জোয়ারে ডুবে যায় ফেরিঘাট, বৃষ্টিতে সড়কে কাদাপানি
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ফেরিঘাট ডুবে ও বৃষ্টিতে অভ্যন্তরীণ সড়কে কাদাপানিসহ নানা সমস্যায় দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের। এ রুটটি ২১ জেলার মানুষের যোগাযোগের সহজ মাধ্যম। ধর্মীয় উৎসব এলে এ পথে যাত্রীর চাপ বেড়ে যায়। সামনে কোরবানি ঈদ। বেড়ে যাবে যাত্রীদের চাপ। সঙ্গে বাড়বে দুর্ভোগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর জোয়ারের পানিতে ডুবে রয়েছে ফেরি ঘাটের লো-ওয়াটার ঘাটটি। প্রায় আড়াই থেকে তিন ফুট পানিতে ঘাটটি ডুবে রয়েছে। এতে বাস-ট্রাকসহ শত শত যানবাহন ফেরি পারাপারে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এছাড়াও প্রায় সময় ইঞ্জিনে পানি ঢুকে যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে। যে কারণে ঘাটের প্রবেশ পথে বাস-ট্রাক আটকা পড়ে দুর্ভোগ বেড়ে যায়।
জানা গেছে, ফেরিতে যানবাহন ওঠানোর জন্য লো-ওয়াটার, হাই ওয়াটার ও মিড ওয়াটার লেভেলের তিনটি ঘাট থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু মজু চৌধুরীরহাট ঘাটে মাত্র একটি মিড ওয়াটার লেভেলের ঘাট নির্মাণ করা হয়েছে। দীর্ঘ দিন থেকে সংস্কার না করায় এখানকার ঘাটটি এখন লো ওয়াটার ঘাটে পরিণত হয়। যে কারণে সামান্য জোয়ারে ডুবে যায়।
এদিকে, সামান্য বৃষ্টিতে ফেরিঘাটে যাওয়ার অভ্যন্তরীণ সড়কটি কাদাপানিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ঘাট পর্যন্ত হেঁটে যেতেই নাকানি-চুবানি খেতে হয় যাত্রীদের। অনেক সময় কাদায় মালবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস আটকে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। পাশেই রয়েছে বালুমহাল। প্রতিদিন ঘাটের ওই সড়কের ওপর ট্রাক রেখে বালু ভর্তি করা হয়। এ সময় এ রুটে চলাচলকারী শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
স্থানীয়রা জানায়, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি কিংবা জোয়ার হলেই ঘাট এলাকায় পানি জমে যায়। এতে করে দু’ পাড়ের যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটে। নদীতে ভাটা পড়ে পানি কমলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। অন্যদিকে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সড়কে কাদাপানি জমে গেছে। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। যে কারণে চলাচলে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এতে বাড়ছে ঝুঁকি। এমন পরিস্থিতিতে ঘাট ও সড়কটি দ্রুত সংস্কার না করলে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগের অন্ত থাকবে না।
লক্ষ্মীপুর-ভোলা ফেরি সার্ভিস রুটের মজুচৌধুরীর হাট ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক সিহাব উদ্দিন জানান, এখানে ফেরিতে যানবাহন ওঠানো ও নামানোর জন্য একটি ঘাটই রয়েছে। হাই ওয়াটার লেভেলের একটি ঘাট নির্মাণের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও সড়কটির পাশে বালুমহাল রয়েছে। এতে বালু বোঝাই ট্রাকগুলোর যাতায়াতে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সড়ক সংস্কারের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ওই সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাজাহান আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় লাল পতাকা দিয়ে সড়কটির সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। প্রশাসনের নির্দেশ না মানায় গত ৪ জুন একটি বালুমহাল সিলগালা ও দুটি ট্রাক জব্দ করেন সদরের ইউএনও।