টেন্ডার ছাড়াই নিশ্চিহ্ন শতবর্ষী তেঁতুলগাছ

  • জাহিদ হাসান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কেটে ফেলা হয়েছে শতবর্ষী তেঁতুলগাছ/ছবি: বার্তা২৪.কম

কেটে ফেলা হয়েছে শতবর্ষী তেঁতুলগাছ/ছবি: বার্তা২৪.কম

টেন্ডার ছাড়াই যশোরের শতবর্ষী তেঁতুলগাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নে গাছটিতে করাত বসানো হলো।

শুক্রবার (৮ মে) জেলা পরিষদের শ্রমিকরা শহরের রেলগেট এলাকার প্রাচীন এই গাছটি কেটে ফেলে। এলাকাবাসী বলেন, গাছটির নামেই স্থানটির নামকরণ হয় তেঁতুলতলা। ঐতিহ্যবাহী গাছটি রেখেই রাস্তার কাজ করা যেত।

বিজ্ঞাপন

শনিবার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের চিঠিতে তেঁতুলগাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে টেন্ডার ছাড়াই জেলা পরিষদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় গাছটি কাটা হয়েছে।

গাছ রেখে রাস্তার কাজ করার সুযোগ ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, মরা গাছ রেখে কিসের সুযোগ। ওই মরা গাছে কিছু আছে নাকি। মরা গাছ রেখে কী হবে?

বিজ্ঞাপন

এদিকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন এলাকাবাসী। তেঁতুলতলা এলাকার বাসিন্দা সালমান হাসান বলেন, মরা নয়, জীবন্ত শতবর্ষী তেঁতুল গাছটি কেটে নিয়েছে জেলা পরিষদ। গাছটি রেখেও রাস্তার কাজ করা যেত। কিন্তু সেটি করা হয়নি। নির্বিচারে গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে।

জানা যায়, যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে শহরের রেলগেট এলাকায় প্রকান্ড আকৃতির ওই তেঁতুল গাছটি ছিল। প্রাচীন ওই গাছটির নামে একপর্যায়ে স্থানটির নামকরণও হয়ে যায় তেঁতুলতলা। শুক্রবার সকালে জেলা পরিষদের একদল শ্রমিক করাত, কুড়াল, দঁড়িসহ গাছ কাটার নানান যন্ত্রপাতি নিয়ে হাজির হয় তেঁতুলতলায়। এরপর তারা দলবেঁধে শতবর্ষী গাছটিতে করাত চালানো শুরু করে। গাছটির কাটা টুকরো গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানান, গাছটির বয়স শতবর্ষ ছাড়িয়েছে। বহুবছর ধরেই গাছটি আছে। গাছটি কেটে ফেলায় খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে গাছটি রেখেই কাজ করা যেত। এত বছরের পুরাতন গাছটি না কেটে ফেললেও হতো।

স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ হক বার্তা২৪.কমকে জানান, বাজার করে ফেরার সময় চোখে পড়ল তেঁতুল গাছটার উপরের অংশ নেই। অর্ধেকটা কেটে ফেলা হয়েছে। বাকই অংশটুকুতেও করাত চলতে দেখলাম। দৃশ্যটা দেখে হতবাক হয়েছি। প্রবীণ গাছটার সাথে জীবনের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে।

এলাকার একাধিক প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে থেকেই গাছটি দেখে আসছেন। তখনও এখনকার মতনই ছিল গাছটির আকৃতি। সময়ই বদলেছে। কিন্তু সেই কবেকার থেকে একই চেহারা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল তেঁতুল গাছটি। গাছটির বয়স শতবছরের উপরে। যশোর-বেনাপোল রোড দিয়ে যাওয়ায় সময় তেঁতুল গাছটি দেখা যায়। গাছটি ছিল অনেক চওড়া, উচ্চতাও ছিল বেশ অনেক। গাছটি বছর ভর সবুজ রঙা চিরল পাতায় ভরে থাকত।