চোখের পানিতে ঈদ কাটবে নিখোঁজ ১০ জেলে পরিবারের
লক্ষ্মীপুর: বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ট্রলারডুবে নিখোঁজ লক্ষ্মীপুরের ১০ জেলের এখনো সন্ধান মেলেনি। এ নিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যরা চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে। ঈদ আনন্দের দিন হলেও এসব পরিবারগুলোর তা কাটবে দুঃখে। অন্যদের মুখে হাসি থাকলেও চোখের জলে ঈদ কাটবে তাদের। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৮ দিনেও জেলেদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তাও জানেন না স্বজনরা।
গত ২১ জুলাই বরগুনার নিশানবাড়ি ঘাট থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে ভারত-বাংলাদেশ নৌ-সীমানার অদূরে মাছ ধরার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারসহ তারা নিখোঁজ হন।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন- কমলনগর উপজেলার পাটারিরহাট ইউনিয়নের খায়েরহাট এলাকার আবু কালাম প্রকাশ আবু মাঝি (৫০), তার ছেলে জায়েদ হোসেন (২৫), মেয়ের জামাতা শরিফ হোসেন (২৭), অপর জেলে নুরুল ইসলাম (৬৭), মো. সেলিম (৩৬), মাইন উদ্দিন (৩২), আবুল খায়ের (৬০), মো. সালাহ উদ্দিন (৩০), মো. কালাম (৪০) ও তোরাবগঞ্জের মো. স্বপন (২৫)।
নিখোঁজ আবু মাঝির ছেলে মো. রাসেল জানান, তার বাবা আবু মাঝি বরগুনার নিশানবাড়ি ঘাটের আবুল কালামের এমবি মুহাম্মদ হোসেন-২ ট্রলারের মাঝি ছিলেন। ওই ট্রলারে কমলনগরের ১০ জনসহ ১৭ জেলে গত ১৮ জুলাই নিশানবাড়ি ঘাট থেকে সাগরে মাছ ধরতে যান। ঘাট থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বঙ্গোপসাগরের ভারত-বাংলাদেশের নৌ-সীমানার কাছাকাছি তারা জাল ফেলে মাছ ধরছিলেন। ২১ জুলাই শনিবার সকালে তারা ঝড়ের কবলে পড়েন। এরপর থেকে তার বাবাসহ ট্রলারে থাকা এলাকার ১০ জেলে ও ট্রলারের অপর সাত জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়েও ট্রলারটির সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ট্রলার মালিক আবুল কালাম জানান, ঝড়ের কবলে পড়ে তার ট্রলারসহ এলাকার ৮টি ট্রলার ডুবে ৬৫ জন জেলে নিখোঁজ হন। স্থানীয় ট্রলার মালিক সমিতির লোকজনসহ কয়েকটি ট্রলার নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে তারা সাগরে নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান করেছেন। ওই সময় তিন জেলের লাশ ও তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও তার ট্রলারের ১৭ জেলেসহ অন্যদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তার ট্রলারসহ ১৭ জেলে নিখোঁজের ব্যাপারে বরগুনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি কোস্টগার্ডকেও জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আবুল কালাম আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে নিখোঁজ জেলেরা আর বেঁচে নেই। তবে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং ভারত ও বাংলাদেশের কোনো ট্রলারের জেলেরা নিখোঁজ কোনো জেলেকে উদ্ধার করেছে কিনা ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম নুরুল আমিন রাজু জানান, সাগরে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ জেলেদের এখনো সন্ধান মেলেনি। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বরাদ্দ থেকে তাদের পরিবারে এক মণ করে চাল দেয়া হয়েছে।