পড়ে রইল শূন্য খাতা!



রফিকুল ইসলাম মন্টু
ক্ষীরমোহন ও তার স্ত্রী পটুরাণী জলদাস

ক্ষীরমোহন ও তার স্ত্রী পটুরাণী জলদাস

  • Font increase
  • Font Decrease

ভর দুপুরে ঘরের উঠোন পরিষ্কারে ব্যস্ত পটুরাণী জলদাস। ছোট্ট উঠোনের চারধারে অনেকগুলো ঘর। গাদাগাদি করে বসবাস। এক ঘরের মুখের সঙ্গে লাগানো আরেক ঘরের পেছন। রাস্তা থেকে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ পথে মন্দির থেকে বাতাসে মিলছে ধুপকাঠির ধোঁয়া। বাজছে ঘন্টি। অচেনা লোকের গলার আওয়াজ শুনে পেছন ফিরে বিস্মিত পটুরাণী। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে গেল তার আহাজারি। বলতে থাকেন- ৯ বছর বয়সে আমাদের বিয়ে হয়েছিল। এতগুলো বছর একসাথে ছিলাম। ঘরখানা ছাড়া আর কিছু নাই। সর্দারও নাই। কেমনে চলমু?

পটুরাণী আমাকে চিনেন। এ বাড়িতে এই দ্বিতীয়বার আমি। এ পাড়ার বয়সী ব্যক্তি ক্ষীরমোহন সর্দারের সঙ্গে কিছু গল্প করবো বলে ভেবেছিলাম। বয়সের ভারে ন্যূয়ে পড়া মানুষটা মাত্র বছর দু’য়েক আগে জলদাস সম্প্রদায়ের অনেক তথ্যই দিয়েছিলেন। এবার হয়তো তার কাছে জমা হয়েছে আরও অনেক কথা। সেগুলো নেওয়া যাবে নোটবুকে। কিন্তু না, আর শোনা হবে না তার কথা। জমানো কথাগুলো মনের ভেতরে নিয়েই পৃথিবীর আলোবাতাস থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন জলদাস পাড়ার সর্দার। রেখে গেছেন পটুরাণী আর তার নাতি নাতনিদের। সম্পদ বলতে বাবার রেখে যাওয়া ভিটেটুকু। সারাজীবনের সঞ্চয় তো নেই-ই, বরং কিছু দেনাও রেখে গেছেন; যা বইতে হবে জীবিত উত্তরসূরিদের।

কান্না থামে না পটুরাণীর। ৯ বছর বয়সে সেই শিশুকালে বিয়ের কথাটা মনে এলে তার কান্না আরও বাড়ে। আমি পুরানো নোটবুক খুলে ক্ষীরমোহন সর্দারের বৃত্তান্ত খুঁজি। নাম-ক্ষীরমোহন জলদাস, পিতা-গোকুলবাসী জলদাস, গ্রাম-উত্তরক‚ল কাজীপাড়া। নোটবুকের কোনায় স্বাক্ষর দিয়েছিলেন ক্ষীরমোহন। বলপেনের কালো কালিতে স্পষ্ট অক্ষর। স্বামীর স্বাক্ষর ভালোভাবে মুখস্থ পটুরাণীর। নোটবুক দেখাতেই বলে ওঠেন- সর্দারের সই, সর্দারের সই। খুব মনযোগে অপলক চেয়ে থাকেন পটুরাণী। হাতে থাকা ঝাড়ুটা অজান্তেই পড়ে গেল। মনে হলো, পটুরাণী মুহূর্তে ফিরে গেছেন হারানো দিনে কাছে; অতীতে।  

