ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গরুর দাম কম!

  • কান্ট্রি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমে উঠতে শুরু করেছে পশুর হাট। ঈদের দিন যতই এগিয়ে আসছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়। ঈদকে সামনে রেখে জেলায় প্রায় ১০২টি পশুর হাটে প্রতিদিনই বিক্রি হচ্ছে গরু, ছাগল ও মহিষ।

পশুর হাটগুলোতে যাতে কেউ হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে গরু ব্যবসায়ীরা মনে করেন গতবারের তুলনায় এবার দাম অনেকটাই কম। তাই অনেকটাই লোকসান গুনতে হবে। পাশাপাশি ভারতীয় গরু যেন অবৈধ পথে ঢুকতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে জানা যায়, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গরু, ছাগল ও মহিষ কিনতে হাটগুলোতে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। পছন্দসই গরু মহিষ কিনতে ক্রেতারা ঘুরছে বিভিন্ন বাজারে।

অন্যদিকে হাটগুলোতে গরু ও মহিষ আমদানিও দিন দিন বাড়ছে। হাটের জন্য নির্দিষ্ট দিনে ক্রেতাদের উপস্থিতিও বাড়ছে।

বিজ্ঞাপন

তবে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানায়, এ বছর জেলায় কোরবানির চাহিদা রয়েছে প্রায় দুই লাখ পশুর। যার বিপরীতে জেলার ১৪ হাজার ৩৭৫টি খামারে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৩৫টি গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। বাকিগুলো অন্য জেলা থেকে আমদানি করে চাহিদা পূরণ করা হয়।

এদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০২টি পশুর হাট রয়েছে। বিভিন্ন বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা কিছু কিছু গরুও দেখতে পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা মনে করেন ভারত থেকে গরু আমদানি ও অবৈধ পথে দেশের বিভিন্ন বাজারে এসব গরু ঢুকতে না পারলেই দেশীয় ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ বাজার চারতলা হাটে গরু কিনতে আসা মোবারক মিয়া বলেন, ‘বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখছি। এবার মনে হচ্ছে আগের তুলনায় দাম কিছুটা কম। বাজার শেষ পর্যন্ত মধ্যবিত্তদের হাতের নাগালেই থাকবে বলে মনে হচ্ছে। তবে ভারতীয় গরু এবারের বাজারে অনেকটাই কম।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/19/1534672508753.jpg

গরু ও মহিষ বিক্রেতা মো. জামাল মিয়া জানান, গত বছরের তুলনায় দাম অনেকটাই কমে গেছে। দাম যদি এই অবস্থায় থাকে তাহলে লোকসান গুনতে হবে। শেষ পর্যন্ত যদি ভারতীয় গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে তাহলে দেশীয় গরু ও মহিষ ব্যবসায়ীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত দাম পাবে।

এদিকে ঈদ উৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জেলা পুলিশের পক্ষ হতে ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মহাসড়কে যানজট নিরসন, গবাদি পশুর হাটে জাল টাকার লেনদেন বন্ধে মেশিন স্থাপন, রেলওয়ে স্টেশন, লঞ্চ ঘাট, বাসস্ট্যান্ডে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১০২টি হাটেই পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে অতিরিক্ত অফিসার ও ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। যাতে করে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন জানান, জেলার ১০২টি পশুর হাটে পুলিশের টিম কাজ করছে। অজ্ঞানপার্টি কিংবা যেকোনো ঝামেলা এড়াতে সাদা পোশাকেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাস্তাঘাটে গরু কিংবা মহিষের গাড়িতে যেন কোনো ঝামেলা না হয় সেজন্যও পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছে। পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে অতিরিক্ত অফিসার ও ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গণেষ চন্দ্র মণ্ডল জানান, কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণের জন্য জেলায় প্রায় ১৪ হাজার ৩৭৫ খামারে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৩৫টি গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ২ লাখ গরু ও মহিষের চাহিদা রয়েছে। বাকিগুলো অন্য জেলা থেকে আমদানি করে চাহিদা পূরণ করা হয়। এছাড়াও জেলার সবগুলো হাটের জন্য ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে। হাটগুলোতে যাতে অসুস্থ পশু বিক্রি না হয় সেদিকে তারা নজরদারি করছে।