৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের নির্বাচনে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় ভোট গ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটে উপজেলার প্রায় সব কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি শূন্য। এরমধ্যে ফুলগাজী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৬টি বুথে ২ ঘণ্টায় কোন ভোটার ভোট দিতে আসেননি।
বুধবার (৮ মে) সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় সবকয়টি কেন্দ্রের চিত্র একই। সকাল থেকে দুপুর অব্দি সময় গড়ালেও ভোটারবিহীন বেশিরভাগ কেন্দ্র। অলস সময় পার করছেন প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসাররা।
ফুলগাজী সরকারি পাইলট হাই স্কুল কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভোটার না থাকায় ওই কেন্দ্রে ২ ঘণ্টা পার হলেও ভোট গ্রহণ শুরু করা যায়নি। কেন্দ্রে মোট ৯টি বুথের মধ্যে দুই ঘণ্টায় উত্তর শ্রীপুর গ্রামের তিনটি বুথে ২টি ভোট পড়েছে। অন্য ছয়টি বুথে একটি ভোটও পড়েনি।
উপজেলার আলী আজম স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি বেশ কম এ কেন্দ্রে। মাঝে মধ্যে দুই একজন আসছেন ভোট দিয়ে আবার চলে যাচ্ছেন। তবে উল্লেখযোগ্য হারে ভোটার উপস্থিতি চোখে পড়েনি এ কেন্দ্রে।
একই চিত্র হাজী আমির হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় ও আজমীর বেগম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। নির্ধারিত সময়ে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। ভোটারদের তেমন উপস্থিতি দেখা মেলেনি দুই কেন্দ্রের একটিতেও। যে কয়েকজন আসছেন তাদের লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন পড়ছে না। ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন সহজে।
বেলা ১২টায় উপজেলার জগতপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ৬টি বুথে সকাল ৮টা থেকেই ভোটগ্রহণ চলছে। কিন্তু ভোটারের লাইনগুলো পুরোই ফাঁকা। হিসাব মতে, ৪ ঘণ্টায় এ কেন্দ্রের ৬টি বুথে ১৭৩ জন ভোট দিয়েছেন।
জগতপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বাবুল চন্দ্র সাহা জানান, জগতপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ১২৪ জন ভোটার রয়েছে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয়টি বুথে ১৭৩ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। সকাল থেকেই ভোটারের উপস্থিতি কম দেখা যাচ্ছে। তবে দুপুরের পর ভোটার উপস্থিতি বাড়তে পারে।
ফুলগাজী সরকারি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নয়ন দেব নাথ বলেন, এ কেন্দ্রে মোট ৩ হাজার ৮৪৬ জন ভোটার রয়েছে। সকালে ভোটারের উপস্থিতি কম ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়বে আশা করি। দক্ষিণ শ্রীপুর, উত্তর শ্রীপুর ও বিজয়পুর গ্রামের ভোটাররা ৯টি বুথে ভোট দিচ্ছেন।
ভোটাররা বলছেন, এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থীর মধ্যে সহজ জয়ের পথে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার। ভোটের আগেই বিজয় নিশ্চিত থাকায় ভোট নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে নেই আগ্রহ। নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী থাকলেও তেমন কাউকেই ভোটের মাঠে দেখা যায়নি।
আলী আহমেদ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ভোট আসলে আমেজ থাকে আগ্রহ থেকে। ফুলগাজীর নির্বাচন নিয়ে প্রচার প্রচারণা থেকেই কারও তেমন আগ্রহ নেই। সাধারণ মানুষের তো নেই, সাথে প্রার্থীদেরও নেই। কারণ হেভিওয়েট কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই। যার কারণে ভোটাররা কেন্দ্রে আসছেন না।
এদিকে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন জেলাপ্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার, পুলিশ সুপার জাকির হাসানসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ফুলগাজী উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজার ৫৭১ জন। এর মধ্যে ৫৪ হাজার ৭৬০ জন পুরুষ এবং ৫০ হাজার ৯১১ জন নারী ভোটার রয়েছে। নির্বাচনে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৩২টি ভোট কেন্দ্রের ২৪৪ বুথে ভোট গ্রহণ চলছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ইসমাত জাহান লিপি বলেন, এখন পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলছে। উপজেলায় একক প্রার্থী থাকায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। আর দুইটি পদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।