এই এলাকাটির নাম বড় কুমিরা। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার আওতায় পড়েছে। এখানে রয়েছে বৃহৎ জলদাস গ্রাম। এ গ্রামের লোকেরা যে খালটিকে কন্যাকুমারী বলে চিনেন; সেই খাল গ্রামকে দু’ভাগে ভাগ করেছে। এ অংশ উত্তরপাড়ে; তাই উত্তরক‚ল বলে অনেকে। জলদাস সম্প্রদায়ের জেলেবৃত্তি আদি পেশা। বংশপরম্পরায় এরা মাছধরার ওপর নির্ভরশীল। মাছধরা, মাছ ব্যবসা; খুব কম সংখ্যক মানুষই রয়েছে; যারা অন্য পেশায় জীবিকা নির্বাহ করে। পূর্ব উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকায় এদের বসবাস। এই সম্প্রদায়ের অনেকেরই নিজস্ব কোন জমিজমা নেই। জাল-নৌকাই জীবিকার একমাত্র অবলম্বন।

দু’ গ্রামের মাঝখানে বয়ে চলা খালটি এখন ব্যবহারের অনুপযোগী। ইদানীং খালের দূষণ এতটাই বেড়েছে; জলে আর কোন কাজ চলে না। ব্যবহারের অযোগ্য খাল; তাই দু’ধারেই জমছে ময়লা আবর্জনা। খালের পাড় ধরে সরু চলার পথ অনেক দূর গিয়েছে এঁকেবেঁকে। পথের পাশে জলদাস পরিবারের ছোট ছোট ঘর। সামান্য জমিতে অনেকজনের বসবাস। চারিদিকে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। শুধু বড় কুমিরা বলে কথা নয়; চট্টগ্রামের উত্তর কাট্টলি, সলিমপুর, শীতলপুর, সন্দ্বীপের বাংলাবাজার, বাউরিয়া, লক্ষ্মীপুরের রামগতির চরগাজী- যেখানেই জলদাস গ্রামে গিয়েছি; ছবিটা একই রকম। জলদাস গ্রামের এটাই কী নিয়ম! আমার জানা নেই। ক্ষীরমোহন সর্দারও সেরকমই এই একটি ঘিঞ্জি ঘরে থাকেন। ঘরের মেঝে পাকা সামনের অংশে রং লেপা।

এই ঘরের সামনেই সেবার কথা হয়েছিল ক্ষীরমোহন জলদাসের সঙ্গে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও শূন্য খাতাই রয়ে গেল তার। জীবনভর শ্রম দিয়েছেন। সমুদ্রে মাছ ধরেছেন। জাল নৌকা আর মাছের সঙ্গেই কেটেছে দিনগুলো। শিশুকালে বাবার সঙ্গে নৌকায় যেতে যেতে তালিম নিয়েছিলেন। তার কাছ থেকে শিখেছেন তার ছেলেরা। এভাবেই বংশপরম্পরায় এরা মাছধরা পেশায় জীবন কাটিয়ে দেয়। কিন্তু অবস্থা বদলায় না। বাংলাদেশের পূর্ব উপকূলে বসবাসরত ৫ লক্ষাধিক জলদাস জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তুলনামূলক বিচারে ক্ষীরমোহনের অবস্থা সরলরেখায়। সর্দার হয়ে যে খুব বেশি কিছু করতে পেরেছেন তা নয়। বাবা সর্দার ছিলেন বলে হয়তো ক্ষীরমোহনকে গ্রামবাসী মিলে এই পদের দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু এরফলে তার বাড়তি কোন সুবিধা নেই। পেশায় কঠোর পরিশ্রমের মধ্যদিয়েই সবাইকে টিকে থাকতে হয়।

উত্তরাধিকার সূত্রে এই সম্প্রদায়ের সক্ষম ব্যক্তিটিও হয়ে ওঠেন একজন জেলে। বৈঠা চালাতে তার হাতে জোর লাগে; জাল টানতে গতরে শক্তি লাগে। বাপ-দাদার জাল-নৌকাটাও পেয়ে যায় পরের প্রজন্ম। নদী-সমুদ্রে জাল ফেলার স্থানটিও পায় উত্তরাধিকার সূত্রেই। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব সংঘাত অনেক হয়; তবুও এটাই নিয়ম। বাবার সূত্রে জাল-নৌকা পাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি ক্ষীরমোহনের। অন্যের নৌকায় কাজ করে নিজেকেই করতে হয়েছে সব। জীবনের বেশিরভাগ সময়টা গতর খেটেছেন। জাল-নৌকা নিয়ে সমুদ্রে যাওয়া, মাছ ধরা, আর মাছ বেচায় কাটিয়েছেন জীবনের ৬৩টি বছর। দাদনের বিনিময়ে বছরের পর বছর মাছ দিতে হয়েছে মহাজনের আড়তে। জেলে সম্প্রদায়ের জীবনে এ যেন এক চিরাচরিত প্রথা। জীবনে কেউ কখনো দাদনমুক্ত হতে পারে না; পারেননি ক্ষীরমোহনও।

