেলাপি। খুলনায় সোনালী ব্যাংকের ছয়টি শাখা থেকে ঋণ দেয়া হয়েছিল প্রায় এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে খুলনা করপোরেট শাখা, দৌলতপুর কলেজ রোড শাখা ও স্যার ইকবাল রোড শাখার বিতরণকৃত ঋণের প্রায় শতভাগ খেলাপি। সিসি প্লেজ, সিসি হাইপো, পিসিসি ও ব্লক হিসাবের বিপরীতে কাঁচা পাট রফতানিতে এ ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছিল। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি এক হাজার ১০০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে সিসি প্লেজ হিসাবের বিপরীতে। গুদামে মজুদ থাকা পাট জামানত রেখে প্লেজ ঋণ দেয়া হয়। ব্যাংক ঋণের টাকা ফেরত না পেলেও গুদামের পাট বিক্রি করে দিয়েছেন ঋণ খেলাপিরা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের কারণে এসব ঋণ খেলাপিকেই নতুন করে টাকা দিতে হচ্ছে বলে দাবি করেন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। তিনি বলেন, ‘খুলনার পাট ব্যবসায়ীরা সোনালী ব্যাংককে ডোবাচ্ছেন। পাট খাতের সব মন্দ গ্রাহক এ ব্যাংকে ভিড়েছেন। নীতিমালার মধ্যে থেকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েও ঋণ খেলাপিদের কাছ থেকে ব্যাংকের টাকা আদায় করা যাচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার কারণে ঋণ খেলাপিদের নতুন করে টাকা দিতে হচ্ছে।’

সোনালী ব্যাংকের একাধিক সূত্র জানায়, ব্যাংকটির খুলনা করপোরেট শাখা কাঁচা পাট রফতানিতে ৫২ ব্যবসায়ীকে ৩৮৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে। এরমধ্যে ৩৮১ কোটি ৯৩ লাখ টাকাই খেলাপি হয়েছে। এ খাতে শাখাটির বিতরণকৃত ঋণের ৯৯ দশমিক ৪৮ শতাংশই এখন খেলাপি। খুলনার দৌলতপুর করপোরেট শাখা থেকে কাঁচা পাট রফতানির নামে ৬৬৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন ১৯ পাট ব্যবসায়ী। এরমধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৪৩৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, যা খাতটিতে বিতরণকৃত ঋণের ৬৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। ব্যাংকটির খুলনার দৌলতপুর কলেজ রোড শাখা থেকে ২০ জন গ্রাহক ঋণ নিয়েছেন ৩২২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে ৩১৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বা ৯৮ দশমিক ৮৮ শতাংশই খেলাপি হয়ে পড়েছে। ব্যাংকটির খালিশপুর শাখা থেকে ১৩ পাট ব্যবসায়ীকে দেয়া ৮০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৫৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ শাখা থেকে খাতটিতে বিতরণকৃত ঋণের ৬৯ দশমিক ৯১ শতাংশই খেলাপি। এছাড়া ব্যাংকটির খুলনার স্যার ইকবাল রোড শাখা থেকে দুজন পাট রফতানিকারককে দেয়া ৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকার পুরোটাই খেলাপি হয়ে গেছে।

খুলনা অঞ্চলে সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ ৩০ ঋণ খেলাপির কাছে ঋণ রয়েছে এক হাজার ৬৮ কোটি টাকা। এরমধ্যে মো. এমদাদুল হোসেনের সোনালী জুট মিলস লিমিটেডের কাছে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১২৭ কোটি, অশোক কুমার দাশের এ কে জুট ট্রেডিংয়ের কাছে ১১৭ কোটি, সেলিম রেজার মেসার্স রেজা জুট ট্রেডিংয়ের কাছে ৩৮ কোটি ও সনজিত কুমার দাশের ইস্টার্ন ট্রেডার্সের কাছে ৯২ কোটি টাকা।

এর বাইরে মেসার্স শরীফ জুট ট্রেডিংয়ের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৩ কোটি, জাহিদুল ইসলামের মেসার্স জুয়েল জুট লিমিটেডের ৪৯ কোটি, মেসার্স সিরাজুল ইসলামের ৪০ কোটি, আলীফ জুট ট্রেডিংয়ের ৩৬ কোটি, অনিক জুট ইন্টারন্যাশনালের ৩০ কোটি, সানরাইজ ইন্টারন্যাশনালের ৩০ কোটি, অগ্রণী পাট সংস্থার ২৮ কোটি, মেসার্স শরীফ মোল্যার ২৫ কোটি, মেসার্স আবুল কাশেমের ২২ কোটি, এসআর জুট ট্রেডিংয়ের ২৩ কোটি, রমিজ উদ্দিন ভূঁইয়ার প্রমি জুট ট্রেডার্সের ২০ কোটি, মনোয়ারা জুট ফাইবার্সের ১৮ কোটি এবং এসঅ্যান্ডএস জুট ট্রেডিং কোং লিমিটেডের ১৮ কোটি টাকা।

