করোনার নমুনা সংগ্রাহক সংকট নিরসনে মাশরাফির উদ্যোগ
নড়াইলে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহে সংগ্রহকারী স্বল্পতায় সৃষ্ট সংকটের সমাধানে এগিয়ে এলেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা।
মাশরাফির প্রতিষ্ঠিত নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় জেলার তিন উপজেলায় ২ জন করে মোট ৬ জন টেকনিশিয়ানকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ এবং ল্যাবে পাঠানোর কাজে গতিশীলতা আনতে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন তার নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সটি ড্রাইভারসহ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রোববার (১৪ জুন) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন এবং বেসরকারি ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাব মালিক সমিতির এক যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক আনজুমান আরার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম, সিভিল সার্জন ডা. মোঃ আবদুল মোমেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার, কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজল মল্লিক, নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম অনিক, বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজি মালিক সমিতির সভাপতি বিদ্যুৎ কুমার সান্যাল প্রমুখ। এসময় নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা ভিডিও কলে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।
তিনি করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহে বেসরকারি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও টেকনিশিয়ানদের এগিয়ে আসার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান এবং ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তাদের আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এছাড়া করোনা আক্রান্ত এলাকা লকডাউন করে তাদের ঠিকমতো চিকিৎসা, খোঁজ-খবর এবং প্রয়োজনে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের পাশাপাশি কয়েকজন হৃদয়বান মানুষ এই কার্যক্রমে এগিয়ে আসার কথা জানান। যেমন, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উক্ত অ্যাম্বুলেন্সগুলোর ১ মাসের জ্বালানি খরচ প্রদানের কথা জানান।
জানা গেছে, জেলায় করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহে অভিজ্ঞ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) ৮টি পদের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ৪ জন। এরমধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে ছুটিতে রয়েছেন। কালিয়া উপজেলায় ৩টি পদের সবকটি শূন্য। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি পদের মধ্যে একটিই শূন্য। আর লোহাগড়া উপজেলায় দু’টি পদের মধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে ছুটিতে রয়েছেন। ফলে গোটা জেলায় কয়েকদিন ধরে প্রয়োজন অনুযায়ী নমুনা সংগ্রহ করা যাচ্ছিল না। এ সংকট মেটাতে মাশরাফি তা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত নড়াইলে সর্বমোট ৮৯২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ জন এবং মারা গিয়েছেন ২ জন।
এসময় উপস্থিত নড়াইল বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের প্রিয় সাংসদের আহবানে সাড়া দিয়ে নিজে থেকেই আমরা এগিয়ে এসেছি এবং আমরা দক্ষ টেকনিশিয়ান সরবরাহ করে এই কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে কাজ করবো।
নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস আলোচনায় বলেন, আমাদের সোনার ছেলে মাশরাফি আছে, নড়াইলের মানুষদের সকল সংকটে সে পাশে আছে, আমাদের সবার উচিত তার কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নিতে যার যার সামর্থ্য ও দায়িত্ব অনুসারে এগিয়ে আসা।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা জানান, করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন ও সার্বিক কার্যক্রমে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন নড়াইলের গর্ব মাশরাফি বিন মর্তুজা এমপি মহোদয়। করোনাকালে সকল কাজে পাশে থাকায় মাশরাফিকে ধন্যবাদ জানান জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা।