মুখ থুবড়ে পড়েছে নির্মাণ খাত, দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা



শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
মুখ থুবড়ে পড়েছে নির্মাণ খাত

মুখ থুবড়ে পড়েছে নির্মাণ খাত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ভূমিকা রাখে আবাসন শিল্প বা নির্মাণ খাত। এই শিল্পের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত প্রায় ২০০টি খাত। বর্তমান করোনা দুর্যোগে অন্যান্য সেক্টরের মতো স্থবির হয়ে পড়েছে আবাসন শিল্প। প্রায় এক মাসের অধিক লকডাউনের কবলে পুরো আবাসন খাতে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। শিল্প কারখানা বন্ধ থাকায় নির্মাণ কাজ নেই। এমতাবস্থায় সামনে আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে আবাসন খাত।

বর্তমান অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। সরকার আর্থিক সহযোগিতা করলেই কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে আবাসন খাত? যদি এই অবস্থা দীর্ঘায়িত হতে থাকে তাহলে সামনে অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে পারেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রিহ্যাবের তথ্যমতে প্রতিবছর ১৫ হাজার থেকে ১৭ হাজার ফ্ল্যাট সরবরাহ করা হয়। যার মধ্যে এক তৃতীয়াংশই প্রবাসে বসবাসকারী ক্রেতাগণ নিয়ে থাকেন। ফলে বাংলাদেশের গৃহায়ণ শিল্প প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

আবাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাত মিলে প্রায় ৩৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান। করোনাভাইরাসের কারণে দেশের আবাসন শিল্পে সবচেয়ে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে নির্মাণ কাজ স্থবির। ফলে ৩৫ লাখ শ্রমিক কর্মহীন। সকল ডেভেলপার অফিস বন্ধ।

রিহ্যাবের সদস্য এক হাজার ১ জন। এছাড়া অনেক আবাসন কোম্পানি রয়েছে। এদের সবার কাজই বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে যারা ভবন নির্মাণ করছিলেন তাদের কাজও ঝুলে গেছে। তাছাড়া আগে যারা ফ্ল্যাট ক্রয়ের চিন্তা ভাবনা করেছিলেন বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তারাও মুখ ফিরিয়ে নেবেন।

আবাসন খাত বোঝার ওপর শাকের আঁটির মতো অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনিতে কাজ বন্ধ তার ওপর আবার যদি রড, সিমেন্টসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে যায় তাহলে তো আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে এই খাতের।

এর আগে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ২০১১ সালে আবাসন খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সেই প্রভাব কাটিয়ে উঠতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কোনো মতে টিকে ছিল এই খাত। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে রেজিস্ট্রেশন ফি কমানো ও লোন সুবিধা দেওয়া এবং সরকারি কর্মকর্তাদের গৃহঋণ সুবিধা দেওয়ায় আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছিল আবাসন খাত। আলো দেখার আগেই অন্ধকারে আবাসন খাত। বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির কারণে এই সংকট কোথায় গিয়ে ঠেকবে বলা মুশকিল এমনটাই দাবি করছেন আবাসন খাতের সংশ্লিষ্টরা।

করোনাভাইরাসের অচল অবস্থার কারণে এই খাতে প্রায় ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করছেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। অনেকের ফ্ল্যাট নির্মাণ শেষ হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে বুঝিয়ে দিতে পারছেন না। আবার করোনা শেষ হলে শ্রমিক বা অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পেলে এই খাতে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। অনেক ছোট–খাটো আবাসন ব্যবসায়ী এরই মধ্যে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার পথে বলেও জানা গেছে।

এবিষয়ে হক বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইমদাদুল হক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আবাসন শিল্প দীর্ঘদিন ধরেই ধুকে ধুকে চলছিল। বর্তমান সরকার গত বছর সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহঋণ ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ফি কমানোসহ কতিপয় সুবিধা দেওয়ায় একটু ঘুরে দাঁড়াতে বসেছিল। এরমধ্যে করোনা সংকট। এই অবস্থা চলতে থাকলে অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাবে।

