বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হচ্ছে ভার্চুয়াল মিটিং

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভার্চুয়াল মিটিং, ছবি: সংগৃহীত

ভার্চুয়াল মিটিং, ছবি: সংগৃহীত

গোটা পৃথিবীর মতো করে কোভিড-১৯ এর কারণে বাংলাদেশেও ভার্চুয়াল মিটিং বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে জুমের মতো ভার্চুয়াল মিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোর ব্যবহার বাড়ছিল লাফিয়ে লাফিয়ে।

বাসায় বসে যারা অফিসের কাজ করছেন এমন কর্পোরেট এক্সিকিউটিভদের কাছে ভার্চুয়াল মিটিং বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকে আবার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেও নানান ধরনের ভার্চুয়াল মিটিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন। আবার সরকারি কাজেও এখন এমন প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে।

সরকারি কাজে জুম প্ল্যাটফর্ম দেশে প্রথম ব্যবহার শুরু করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। সরকারি নানা ধরনের মিটিং করা থেকে শুরু করে সংবাদ সম্মেলন এবং নানা আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজনেও এখন তিনি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেছেন। গত ২১ মার্চ পলক প্রথম সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন জনপ্রিয় ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম জুমে। অন্যান্য কর্পোরেট অফিসও এখন সংবাদ সম্মেলনের জন্যে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন।

কয়েক দিন আগে তো গ্রামীণফোন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং জিএসকে-ও অনলাইনে তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা করেছে। তবে ই-কোম্পানিগুলো অবশ্য বাজারে প্রচলিত কোনো প্ল্যাটফর্মে তাদের বার্ষিক সাধারণ সভাগুলো করেনি। বরং এজন্যে তাদেরকে অনেকগুলো প্ল্যাটফর্মের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।

করোনার কারণে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই মূলত ভার্চুয়াল মিটিং প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার হতে শুরু করে বাংলাদেশে। ১৭ মার্চ প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। প্রায় একই সময়ে দেশের বড় বড় সব কর্পোরেট অফিসও তখন বন্ধ হতে শুরু করে। আর ব্যবহার বাড়তে শুরু করে জুমের।

শুরু থেকে একচেটিয়া বাজার নিলেও চলতি সপ্তাহেই তাদেরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বাজারে এসেছে ফেসবুকের প্ল্যাটফর্ম ম্যাসেঞ্জার রুম। শুরুতে স্বল্প সংখ্যক দেশে ফেসবুক এই সেবাটি চালু করলেও বাংলাদেশ সেই সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়ে যায়। আর প্রথম দিন থেকেই ম্যাসেঞ্জার রুমের ব্যবহার হতে দেখা যায় বাংলাদেশে।

ম্যাসেঞ্জার রুম মাত্র চার দিন হয় চালু হয়েছে সে কারণে তার ব্যবহারের কোনো হিসেব এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। তবে সম্পূর্ণ নিখরচায় এক সঙ্গে ৫০ জনকে নিয়ে মিটিং করার সুবিধা আছে ম্যাসেঞ্জার রুমে। এমনকি কারো যদি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নাও থাকে তাহলেও সে এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হতে পারবে।

অন্যদিকে আগে থেকেই চালু থাকা জুম গত চার মাসে সারা পৃথিবীতেই ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ডিসেম্বরে এক কোটি থেকে তাদের গ্রাহক সংখ্যা হঠাৎ করেই করোনার কারণে চলে আসে ৩০ কোটিতে। আর গত তিন সপ্তাহে সেটি বাড়ে প্রায় ১০ কোটি।

তবে বাংলাদেশের হিসেব আলাদা করে বলা সম্ভব নয়।

দেশের জনপ্রিয় একটি আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ের (আইআইজি) একজন শীর্ষ কর্মকর্তা সুমন আহমেদ সাবির বলেন, গোটা পৃথিবীর মতো জুম যে বাংলাদেশ অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সেটি বলে দেবার অপেক্ষা রাখে না। সে কারণে তাদের পর্যায়ে ইন্টারনেট ডেটার চাহিদাও অনেকে বেড়েছে বলে জানান সুমন।

জুম প্ল্যাটফর্ম এবং ম্যাসেঞ্জার রুম দুটোই ব্যবহার করছেন দেশের এমন একজন গ্রাহক শরীফ জামান। তিনি বলেন, আগে জুম ব্যবহার করে যেমন আনন্দ পেয়েছিলাম এবার ম্যাসেঞ্জার রুম ব্যবহার করে দেখলাম এখানে সুবিধা আরও বেশি।

এদিকে জুমসহ অন্যান্য মিটিং প্ল্যাটফর্মের জনপ্রিয়তা দেখেই ফেসবুক নিয়ে আসে ম্যাসেঞ্জার রুম-যেটি অনেকটাই জুমের মতোই। তবে সবচেয়ে বড় হল এখানকার সব সার্ভিসই ফ্রি।

জুমে যেমন ফ্রি মিটিং করতে চাইলে ৪০ মিনিটের বেশি পাওয়া যায় না। ম্যাসেঞ্জার রুমে তার বালাই নেই। জুমের ক্ষেত্রে কর্পোরেটরা সাধারণত প্রো বা বিজনেস দুটি সেবা কিনে ব্যবহার করছেন। প্রথমটির জন্যে মাসে ১৫ ডলার আর দ্বিতীয়টির জন্যে দিতে হয় ২০ ডলার।

টাকা খরচ করে সেবা কিনে নিলে অবশ্য আনলিমিডেটড সময়ের জন্যে মিটিং করা যায়।

বিজ্ঞাপন