কচু শাকের কদর বেড়েছে দরিদ্র মানুষের কাছে
করোনার প্রভাবে গাইবান্ধার দিনমজুর পরিবারে দেখা দিয়েছে আর্থিক সংকট। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী সবজি কিনতে পারছেন না। যার ফলে ঝোপঝাড়ে অযত্নে-অবহেলায় বেড়ে ওঠা বিভিন্ন জাতের ‘বুনো শাক-সবজি’র দিকে ঝুঁকে পড়েছেন তারা। দরিদ্র মানুষদের কাছে সবচেয়ে বেশি কদর বেড়েছে ‘বুনো কচু শাকের’।
বুধবার (২২ এপ্রিল) সকালে গাইবান্ধার জামালপুর ইউনিয়নের বুজরুক রসুলপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার রকিব মিয়ার বাড়ির পাশের ঝোপ থেকে আপন খেয়ালে কচু শাক তুলছেন ছকিনা বেওয়া (৭০) নামের এক বৃদ্ধা।
জানা যায়, করোনার প্রভাবে গাইবান্ধায় কয়েক লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে দিনমজুর পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। তারা খাদ্যের
সন্ধানে ছুটছেন এদিক-সেদিক। দু’বেলা অন্ন যোগাতে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, ব্যক্তি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় দরিদ্র জনগণ কিছু খেয়ে বাঁচার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছেন। তারা কষ্ট করে সামান্য চাল যোগার করলেও, মিলছে না সবজি বা মাছ, মাংস। তরকারির চাহিদা মেটাতে তাই তারা ঝোপঝাড় বা বসতবাড়ির আশেপাশে অনাদরে-অবহেলায় বেড়ে ওঠে ঢেঁকি শাক, কলার থোর, কচু শাকসহ প্রভৃতিকেই বেছে নিয়েছেন। কারণ, এসব শাক-সবজি টাকা দিয়ে কিনতে হয় না তাদের।
ছকিনা বেওয়া নামের ওই বৃদ্ধা বলেন, শ্রম বিক্রি করে সংসার চালানো হচ্ছিল। সম্প্রতি করোনার প্রভাবে তা বন্ধ হয়ে গেছে। ঠিকভাবে দু’বেলা খাদ্য যোগাতে
পারছি না। একটু চাল সংগ্রহ করলেও তরকারি মিলছে না। তাই ঝোপে বেড়ে ওঠা কচু শাক তুলছি। এ দিয়ে ভর্তা ও ডাল বানিয়ে খাব।
দুদু মিয়া নামের এক প্রবীণ শিক্ষক জানান, প্রায় তিন দশক আগে মানুষের ঘরে অভাব-অনটন ছিল। সেই সময়েও বুনো সবজি খেতেন লোকজন। এখন দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কৃষকের উৎপাদিত সবজি কিনেই খাওয়ার সামর্থ্য হয়েছে সবার। কিন্তু করোনার প্রভাবে দেশে আবার দেখা দিয়েছে এমন সংকট। তাই নিম্ন আয়ের জনগণ আবার বুনো সবজির দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
স্থানীয় চিকিৎসক ডা. নজরুল ইসলাম খুশি বার্তা২৪.কমকে বলেন, বুনো কচু ও শাকের পুষ্টিগুণ অনেক। এটি সবার জন্য খাওয়া প্রযোজ্য।