তিনি বলেন, আমার হক বিল্ডার্সেরই ১১টি প্রজেক্ট চলমান ছিল। অন্তত ৩টি বিল্ডিং এর ফ্ল্যাট আসছে জুন মাসে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। এখন তো কাজ পিছিয়ে যাবে। তাছাড়া লকডাউন উঠে গেলেও শ্রমিক পাওয়া এবং অন্যান্য উপকরণ পাওয়া সবকিছু মিলে খরচ বেড়ে যাবে। এখন যাদের কাছে ফ্ল্যাট বিক্রি করেছি তাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে গিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। এই ক্ষতি আসলে পুষিয়ে নেওয়ার মতো না। তারপরেও সরকারের কাছে আমরা সহযোগিতা চেয়েছি। অন্তত শ্রমিকদের টিকিয়ে রাখতে।

হক বিল্ডার্সের ১১টি প্রজেক্টেই কাজ করে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ শতাধিক শ্রমিক। এরা সবাই এখন বেকার। আয় বন্ধ হলেও বকেয়া বেতন দিতে হয়েছে শ্রমিকদের। আগামীতে কিভাবে টিকে থাকবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এবিষয়ে রিহ্যাবের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, নির্মাণ শিল্প বা আবাসন খাত দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখে। এই খাতে ধস হলে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর আগে ২০১১ সালে একবার রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ধস নেমেছিল। সেটা কাটিয়ে উঠতে ৩-৪ বছর লেগে যায়। এটা সহজেই কাটিয়ে উঠা যায় না। যেহেতু আবাসন খাতের সাথে জড়িত প্রায় ২০০ শতাধিক শিল্প। তাই এই খাতে ধস মানে পুরো অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়া।

আবাসন খাত টিকিয়ে রাখতে সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছে রিহ্যাব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রীর কাছে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আবাসন খাতের সংকট মোকাবিলায় ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আবাসন খাতের সংকট মোকাবিলায় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরও একটি চিঠি দিয়েছে রিহ্যাব।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠিতে আবাসন ব্যবসায়ীদের বিদ্যমান ঋণের সুদ ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মওকুফ ও সহজ শর্তে পুনঃতফসিল করার অনুরোধ করা হয়েছে।

   

চট্টগ্রামে ১২ মেট্রিক টন বিটুমিনসহ গ্রেফতার ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ মেট্রিক টন চোরাই বিটুমিনসহ চক্রের ২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) র‌্যব-৭ পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর সদরঘাট থানাধীন দক্ষিণ নালাপাড়া এলাকায় একটি গোডাউনে অবৈধ উপায়ে ক্রয়-বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে চোরাই বিটুমিন মজুদ করছে-এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার র‌্যাব সাতের একটি বিশেষ আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র‌্যাব আসামি সুমন চন্দ্র দে (৩৮) ও মোঃ আব্দুল্লাহ আজিজকে (৪০) আটক করতে সক্ষম হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা স্বীকার করে যে, পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে বিটুমিন সংরক্ষণ করে এবং পরবর্তীতে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় করে আসছে তারা। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিটুমিন পরিবহনে ব্যবহৃত ১টি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়।

জব্দকৃত চোরাই বিটুমিনের আনুমানিক মূল্য ১২ লাখ টাকা বলে জানায় র‌্যাব।

;

বর্জ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহতের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: তাপস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মুগদায় করপোরেশনের বর্জ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহত স্কুল শিক্ষার্থী মাহিন আহমেদের পরিবারের পাশে থাকার এবং এ দুর্ঘটনায় দোষী সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস মাহিন আহমেদের পরিবারকে সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাতে নিহতের বাড়িতে যান। পরে তিনি গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, গতকাল রাত আনুমানিক নয়টার সময় মুগদার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র হতে বর্জ্য স্থানান্তরকালে করপোরেশনের বর্জ্যবাহী গাড়িতে দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে ছোট্ট বালক মাহিন নিহত হয়। এ দুর্ঘটনায় আমরা অত্যন্ত শোকাহত। আমরা জানাজায় অংশগ্রহণ করেছি। ছোট্ট শিশু হারানোর ঘটনায় বাবা-মাকে কোন ভাষাতেই সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমাদের নেই। আমরা নিহতের পরিবারের পাশে থাকব।