কথা বলতে বলতে পুরানো স্মৃতি হাতড়ানোর চেষ্টা করছিলেন ক্ষীরমোহন জলদাস। বললেন, ছোটবেলায় বেশ ভালো ছিলাম। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলদাস সম্প্রদায়ের যেন সময় ফুরিয়ে গেছে। মাছ পাওয়া যেত বেশি। আয় রোজগার ভালো ছিল। কেনাকাটা করে বেশ ভালোভাবে সংসার চালাতে পারতাম। জীবনের শেষ বয়সে সে সবের কিছুই নেই। অভাব অনটন আগের চেয়ে বেড়েছে। এত ধারদেনা আগে করতে হয়নি। সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে বেড়েছে বিভেদ। বাইরের সমাজের দৃষ্টিও আগের মত ভালো নেই। মাছ ধরার এলাকা সংকুচিত হয়ে গেছে। নানান দূষণের কারণে কমেছে মাছের পরিমাণ। মাছ পাওয়া না পাওয়ার সঙ্গে জেলে সম্প্রদায়ের জীবন জীবিকা সম্পৃক্ত। এ কারণে মাছ কমে যাওয়ায় তাদের জীবনের নানাস্তরে সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষীরমোহনের কথার সঙ্গে আশপাশের জেলে বাড়িগুলোর অবস্থা মিলে যায়। হতদরিদ্র, বিপন্ন অবস্থায় বেঁচে থাকা। কোনভাবেই অবস্থা বদলাচ্ছে না। দু’গ্রামের মাঝ বরাবর বয়ে যাওয়া খালটিতেও আগে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। এলাকার ছিল না কোন দূষণ। এখন তো দূষণে সমুদ্রেও মাছ পাওয়া যায় না। বলছিলেন ক্ষীরমোহন।

ফেলে আসা দিনগুলোর দিকে তাকিয়ে ক্ষীরমোহন বলছিলেন জীবনের কর্ম সময়টা কাটিয়েছেন নৌকায়। কিছু সময় বাবার সঙ্গে; অনেকটা সময় একা এবং ছেলেদের নিয়ে। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রবল ঝড়ের মুখে পড়েছিলেন। সেবার নৌকায় ছিলেন ৫জন। সীতাকুণ্ডের উত্তরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এমন ঝড়তুফান তার জীবনে অনেক এসেছে। ডাকাতের কবলেও পড়েছেন। এত কিছুর পরেও কোন সঞ্চয় করতে পারেনি। শূন্য খাতা। শেষ জীবনেও মাছ ধরা কিংবা বেচাকেনা না হলে সংসার চলতো না। বাবার কাছ থেকে ভিটে ছাড়া অন্যকিছু পাননি। সমুদ্রের সঙ্গে, জাল-নৌকার সঙ্গে থেকে ঋণ না করেই ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছেন; এটা যেন তার জীবনের বড় পাওয়া। ক্ষীরমোহনের কথার সূত্র ধরে পটুরাণী বলছিলেন, যে কষ্ট সারাজীবনে করছে, তা বলে শেষ করা যায় না। তেমন কিছু আমরা করতে পারিনি।

