যমুনায় বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি



সাহিদুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
যমুনায় বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ছবি: বার্তা২৪.কম

যমুনায় বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বেড়ে শুরু হয়েছে ভাঙন। এরই মধ্যে নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে যমুনা তীরবর্তী দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানি ইউনিয়নের খোলাবাড়ী এবং ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া ও বেলগাছা ইউনিয়নের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও বিভিন্ন স্থাপনা। পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরিভাবে বালুর ব্যাগ ফেললেও ভাঙন থামানো যাচ্ছে না।

ভাঙন আতঙ্কে এরই মধ্যে সহস্রাধিক পরিবার বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। গত এক মাসে দেওয়ানগঞ্জে ভাঙনে শতাধিক বসতবাড়ি, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও খোলাবাড়ী বাজারের সিংহভাগ যমুনার গর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে সদ্য নির্মিত বাহাদুরাবাদঘাট নৌথানা। তাই ভাঙন রোধে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টিতে যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট ভাঙন রোধে পাউবো’র আপৎকালীন তহবিল থেকে জেলার তিনটি স্প্যানের জায়গা নির্ধারণ করে প্রতিটিতে বালুর (জিও) ব্যাগ ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে মোতাবেক গত দুই সপ্তাহ ধরে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

জানা গেছে, চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের খোলাবাড়ী এলাকায় যমুনা নদীর ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক মাসের ভাঙনে খোলাবাড়ী গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি ও খোলাবাড়ী বাজারের সিংহভাগ নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে খোলাবাড়ী গ্রামের প্রায় দুইশ’ পরিবার। বাপ-দাদার পৈতৃক ভিটাবাড়ি হারিয়ে বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে এসব পরিবার। হুমকির মুখে পড়েছে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাহাদুরাবাদঘাট নৌথানা।

অপরদিকে ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের কাজলা ও কাটমা গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি ও বেলগাছা ইউনিয়নের মন্নিয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রায় ২০-২৫টি বসতঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সব কিছু হারিয়ে তারা এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) সকালে খোলাবাড়ী এলাকায় গেলে নদী ভাঙনের ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, প্রায় এক বছর ধরে যমুনার ভাঙন চলছে। এরই মধ্যে তিনটি গ্রাম, দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও খোলাবাড়ী বাজারের সিংহভাগ নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন ঠেকাতে যে বালির বস্তা ফেলছে, তা কোনো কাজে আসছে না। খোলাবাড়ী ও আশপাশের এলাকা রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি তাদের।

চিকাজানি ইউনিয়নের খোলাবাড়ী এলাকার আমির হোসেন (৭৫) বার্তা২৪কমকে বলেন, আমার বয়সে ১৫ বার বাড়ি ভাঙছি। প্রতি বছর ভাঙার কারণে আমাদের জমাজমি, স্কুল-মাদরাসা সব নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন শক্তিশালী বাঁধ দেওয়া না হলে বালুর বস্তা ফেলে কোনো কাজ হবে না।

একই এলাকার শফিকুল মিয়া নামে আরেক বৃদ্ধ বলেন, নদীর স্রোত অনেক শক্তিশালী, তাই এখানে বালুর বস্তা ফেললেও তা কোনো কাজে আসছে না। বালুর বস্তা ফেলার কয়েকদিন পরেই ভাঙন শুরু হয়। যেভাবে নদী ভাঙছে, তাতে মনে হয় এবার নৌথানা রক্ষা পাবে না।

যমুনায় বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ছবি: বার্তা২৪.কম

স্থানীয় মো. আব্বাস আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, নদী গর্ভে আমার ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমি নিঃস্ব। কোথায় যাবো, কার কাছে হাত পাতব, কিছুই বুঝে আসছে না। আসলেই আমাদের সবার কপাল পোড়া।

ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের কাজলা গ্রামের ফজলু মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, যা ছিল সব নদীতে চলে গেছে, আমরা এখন বউ পোলাপান নিয়ে কোথায় থাকব। কেউ আমাগর খোঁজখবরও নেয় না। আমরা কি মানুষ না?