এছাড়া মেসার্স হাফিজ অ্যান্ড ব্রাদার্সের কাছে ১৭ কোটি, রাষ্ট্রায়ত্ত আলীম জুট মিলস লিমিটেডের ১৬ কোটি, রোজেমকো লিমিটেডের ১৫ কোটি, ব্রাদার্স ইন্টারন্যাশনালের ১৫ কোটি, দ্য পাঠান জুট ট্রেডিংয়ের ১৫ কোটি, আলমগীর জুট ট্রেডিংয়ের ১৪ কোটি, আবির জুট ট্রেডিংয়ের ১৩ কোটি, আজাদ ব্রাদার্সের ১৩ কোটি ও এমআর জুট ট্রেডিংয়ের কাছে ১২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে সোনালী ব্যাংকের।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রভাবশালী মহলের তদবিরে সম্প্রতি ২৩১ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের ওপর তৃতীয় দফায় ব্লক সুবিধা পেয়েছেন খুলনার সাত পাট ব্যবসায়ী। খেলাপি ঋণ ব্লক করে মো. সিরাজুল ইসলাম, এসআর জুট ট্রেডিং, বেঙ্গল জুট ট্রেডিং, নক্ষত্র জুট ট্রেডিং ও পিআর জুট ট্রেডিংকে নতুন করে ৭১ কোটি টাকা বিতরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক খুলনা জিএম কার্যালয়ের অধীনে ছয়টি জেলার ১২৩টি শাখা। এ শাখাগুলো থেকে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে চার হাজার ৩৭০ কোটি টাকা, যা সোনালী ব্যাংকের মোট ঋণের ১০ দশমিক ৩২ শতাংশ। খুলনা জিএম কার্যালয়ের অধীনে খেলাপি ঋণ রয়েছে এক হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা। এছাড়া স্বাভাবিক পন্থায় আদায় অযোগ্য হওয়ায় অবলোপন করা হয়েছে ৩০১ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। সব মিলিয়ে সোনালী ব্যাংকের খুলনা অঞ্চলের ১২৩টি শাখার খেলাপি ঋণের মধ্যে ৯০ শতাংশই পাট ব্যবসায়ীদের দেয়া হয়েছে ছয়টি শাখায়। সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপি শাখার মধ্যে চারটিই খুলনার। এরমধ্যে খুলনার করপোরেট শাখায় ৮১২ কোটি, দৌলতপুর করপোরেট শাখায় ৪৭১ কোটি, দৌলতপুর কলেজ রোড শাখায় ৩৪৩ কোটি ও খালিশপুর শাখায় ৭১ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফুলতলা মহিলা কলেজের প্রভাষক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের অর্থ ঋণ দেয়া ও তা সময় মতো আদায় করার আন্তরিকতার অভাবেই খেলাপি ঋণের পাহাড় সৃষ্টি হচ্ছে। পাট ব্যবসা নিঃসন্দেহে লাভজনক। তাহলে কেন বছরের পর বছর পাট ব্যবসায়ীরা ঋণ খেলাপি? তাহলে কী ব্যবসার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্য রয়েছে তাদের?’

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রায় ১২৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোনালী জুট মিলের মালিক এসএম এমদাদুল হোসেন বুলবুল ও সোনালী ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার নেপাল চন্দ্র সাহা, ব্যাংকের খুলনা করপোরেট শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার কাজী হাবিবুর রহমান, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার শেখ তৈয়াবুর রহমান ও সাবেক ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সমীর কুমার দেবনাথের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন দুদক সমন্বিত খুলনা জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন। একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর প্রায় ৯৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দৌলতপুরের পাট ব্যবসায়ী সনজিত কুমার দাস ও সোনালী ব্যাংক দৌলতপুর শাখার দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১৫ সালে প্রায় সাত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দৌলতপুরের মেসার্স আকবর আলী অ্যান্ড সন্সের মালিক মো. আকবর আলীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল।

এভাবে একদিকে খেলাপির বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, অন্যদিকে দায়মুক্তি দিয়ে তাদের পুনরায় ঋণ দেয়া হচ্ছে। এ সম্পর্কে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি খুলনা জেলার সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান জানান, কতিপয় অসৎ ব্যবসায়ীই বর্তমানে পাট খাতে ঋণ নিয়ে বিলাসিতার পাশাপাশি ঋণের অর্থ অন্য খাতে ব্যয় করছেন। সে টাকা সুদাসলে ঠিক মতো ব্যাংকে ফেরত যায় না। এ খাতের দুর্নীতি এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। ব্যবসায়ী, গোডাউন কিপার ও ব্যাংক কর্মকর্তারা যোগসাজশে টাকা আত্মসাৎ করছেন। শুধু পাট শিল্প নয় এভাবে খেলাপি ঋণের বোঝা বাড়তে থাকলে ব্যাংকখাতেও বিপর্যয় নেমে আসবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

   

প্রয়োজনের তুলনায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন পাট বীজ কম উৎপাদন হয়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রয়োজনের তুলনায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন পাট বীজ কম উৎপাদন হয়

প্রয়োজনের তুলনায় সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন পাট বীজ কম উৎপাদন হয়