ক্ষীরমোহন জলদাস মানুষটা চলে গেলেন মাত্র মাস দু’য়েক আগে। পরিবার-পাড়া থেকে এখনও শোকের চিহ্ন মুছে যায়নি। আমার ক্যামেরায় ধরা অসংখ্য মানুষদের মধ্যে কারও কারও মৃত্যুর সংবাদে আমার নোটবুক-ক্যামেরা অবধি পৌঁছায় শোকের ঢেউ। ফটোফোল্ডার খুলে ক্ষীরমোহনকে দেখি বার বার। ইনিই শুনিয়েছিলেন জলদাস সম্প্রদায়ের লড়াইয়ের গল্প। হাত নেড়ে কথা বলছিলেন। কানে কম শুনতেন বলে প্রশ্ন করতে হতো উচ্চস্বরে। এই মানুষটা ছিলেন; কিন্তু এখন নেই। জীবনের ৯২ বসন্ত কাটিয়েছেন এই আলো বাতাসে। শেষবারের দেখায় জীবনের হিসাবের গল্পটাই তুলে ধরেছিলেন। বলছিলেন পরিবর্তনের গল্প। না, তার দৃষ্টিতে ভালো নেই জলদাস সম্প্রদায়ের মানুষেরা। কাঠের বৈঠা-চালিত নৌকায় যে মাছ তারা আগেকার দিনে পেয়েছেন; এখন ইঞ্জিন বোটেও ওঠে না সে মাছ। আগে মাছ পাওয়া যেত বেশি; দাম ছিল কম। এখন মাছ কম দাম বেশি।

মৃত্যুর অল্পদিনের ব্যবধানে; পরিবার তখনও শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি; ঠিক তখনই সাংবাদিকের ক্যামেরায় ধরা ছবি পটুরাণীকে ফিরিয়ে নেয় পেছনে। না বলা কথা হয়তো তারও আছে। বলা হবে না আর কখনো। স্মৃতি আর দীর্ঘশ্বাস বুকে নিয়েই হয়তো কাটবে বাকিটা জীবন। সঙ্গে বয়ে বেড়াবেন ক্ষীরমোহনের রেখে যাওয়া দেনার ভার। এভাবে পরিসমাপ্তি ঘটে একটি জলদাস জীবনের।

   

ব্যবসায়ীরা তথ্য পাচ্ছেন, সাংবাদিকরা পাচ্ছেন না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে কিছু একটা ভুল হচ্ছে, সে কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কেউ কেউ তথ্য পাচ্ছেন আর কেউ পাচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা তথ্য পাচ্ছেন অথচ সাংবাদিকরা পাচ্ছেন না। যদি ব্যবসায়ীদের তথ্য দেওয়া হয়, তাহলে বাজার প্রভাবিত হয় এবং দাম বাড়ে।

মঙ্গলবার (৭ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) আয়োজনে সংগঠনটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মোয়াজ্জেম হোসেন স্মারক বক্তৃতায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মানুষের প্রত্যাশার জায়গা, তথ্যের বড় স্তম্ভ। বিবিএসের তথ্য প্রকাশের আগে অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক এবং নীতিনির্ধারকরা রফতানি-আমদানিসহ আর্থিক সূচক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যের ওপরে নির্ভর ছিল। এখন কেনো তথ্যের অপঘাত করা হলো, এতে সুনাম হানি ঘটবে বাংলাদেশ ব্যাংকের।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, এটা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। অথচ সাংবাদিকদের সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তার প্রশ্ন, তথ্য প্রকাশিত হলে কি বড় ধরনের নাশকতা হবে? অর্থনৈতিক সাংবাদিকেরা কি নাশকতাকারী।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে দেবপ্রিয় বলেন, আপনারা গুরুত্বপূর্ণ মানুষ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে তথ্য–উপাত্তের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়েছে, এর মধ্য দিয়ে আপনাদের সম্মান জানানো হচ্ছে।

জনপ্রতিনিধিদেরও তথ্য দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, তারাও তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধিকার পান না। সাংবাদিকদের চেয়ে তাদের দুঃখ কম নয়। জনপ্রতিনিধিদের যেহেতু দুর্বলতা আছে, সেহেতু আমলাদের সামনে বড়গলায় কথা বলতে পারেন না তারা।

