রংপুরে বিনোদন স্পট জুড়ে ভিড়



ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুর:ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছে রংপুর। নগরীর বিনোদন স্পটগুলো এখন শিশু-কিশোরদের দখলে। পিছিয়ে নেই তরুণ-তরুণীসহ অভিভাবকরাও। সব বসয়ী মানুষের উপচে পড়া ভিড়ে বিনোদন স্পট জুড়ে বইছে নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপনের বার্তা। 

ঈদের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকেই রংপুর চিড়িয়াখানার সামনে দেখা যায় লম্বা লাইন। সবাই দাঁড়িয়ে টিকিটের অপেক্ষায়। চিত্তবিনোদন পিপাসু মানুষের দীর্ঘ এই লাইনে বার্তা২৪.কম এর সঙ্গে কথা হয় মাসুমা আকতার শাম্মির।

নগরীর শাপলা চত্বর এলাকার বাসিন্দা শাম্মি জানান, একমাত্র মেয়ে আদিলা মল্লিককে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। চিড়িয়াখানার ভেতরের শিশুপার্কে যাবেন। সেখানে মেয়েকে নিয়ে কিছুটা সময় কাটাবেন তিনি।

চিড়িয়াখানার ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসা আরেক দর্শনার্থী সোহেল রশীদের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ঈদকে ঘিরে এখানে পশু-পাখির নতুন কোনো সংযোজন নেই। তবে কর্তৃপক্ষ প্রত্যেকটি পশু-পাখি ও গাছগাছালির পরিচিতি তুলে ধরে যে কাজটি করেছেন তা অনেক সুন্দর ও তথ্যমূলক। সবুজে ঘেরা নিরিবিলি মনোরম পরিবেশ রয়েছে এর ভেতরে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/23/1535022483974.jpg

চিড়িয়াখানার মতো দীর্ঘ লাইন নেই রংপুরের তাজহাট জমিদার বাড়িতে। অনিন্দ্যসুন্দর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এই জমিদার বাড়িটি। এখানকার সিঁড়ি শ্বেতপাথরের, যা ইতালি থেকে আনা হয়েছিল। সিঁড়িটি নিচতলা থেকে দোতলা পর্যন্ত উঠে গেছে। চোখ জুড়ানো শৈল্পিক কারুকার্য রয়েছে জমিদার বাড়িকে ঘিরে। বিশাল আয়তনে ঘেরা সবুজ শ্যামল ফুলে ফুলে ভরা এই জমিদার বাড়িটি এরশাদ সরকারের আমলে সুপ্রিম কোর্ট হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে এটি রংপুর জাদুঘর। এখানেও রয়েছে বিনোদন পিপাসু মানুষের ভিড়।


নগরীর নিসবেতগঞ্জ ঘাঘট নদের তীর ঘেঁষে রয়েছে সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত ‘প্রয়াস’ বিনোদন পার্ক। পাখির কিচিরমিচির শব্দের খেলাও কানে বাজবে। ইচ্ছে হলে পানিতে ভেসে বেড়াতে পারেন পালতোলা বা ডিঙি নৌকায়। এই পার্কেও টিকিটের জন্য ভিড় রয়েছে। এর ভেতরে রয়েছে কৃত্রিমভাবে তৈরি গোরিলা, বাঘ, ভাল্লুক, জিরাপ, ঘড়িয়াল, জেব্রা, কুমির, সাপ, বানর, হরিণ, ব্যাঙ, পাখিসহ গ্রামীণ ঐহিত্যের কলস নিয়ে নারী, রূপকথার পরি, শিশুদের ডরিমন।

এই পার্কে কথা হয় রুজিনা জামান রোজের সঙ্গে। বার্তা২৪.কমকে তিনি জানান, সুন্দরবনের আদলে সাজানো ছোট পরিসরে সবুজে ঘেরা গাছগাছির সমারোহ বিমোহিত করার মতো। সমুদ্র সৈকত, বালুর চর ছাড়াও এই বিনোদন কেন্দ্রে শিশুদের খেলাধুলার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়াস পার্কটি অনেক সুন্দর। নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ ভালো। তবে পার্কের দোকানগুলোতে খাবারের দাম বেশি।

বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রের কোল ঘেষে রয়েছে চিকলি বিল। আর এই বিলের ধারে গড়ে তোলা হয়েছে চিকলি সিটি বিনোদন পার্ক। সেখানেও বিভিন্ন রাইডে চড়ে লেকের সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন বিনোদন পিপাসুরা। স্পিড বোর্ডে করে বিলের বুকে দুরন্তপনায় মেতে উঠেছে ছোট-বড় সব বসয়ী মানুষ। এখানে আনন্দে মেতে উঠতে কোনো মানা নেই।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/23/1535022511176.jpg

রংপুর মহানগর থেকে একটু দূরে ভিন্ন ধরনের বিনোদন স্পট ‘ভিন্নজগত’। এই স্পটের মতো অন্য কোনো বিনোদন স্পটে এতো বেশি ভিড় নেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে ভিড় লেগেই থাকে। ভিন্নজগতের ভেতরে আরেকটি ভিন্নজগত রয়েছে, এটি সবাইকে কাছে টানে বারবার। যা না দেখলে বিশ্বাসই করতে পারবেন না। সবুজের সমারোহে ঘেরা এ বিনোদন স্পটটি সব সময়ই মানুষের ভিড়ে মুখরিত থাকে। তবে ঈদ এলে এই মুখরিত কলোরব আরও র্দীঘ হয়। এখানে রয়েছে সৌরজগৎকে জানতে দেশের প্রথম প্ল্যানেটরিয়াম। আজব গুহা ছাড়াও রয়েছে তাজমহল, মস্কোর ঘণ্টা, আইফেল টাওয়ার, চীনের প্রাচীর। চলছে ট্রেন, উড়তে চাইছে উড়োজাহাজ।

এখানে শিশুদের বিনোদনেরও কমতি নেই। দিনভর হইহুল্লোড়, মাতামাতি। ক্লান্তি আসবে না সবুজ প্রকৃতির বুক চিরে বয়ে যাওয়া ছোট ছোট খাল-বিলের পথ ধরে চললে।

এছাড়াও রংপুর মহানগরীর কালেক্টরেট সুরভি উদ্যানে রয়েছে শিশু-কিশোর ও উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের ভিড়। ঈদ আনন্দে মেতে ওঠা চিত্তবিনোদন প্রিয় মানুষের আনাগোনা রয়েছে শতবছরের ইতিহাসের সাক্ষী প্রাচীন বিদ্যাপীঠ কারমাইকেল কলেজে। এই কলেজে দিগন্তজোড়া খোলা মাঠে ঘুরে বেড়ালে মনটা জুড়িয়ে যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরও আগে প্রতিষ্ঠিত কারমাইকেল কলেজে রয়েছে শতবর্ষী বিরল কাইজেলিয়া বৃক্ষটি। এর পাশেই রয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে ঈদকে ঘিরে আড্ডা প্রিয়দের ভিড় রয়েছে।

রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে কয়লা ও লোহার খনি সমৃদ্ধ পীরগঞ্জের বিনোদন স্পট আনন্দ নগরসহ কবি হেয়াত মাহমুদের সমাধি, মনোমুগ্ধকর বিশাল বিল ও সাড়ে তিনশ বছরের একটি প্রাচীন বৃক্ষরাজা, নীলাম্বরের জলমহাল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার বাড়িতেও আনন্দ প্রত্যাশী মানুষের ভিড় রয়েছে।

 

 

   

উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল

উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে কয়রা, খুলনার নিকট অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ বৃষ্টিপাত বাড়িয়ে পরবর্তী ৩ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে কিছুটা দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিবে।

সোমবার (২৭ মে) ভোরে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আব্দুল কালাম মল্লিকের দেওয়া আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১৮ -এ এসব তথ্য জানানো হয়।

তিনি বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০কিলোমিটার. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝড়ো হাওয়া সহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি / ২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিমি / ২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

;

রিমালের প্রভাবে রাজধানীতে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি

  ঘূর্ণিঝড় রিমাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রাজধানী ঢাকায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