বালুর বস্তা ফেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোলার কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপক বিদ্যুৎ কুমার দাস বার্তা২৪.কমকে বলেন, ভাঙন ঠেকাতে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। তবে কাজের পরিধি বৃদ্ধি না করলে এ বস্তা কোনো কাজে আসবে না। কাজের পরিধি বৃদ্ধি করলে নৌথানা ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাইদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে খোলাবাড়ী, কাজলা এবং কাটমা এলাকার ১৪০ মিটার এলাকায় ১২ হাজারেরও বেশি জিও ব্যাগ ফেলা (ডাম্পিং) হচ্ছে। এছাড়া খোলাবাড়ী থেকে ফুটানী বাজার পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার জুড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প দাখিল করা হবে। প্রকল্পটি পাস হলেই স্থায়ী বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

   

প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী

প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, শুধু নগরকেন্দ্রিক উন্নয়নে আবদ্ধ না থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি ও তাদের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনকে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যখন ঋণ দিবে, তাকে তো কিছুর উপর ভিত্তি করে ঋণ দিতে হবে। সেটা যে অংকের ঋণ হোক। ২০২৪ সালে এসে শুনতে হয় আমি ব্যবসার হিসাব রাখতে পারছি না। কত টাকার মালামাল বিক্রি করছি, কত টাকার কিনছি তার হিসাব রাখতে পারছি না। যে জন্য ব্যাংকে যেতে পারছি না। খাতা বা মোবাইলে বিভিন্ন এ্যাপের মাধ্যমে হিসাব রাখা যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে উদ্যোক্তারা অনলাইন ও ইউটিউব থেকে ব্যবসার অভিজ্ঞতা নিতে পারে।

সোমবার (২০ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসএমই মেলায় আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর বাজেটে একশ' কোটি টাকা রাখা হয় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য, সেটা ব্যবহার হয় না। উদ্যোক্তারা যদি আরও তৎপর হন, তাহলে তাদের ব্যবসার অর্থায়নের যথেষ্ট সুযোগ আছে। আমরা স্মার্ট ফাইন্যান্সিং করছি। পাঁচ বছর পর ব্যবসা কোথায় নিবেন, সে বিষয়ে পরিকল্পনা থাকতে হবে। সরকারের দেওয়া সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপান্তরকারী নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার শিল্পনীতি-২০১৬ ও এসএমই নীতিমালা-২০১৯ প্রণয়ন করেছে। এসডিজি-২০৩০, রূপকল্প-২০৪১, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন নীতিমালা ও কৌশলপত্রে এসএমই খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মো: মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার এবং অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুলেখা রানী বসু।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী।

সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে সিটি ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ,এসবিকে টেক ভেঞ্চারের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির, ব্রাক ব্যাংকের হেড অব এসএমই মো: জাকিরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সেমিনার শেষে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এসএমই মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন ও উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলেন।

;

চট্টগ্রামের তিন উপজেলায় ভোট কাল, নিরাপত্তায় আড়াই হাজার পুলিশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বিতীয় ধাপে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও রাউজানে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও রাউজানে সবকটি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হওয়ায় বাকি তিনটি উপজেলায় আগামীকাল মঙ্গলবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সার্বিক নিরাপত্তা দিতে আড়াই হাজারেরও বেশি পুলিশ কাজ করবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।

মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই তিন উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলবে। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে ১৯ মে মধ্যরাতে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন। নির্বাচনে তিন উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ২০ হাজার ৭৩৪জন। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৪৩টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা দুই হাজার ৯৯৬টি। ভোটগ্রহণে ৯ হাজার ৬৭৪ জন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সব উপজেলায় ২ প্লাটুন করে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও পুলিশ, র‌্যাব এবং আনসার সদস্যরা রয়েছেন।

এদিকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্য দিয়েই ভোট গ্রহণ করা হবে জানিয়েছে পুলিশ। শান্তিপূর্ণ এবং সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। তিন উপজেলার ৫ থানায় মোতায়েন করা হয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য।