ইআরএফ সম্পাদক আবুল কাশেমের পরিচালনায় ও সংগঠনের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ।

;

সাড়ে ৩ কোটি টাকার হেরোইনসহ ২ কারবারি গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,রাজশাহী
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে ৩ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইনসহ ২ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৫)। যার আনুমাণিক বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। 

মঙ্গলবার (৭ মে) ভোর সাড়ে চারটার দিকে গোদাগাড়ী থানার সীমান্তবর্তী দুর্গম চর দিয়ার মানিকচক এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলার দিয়ার মানিকচক রাবনপাড়া এলাকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে সোলায়মান (২০) ও মৃত আ. রশিদের ছেলে মো. রুহুল আমিন (৪০)।

এদিন দুপুরে র‌্যাব-৫ এর সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।


র‌্যাব জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি, তারা মাদক ব্যবসার জন্য চেষ্টা করছেন, এমন তথ্যের ভিত্তিতে মাদক ব্যবসায়ী মো. সোলায়মান (২০) এর বসতবাড়িতে উপস্থিত হয়ে বসতবাড়ির চতুরদিক ঘেরাওকালে ২ জন ব্যক্তি বাড়ির ভিতর হতে গেট খুলে পালানোর চেষ্টাকালে ১ জন ব্যক্তিকে হাতে নাতে আটক করে এবং পরে রাতের আধারে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক ১ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে তার বাড়ির সন্নিকটে রাস্তার উপর থেকে আটক করা হয়।

এসময় সোলায়মানের বসতবাড়িতে তল্লাশী করে রান্না ঘরের ভিতর মাচাংয়ে থাকা গোবরের লাকড়ির মধ্যে অভিনব কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় উক্ত ৩ কেজি ৪০০ গ্রাম মাদকদ্রব্য হেরোইনসহ ৩ মোবাইল, ২ টি উদ্ধার করা হয়।

আসামিরা জানায়, তাদের বাড়ি সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ার সুবাদে তারা পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবত সীমান্তবর্তী অজ্ঞাত স্থান হতে অবৈধ মাদকদ্রব্য হেরোইন সংগ্রহ করে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাদকদ্রব্য বিক্রয় ও সরবরাহ করে আসছে।

উপরোক্ত ঘটনায় রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

;

ফেনীর ডাক্তার পাড়ায় বহুতল ভবনে আগুন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনী শহরের ডাক্তার পাড়ায় জহিরিয়া মসজিদের বিপরীত এলাকায় নাথ ভবন নামে একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে বহুতল ভবনটিতে লাগা আগুন ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিটের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভবনের চার তলায় একটি চিলেকোঠা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে আধঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভানো হয়। এতে বেশকিছু মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. মিজান বলেন, ভবনের সিঁড়ি অত্যন্ত সরু ছিল। সাথে পানিরও কোনো উৎস নেই আশেপাশে। ফলে আগুন নেভানোর কাজে বেগ পেতে হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে পুলিশের একটি টিম সহযোগিতা করেছে।

ফেনী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার আবদুল মজিদ বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক মিটারের শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখান বেশকিছু মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়-ক্ষতির চূড়ান্ত পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে বলে জানান তিনি।

;

বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত নতুন স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু করেছে ইসি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।

বুধবার (৭মে) দুপুরে নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বঙ্গভবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত জাতীয় পরিচয়পত্রটি তার কাছে হস্তান্তর করেন।

পরিচয়পত্র প্রদানকালে নির্বাচন কমিশনের সচিব কমিশনের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। পর্যায়ক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ খচিত নতুন স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করা হবে বলেও জানান তিনি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, এটি মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের অনন্য স্বীকৃতি। তিনি বলেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান জাতি সবসময়ই শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।

মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের কল্যাণে সম্মানী ভাতা বৃদ্ধিসহ সরকারের নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং যে কোনো প্রয়োজনে সরকার সবসময় তাদের পাশে থাকবে।

এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবগণ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

;