এ দুর্ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, এ দুর্ঘটনায় ইতোমধ্যে মামলা নেওয়া হয়েছে। আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি চাইছি। এই দুর্ঘটনায় যেন সম্পূর্ণ সুষ্ঠু বিচার হয় সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, আমাদের নির্ধারিত গাড়িচালক গাড়ি না চালিয়ে অন্যকে দিয়ে ভাড়া খাটিয়ে গাড়িটি চালানো হচ্ছিল। আমরা এ ধরনের অনিয়ম কোনভাবে বরদাশত করবো না। এ ঘটনায় কঠোরতর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ রকম কার্যক্রমে যারা জড়িত তাদের সকলের বিরুদ্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এ ধরনের ঘটনায় আগেও আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। জড়িতদের চাকুরিচ্যুত করেছি, ছাটাই করেছি। আবার অনেক নতুন নিয়মিত গাড়িচালক নিয়োগ দিয়েছি। ফলে বিগত ২ বছর করপোরেশনের গাড়ি দ্বারা কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটেনি। গতকালের এই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা আমাদেরকে অত্যন্ত শোকাহত করে তুলেছে। এবারও আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিবো। যাতে করে এ ধরনের দুর্ঘটনার আর কোনো পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসিম আহমেদ, অঞ্চল-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, স্থানীয় ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সিরাজুল ইসলাম ভাট্টি, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর মাকসুদা শমশের প্রমুখসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

;

৯ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ ঘোষণা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
৯ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

৯ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে আগামী ৯ মে পর্যন্ত সকল পরীক্ষা ও একাডেকিম কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে তিনটায় শুরু হওয়া জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে এক ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা আগামী ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এবং ১২ মে থেকে যথারীতি চালু হবে।

এতে আরও বলা হয়, গতকাল (বৃহস্পতিবার) শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের বিষয়টি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট না করার শর্তে হলে অবস্থান করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন চুয়েটের সহকারী রেজিস্ট্রার (সমন্বয়) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী ৯ মে পর্যন্ত সকল পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকব। ১২ মে থেকে যথারীতি ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হবে। দুইজন মেধাবী ছাত্রের অকাল মৃত্যুতে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যদিও বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রোর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সই করা চিঠিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষাসহ) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে এদিন রাতে প্রশাসনের সাথে বৈঠক শেষে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে।

এর আগে, গত সোমবার মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হয়ে বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থী। ওইদিন আনুমানিক বেলা সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন। এ ছাড়া গুরুতর আহত হন পুরকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে মাঠে নামেন। আন্দোলন চলার সময় শিক্ষার্থীরা বাসেও আগুন দেন।

;

চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড বগা গ্রেফতার



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার আলোচিত সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডখ্যাত দেলোয়ার হোসেন ওরফে বগাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে উপজেলার পশ্চিম আমিলাইশ এলাকা থেকে এই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়।

বগার বিরুদ্ধে সাতকানিয়ার কাঞ্চনা গ্রামে ডাকাতি করতে গিয়ে শিশু হত্যা, অপহরণ, ইয়াবা, ছিনতাই, ডাকাতি ও সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের সময় সাতকানিয়ার সাবেক এমপির স্ত্রী-শ্যালকের ওপর হামলাসহ কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে।

বগাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার। তিনি বলেন, ইয়াবা মামলায় বগাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সাতকানিয়া ও বাকলিয়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

৩ মাসে বগার নেতৃত্বে ২২ হামলা:

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালিয়েছে সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড বগা। গত তিনমাসে সাতকানিয়ার চরতি-আমিলাইশ এলাকায় অন্তত ২২টি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে এই সাইফুল বাহিনী। এরমধ্যে কমপক্ষে ১০টি ঘটনায় থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে। বাকিরা ভয়ে মুখ খোলেননি।

নতুন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যেতেই নির্বাচনের দিন সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় সাইফুল বাহিনীর অত্যাচার। দক্ষিণ চরতিতে নৌকার সমর্থকদের বাড়ি-ঘর ও দোকানে হামলা ও লুটপাট চালায় সাইফুল বাহিনী। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াছ শাহীনের ফার্মাসি ও কৃষক লীগ নেতা ফারুকের বাড়ি ও ডেকোরেশনের দোকানে লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়।