সোমবার (২৭ মে) ভোর থেকে এ অবস্থা শুরু হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর কর্মজীবীরা। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কাজে বের হয়েছেন অনেকে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন উপকূলীয় স্থান থেকে ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে রোববার বিকেল ও সন্ধ্যা থেকে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ভোলা, পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল রোববার রাতে উপকূলে আঘাত হেনেছে। রাত আটটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।

চট্টগ্রামে রিমালের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কক্সবাজারে বঙ্গোপসাগরে জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে ২১ টি গ্রাম।

নোয়াখালীর হাতিয়ার বেশ কিছু এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। খুলনার দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় উপজেলা দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল।

এই ঘূর্ণিজড়ের প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের অনেক জেলায় গুড়ি গুড়ি থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে।

;

২ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল ছাড়বে রিমাল, জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

  ঘূর্ণিঝড় রিমাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উপকূল অতিক্রমরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল ক্রমশ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ- খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম অব্যাহত রেখেছে। ঘূর্ণিঝড়টি পরবর্তী ৩ থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।

রোববার (২৬ মে) দিবাগত রাতে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আব্দুল কালাম মল্লিকের দেওয়া আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১৭ -এ এসব তথ্য জানানো হয়।

তিনি বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০কিলোমিটার. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝড়ো হাওয়া সহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি / ২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিমি / ২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

;

রিমালের তাণ্ডবে তছনছ উপকূল

  ঘূর্ণিঝড় রিমাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্ণ শক্তি নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ে ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট তছনচ হয়েছে, ভেঙে পড়েছে গাছ-পালা। প্রাণহানি হয়েছে বেশ কয়েকজনের।

মোংলা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, কুয়াকাটা ও খেপুপাড়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে রিমাল। শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নে রাতভর বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ায় ভেঙে গেছে ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা। জেলার অন্য এলাকাতেও ঝোড়ো হাওয়া বইছে। বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে গেছে।

রিমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কলাপাড়া, খেপুপাড়া ও কুয়াকাটায়। এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিষখালি-সন্ধ্যা, পায়রা, আন্ধারমানিক, গলাচিপা ও তেতুলিয়া নদীর উপচে পড়া পানিতে বরগুনা ও পটুয়াখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বরগুনায় তলিয়ে গেছে ২৭ গ্রাম, ভেঙে গেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। আমতলী ও তালতলী উপজেলার ২৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে উপজেলা নির্বাহী অফিস।

বলেশ্বর নদীর পানিতে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

বাগেরহাটের বলেশ্বর,পানগুছি-খাসিয়াখালি এবং দড়াটানা নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে। এতে শরণখোলা ও মোড়লগঞ্জের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত। প্লাবিত হয়েছে গোটা সুন্দরবন।

করমজলসহ বনের উঁচু এলাকাগুলোও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। সদর হাসপাতালের কোন একসাইড ভেঙে ভিতরে পানি ঢুকেছে। বাগেরহাটে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।

মোংলার শ্যালা নদী ও পশুর নদীর পানি বিপদসীমার অনেক উপরে। রাস্তা ভেদ করে জয়মুনি এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে।

চট্টগ্রামে রিমালের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কক্সবাজারে বঙ্গোপসাগরে জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে ২১ টি গ্রাম।

নোয়াখালীর হাতিয়ার বেশ কিছু এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ।

খুলনার দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় উপজেলা দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল।

এই ঘূর্ণিজড়ের প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের অনেক জেলায় গুড়ি গুড়ি থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে।

টানা ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাণ্ডব চালাবে ঘূর্ণিঝড়টি। এরপর দুর্বল হয়ে স্থলভাগে উঠবে। সকাল নাগাদ এটি দুর্বল হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক।

রবিবার (২৬ মে) দিবাগত রাত ২টার পর ঘূর্ণিঝড় রেমালের সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

আবুল কালাম রিমালের প্রভাবে সোমবার (২৭ মে) ও মঙ্গলবারও (২৮ মে) সারাদেশেই থেমে থেমে বৃষ্টি হবে। সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে।’

;