৫ বছর ধরে শিকলে বাঁধা শান্তর জীবন
পাঁচ বছর ধরে শিকলে বাঁধা জীবনযাপন করছে শান্ত। সে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা ছাতিয়ান ইউপির কালিতলা এলাকার জসিম উদ্দিন-সিমা দম্পতির ছেলে।
জসিম উদ্দিন পেশায় একজন দিনমজুর। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে সংসার চালায়। ছেলের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে পারেনি। তাই ভালো কোনো চিকিৎসা করা হয়নি শান্তর ।
শান্তর বাবা জসিম উদ্দিন জানান, শান্তর বয়স প্রায় ১০ বছর। যখন তিন বছর তখন বাড়ির পাশের ময়লা-আবর্জনা, মাটি, সাবানের ফেনা, কলা গাছ, গোবরের লাকড়ি খেতে দেখে আমরা অবাক হই। শান্ত কারো সঙ্গে কথা বলে না। তার নাম ঠিকানা কিছুই বলতে পারে না। এরপর ২০১৪ সালে রাজশাহীতে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলেও ভালো করতে পারিনি।
কষ্টের কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, শান্ত রাতে ঘুমাতে দেয় না। আমার ছোট ছেলেকে একাধিকবার মেরে ফেলতে গিয়েছিলো। তারপর বাধ্য হয়েই তাকে শিকলে (দড়ি) বাঁধতে হয়েছে। নিজের সন্তানকে শিকলে বাঁধা কোনো বাবা মায়ের পক্ষেই সহ্য করা সম্ভব নয়।
শান্তর মা সিমা খাতুন বলেন, ছেলের কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। ছেলেকে কোলে তুলে নিতে মন প্রাণ ব্যাকুল থাকে, বাধ্য হয়ে সেই ছেলেকে ঠেলে দিয়েছেন নির্মম এক শিকলে বাঁধা জীবনে। আমার ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে চাই। আবার কোলে তুলে নিতে চাই।
ছাতিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, আসলে শান্ত একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু। তার জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করা হয়েছে। পরিষদ থেকে এ পরিবারকে সরকারি সব প্রকার সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
মিরপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জামশেদ আলী বলেন, সমাজসেবা অধিদফতর থেকে তাকে প্রতিবন্ধী ভাতা করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি কোনো সাহায্য সহযোগিতা দেওয়ার পরিপত্র আসলে তাকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।