নির্বাচনের পরের দিন সোমবার খতিরহাট এলাকায় নৌকা সমর্থক জিল্লুর রহমানকেও মারধর করে সাইফুল বাহিনী। নির্বাচনের আগের দিন শনিবার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল আমিন কে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সন্ত্রাসী সাইফুলের বড় ভাই জসিম উদ্দিন।

এছাড়া নির্বাচনের পর ৫ ফেব্রুয়ারি চরতি ইউনিয়ন পরিষদ কার্য়ালয়ে ঢুকে বর্তমান চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীকে মারধর করে সাইফুল বাহিনী। পরে দক্ষিণ চরতি এলাকার ডিশ ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে পরিবারসহ বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে সাইফুল বাহিনী। নির্বাচনের পর থেকে এখনো ঘর ছাড়া নুর মোহাম্মদের পরিবার। চরতি ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মাইনুদ্দিনকে অপহরণ করে মারধর দক্ষিণ চরতির আরাফাত সিকদারকে মারধর করে এই সাইফুল বাহিনী।

নির্বাচনের আগে ২১ ডিসেম্বর দক্ষিণ চরতি কাটাখালী ব্রিজের পাশে নৌকার পথ সভায় অস্ত্র ও লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায় সাইফুল ও তার বাহিনী। এই সময় নৌকা সমর্থক চরতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুহুল্লাহ চৌধুরী, সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান, মিছদাকুল বেসারত চৌধুরী, মোহাম্মদ রফিক, রবিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ ফয়সালসহ কমপক্ষে ৮-১০ জন আহত হন।

এর দুইদিন আগে ১৯ ডিসেম্বরও নৌকার পথসভা শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াছ শাহীনকে মারধর করে সাইফুল বাহিনী। ওইদিনও ইলিয়াছ শাহীনের ফার্মাসি ও কৃষক লীগ নেতা ফারুককে বাড়ি-দোকানে হামলার ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি নুর হোসেন কেও মারধর করে সাইফুল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এমন কোনো দিন নেই যে- সন্ত্রাসী সাইফুল ও তার বাহিনী দ্বারা এলাকার মানুষের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী সাইফুল কোনো পদ পদবিতে না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের পরিচয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্য়াক্রম চালিয়ে আসছেন। এতদিন পর্যন্ত সাবেক এমপি আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর অনুসারী হিসেবে এলাকায় তার পরিচিতি ছিল। গত বছর প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনকে ঘিরে ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হলে তখন থেকে এম এ মোতালেবের দিকে ভিড়েন সাইফুল মেম্বার। মোতালেব দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলে তারপর থেকে আরো হিংস্র হয়ে উঠেন তিনি।

এর আগে ২০১৮ সালে সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভিটে-মাটি ছেড়ে যায় দক্ষিণ চরতির ১০ পরিবার। নারী ও শিশুসহ এসব পরিবারের প্রায় অর্ধ শতাধিক লোকজন দীর্ঘ এক বছর নিজেদের ভিটে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর উদ্ভাস্তুর মতো দিনযাপন করে। বাড়ি-ভিটে ফিরে পেতে ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেন উদ্ভাস্তু পরিবারসহ এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন।

সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডার হিসেবে এসব মারধর ও হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে ইয়াবা ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন (বগা)। ইতোমধ্যে দুই-তিন বার জেলেও গিয়েছে এই ইয়াবা ব্যবসায়ী। সাতকানিয়ার পশ্চিম অঞ্চল (চরতি, আমিলাইশ, কাঞ্চনা, এওচিয়া ও নলুয়া) সহ চন্দনাইশের বৈলতলী, আনোয়ারার হাইলধর ও বাঁশখালীর পুকুরিয়া অঞ্চলের অস্ত্র ও ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে সাইফুল ও তার বাহিনী। এছাড়া রয়েছে খাল ও সাঙ্গু নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাহাড় কেটে মাটি ব্যবসা।

সাইফুল বাহিনীর অন্য সদস্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার।

 

;