  • Font increase
  • Font Decrease

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, দেশে ছয় হাজার মেট্রিক টন পাট বীজ প্রয়োজন, অথচ উৎপাদন হয় মাত্র এক হাজার পাঁচশত মেট্রিক টন। বাকী সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন বীজ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। কাজেই ব্যাপকভাবে পাট বীজ উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে। 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার পাটের গৌরবময় সোনালী ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করছে। এজন্য পাট বীজের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে হবে।

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে খুলনা মহানগরীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশন (বিজেএ)’র সঙ্গে কাঁচাপাট রপ্তানি সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বিজেএ দেশব্যাপী কৃষকদের পাট বীজ উৎপাদনে উৎসাহিত করার জন্য কর্মশালার আয়োজন করছে। এ ধরনের কার্যক্রমে আমিও শামিল হবো।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তশিল্প মেলায় অংশ নিতে আমাকে জার্মানীর ফ্রাস্কফুর্টে পাঠান। সেখানে আমাদের দেশের পাটপণ্যের ৫০টি স্টল ছিলো। বিদেশি ক্রেতারা সেখানে ক্রয় আদেশ দিচ্ছে। বিদেশে পাটপণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে।

কাঁচাপাট রপ্তানি যেন বাধাগ্রস্ত করা না হয়- ব্যবসায়ীদের এরকম আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের কথা বিবেচনা করে কাঁচাপাট রপ্তানি অব্যাহত রাখা হবে এবং তাদের সমস্যাসমূহ সমাধানে সাহায্য করা হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী চান সোনালী আঁশের আভিজাত্য ফিরিয়ে আনতে। সেজন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বিজেএর চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ আহমেদ আকন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন- খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ।

;

মারামারি-চাঁদাবাজি: চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
মারামারি-চাঁদাবাজি: চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

মারামারি-চাঁদাবাজি: চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

  • Font increase
  • Font Decrease

চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা ও আধিপত্য নিয়ে মারামারির পর চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।

শনিবার (১৮) রাতে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি বিলুপ্তের বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, সাংগঠনিক অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খলার কারণে বিগত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে মাহমুদুল করিমকে সভাপতি এবং সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করে ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম কলেজ শাখা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হল।’

বেশ কিছুদিন ধরে চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে অস্থিরতা চলছিল। এক পক্ষের তোপের মুখে পড়ে কয়েক মাস আগেই ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম। তার এক সময়ের অনুসারীরা শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে নতুন করে সংঘবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। তবে মনিরের সঙ্গে মিলে রাজনীতি করতে অস্বীকৃতি জানান সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার মারামারির পর মনিরের অনুসারীরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনকেই ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এই সময়ে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিভিন্ন কুর্কীতির ভিডিও ফাঁস হয়। বিশেষ করে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় এক তরুণকে স্ত্রীর সামনে মারধর, কলেজের প্রধান সহকারীকে থাপ্পড় দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তের ঘোষণা আসল।

কমিটি বিলুপ্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম কলেজে সাম্প্রতিককালে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া এই কমিটির মেয়াদও ছিল না। তাদের এমন কর্মকাণ্ডের কারণে সংগঠনের ইমেজ নষ্ট হচ্ছিল। সবকিছু বিবেচনা করে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

;

কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ঘরে থাকার পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কিরগিজস্তানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে হামলার ঘটনায় দেশটিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

শনিবার (১৮ মে) রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ পরামর্শ দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের দূতাবাস কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে একযোগে কাজ করে। সেখান থেকে বিশকেকের সহিংসতার ঘটনায় বর্তমানে কিরগিস্তানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও দূতাবাস যোগাযোগ করছে। কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পরিস্থিতি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের এই মুহূর্তের জন্য বাড়ির ভেতরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং এ বিষয়ে যেকোনো সমস্যায় ২৪ ঘণ্টা উজবেকিস্তানে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার মো. নাজমুল আলমের সঙ্গে (+998930009780) যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হলো।

জানা গেছে, গত ১৩ মে একদল মিশরীয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে কিরগিজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে কী নিয়ে তাদের মধ্যে এই বিরোধ বেঁধেছিল তা নিশ্চিত নয়। তবে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে কিরগিজ রাজধানীতে বেশকিছু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল ও বেসরকারি আবাসনে হামলা চালায় স্থানীয়রা। এসব হোস্টেল ও ভবনে মূলত বিদেশি শিক্ষার্থীরা বসবাস করেন।

;

গাইবান্ধায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
গাইবান্ধায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

গাইবান্ধায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পুকুরে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) বিকেলে উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বলরাম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ছয় বছর বয়সী শিশু আব্দুল্লাহ লাবিব আল নাহিদ ওই গ্রামের মৃত ওসমান গনির ছেলে।

মৃত্যুর বিষয়টি রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব আলম।

এসময় পরিবারের বরাতে তিনি জানান, আজ শনিবার বিকেলের দিকে শিশু নাহিদকে না পেয়ে খুঁজতে থাকে পরিবারের লোকজন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ওই এলাকার এক প্রতিবেশী শিশু নাহিদকে পুকুরের পানিতে ভাসতে দেখে এবং চিৎকার করতে থাকেন।

পরে স্বজনরা শিশু নাহিদকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

;