করোনা: শেবাচিমে টেকনোলজিস্ট সংকট
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গোটা বিশ্ব স্থবির হয়ে গেছে। বাংলাদেশেও দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সে হিসেবে বরিশাল বিভাগেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে করোনা সন্দেহে নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা।
আর করোনায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসার জন্য বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভরসার জায়গা হলো বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল। এই হাসপাতালে নতুন একটি ভবনে খোলা হয়েছে করোনা বিভাগ। এছাড়া হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে করোনা শনাক্তকরণ আরটি-পিসিআর ল্যাবও রয়েছে। তবে এখানে ভর্তিকৃত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ এবং করোনা শনাক্তকরণে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংকট দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডের আইসোলেশন ইউনিটে ৬ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আইসোলেশন ইউনিটে বিভূতিভূষণ হালদার (৩০) নামে একজন কনিষ্ঠ টেকনোলজিস্ট একাই কাজ করছেন। বাকি ৫ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ডিউটি এড়িয়ে চলছেন৷
জানা গেছে, শেবাচিমের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ১০৪ জন ও শেবাচিমের ডাক্তার, ইন্টার্ন ডাক্তার, মেডিকেল ছাত্র ও স্টাফ নার্সসহ ৩০৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করেন বিভূতিভূষণ হালদার৷
৮ এপ্রিল বায়োজিদকে সহকারী করে নতুন একটি ডিউটি রোস্টার তৈরি করা হয়। কিছুদিন ডিউটি করার পরে ১৯ এপ্রিল বায়োজিদের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা শনাক্তকরণ আরটি-পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। সেই থেকে বায়োজিদকে কোভিড-১৯ নিয়ম অনুযায়ী হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।
আবার বিভূতি একা একাই নমুনা সংগ্রহের কাজ করে যাচ্ছেন৷
এরপর ২৭ এপ্রিল থেকে সেচ্ছাসেবী হিসেবে প্রিন্স নামে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের এক ছাত্র বিভূতির সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ৬ মার্চ শেবাচিমের করোনা বিভাগে আইসোলেশন ইউনিট চালু করা হয়। এরপর ১৫০টি আইসোলেশন বেডসহ ১৮টি ভেন্টিলেশন আইসিইউ বেড প্রস্তুত করে আলাদা মেডিকেল টিম দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে৷ এছাড়াও হাসপাতালে আরও ১০টি ভেন্টিলেশন আইসিইউ বেড প্রস্তুত রয়েছে।
এ পর্যন্ত শেবাচিমে ২৫ জনের করোনা শনাক্ত (পজিটিভ) হয়েছে। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৩ জন। ২ জন মারা গেছেন। বাকিরা সুস্থ হয়েছেন।
শেবাচিম হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) বিভূতিভূষণ হালদার বার্তা২৪.কমকে জানান, শেবাচিম পরিচালক রোস্টার করে ৬ জন টেকনোলজিস্টকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব দেন। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে টেকনোলজিস্টরা ডিউটি এড়িয়ে চলছেন।
বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম বাকির হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, হাসপাতালের কর্মরত টেকনোলজিস্টদের সমন্বয় করে আইসোলেশন ইউনিটে ডিউটি করার জন্য একটি রোস্টার তৈরি করা হয়। শুধুমাত্র বিভূতিভূষণ ছাড়া সবাই করোনার ভয়ে রোস্টার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও আরটি-পিসিআর ল্যাব ইনচার্জ একেএম আকবার কবির বার্তা২৪.কমকে জানান, দিন যতো যাচ্ছে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ বাড়ছে৷ তাই আরও দক্ষ টেকনোলজিস্ট প্রয়োজন।