জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেছেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কার্যক্রমে আমরা সকলের কথা শুনতে চাই। কেউ যদি লিখিত মতামত দিতে চান সেটাও দিতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে আপনারা লিখিত মতামত আমাদের পাঠাতে পারেন।
তিনি বলেন, জনপ্রশাসন সম্পর্কিত আপনাদের প্রস্তাবিত সুপারিশগুলোর উপর ভিত্তি করে আমরা সরকারের কাছে প্রতিবেদন পেশ করতে চাই। কমিশনের উদ্দেশ্য হলো সরাসরি মাঠ পর্যায় থেকে জনপ্রশাসনের অংশীজনদের মতামত নেওয়া।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার রাজবাড়ী মাঠে উপজেলা পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ না, আমরা আপনাদের কথা শোনার জন্যই এসেছি। জনপ্রশাসনের বিভিন্ন অঙ্গের সঙ্গে দৈনন্দিন ভিত্তিতে আপনাদের যোগাযোগ হয়। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সাথে মিথস্ক্রিয়ায় আপনারা সন্তুষ্ট কিনা তা আমাদের নির্ভয়ে বলবেন।
চলমান জনপ্রশাসন সংস্কার কার্যক্রমে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা সকলের কথা শুনতে চাই। কেউ যদি লিখিত মতামত দিতে চান সেটাও দিতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে আপনারা লিখিত মতামত আমাদের পাঠাতে পারেন।
জনপ্রশাসন সংস্কারে সভায় অংশগ্রহণকারীরা সমবায়ীদের মাঝে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, স্বচ্ছ টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারি খাস পুকুর লিজ দেওয়া, সরকারি চাকুরিতে রাজনৈতিক প্রভাব বন্ধ করে যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি, উপজেলায় নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন, আম সংরক্ষণাগার প্রতিষ্ঠা, নিম্ন-গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি, হাঁটবাজার ইজারায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, পরিবহন খাতে বেআইনি চাঁদা বন্ধ, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে উপযুক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন সদস্য অন্তর্ভূক্ত এবং এনটিআরসি এর মাধ্যমে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগসহ বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
সভায় উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধিরা সরকারি অফিসের বিকেন্দ্রীকরণ এবং উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার সমন্বয়, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে লটারি ব্যবস্থা বাতিল, পুঠিয়া রাজবাড়ীকে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা এবং উপজেলায় ক্রিকেট ও ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
সভায় অংশ নেন কমিশনের সদস্য এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, ডা. সৈয়দা শাহীনা সোবহান এবং মেহেদী হাসান, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এবং পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.কে.এম নূর হোসেন নির্ঝর প্রমুখ।