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রত্যেকটিতে উপজেলায় ৪ জন করে সিনিয়র অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া মোট আড়াই হাজার পুলিশ মাঠে রয়েছে। রোববার মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। তারা আজকে কেন্দ্রে চলে গেছে। এর বাইরেও আমরা থানায় রিজার্ভ রেখেছি। কোনো সমস্যা হলে তারা সাথে সাথে সেই কেন্দ্রে যাবে।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র প্রসঙ্গে তিনি জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এখন আমরা বলি না। তিন উপজেলায় কিছু কেন্দ্রকে আমরা বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি। সেগুলোতে সেভাবে ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে এখনো।

ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে ২ হাজার ৯৪৫ জন। এর মধ্যে আনসার ২ হাজার ৩৬ জন, ব্যাটালিয়ন আনসার থাকবে ১০ জন, পুলিশ সদস্য থাকবে (ফটিকছড়ি ও ভূজপুরে ৭৬৯, র‌্যাব থাকবে ২০ জন এবং বিজিবি সদস্য থাকবে ১১০ জন। এছাড়া এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন ২৬ জন।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হাটহাজারীর সবগুলো কেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ৭২৯জন আনসার মোতায়েন থাকবে। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে ৩ জন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। পুরো উপজেলায় দায়িত্ব থাকবেন ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তিন উপজেলায় মোট ৬০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনকালে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও অন্যান্য অপরাধ রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে থাকবেন। এর মধ্যে ফটিকছড়িতে ২৬ জন, হাটহাজারীতে ১৭ ও রাঙ্গুনিয়ায় ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করবেন।

এদিকে সোমবার সকালে নিজ নিজ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নির্বাচনী সামগ্রী কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তবে দুর্গম কেন্দ্রগুলো ছাড়া সব ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হবে ভোটের দিন সকালে।

;

ঘরের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ, পকেটে চিরকুট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সাভারের আশুলিয়ার একটি টিনশেড ভাড়া ঘরের বিছানায় পড়ে ছিল স্ত্রীর আর ঘরের সিলিংয়ে ঝুলছিল স্বামীর নিথর দেহ। একই ঘরে স্বামী স্ত্রীর এমন মৃত্যুতে বিস্মিত এলাকাবাসী। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, স্ত্রীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে নিজেও গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে স্বামী। নিহত স্বামীর শার্টের পকেটে একটি চিরকুট পেয়েছে পুলিশ। সেই চিরকুটে স্ত্রীর বড় বোনকে দায়ী করে নিজের কষ্টের কথা লিখেছেন তিনি।

সোমবার (২০ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিরকুটের কথা নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এর আগে বিকালে আশুলিয়ার নরসিংহপুর ইউসুফ মার্কেট এলাকার রেজাউল করিমের মালিকানাধীন বাড়ির একটি কক্ষ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতরা হলেন, পটুয়াখালী সদর থানার লোহালিয়া ইউনিয়নের হাকিম আলী হাওলাদারের ছেলে রুহুল আমিন হাওলাদার এবং বরিশালের আমতলী থানার সোবহান মৃধার মেয়ে মনি ওরফে মনিরা।

বুক পকেটে রাখা চিরকুটে রুহুল আমিন লিখেছেন, ‘‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আমি মো রুহুল আমিন, থানা পটুয়াখালী ও জেলা পটুয়াখালী। অতি কষ্টের সাথে জানাই- আমতলি নিবাসী ও বাওনা গ্রাম মো. ছোবাহান মৃধার ছোট মেয়ে মনিরার সাথে আমার বিবাহ হয়। বিবাহের বয়স ৭ মাস। বিয়ের রাত থেকে মনিরার ফোনে ফোন আসতে থাকে। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জানতে পারি ডিসার সুয়েটারে মনিরা ও তার বড় বোন ফাহিমা চাকুরি অবস্থায় বিভিন্ন ছেলের সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয় দুই বোন। আমি বাঁধা দিলে তার বোন ফাহিমা বাসায় ডেকে নিয়ে আমাকে ভয় দেখায় যে এই নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তোকে মেরে ফেলব। ফাহিমার স্বামীও জেনে ফাহিমাকে ছেড়ে দিয়েছে। তারা অনৈতিক কাজ করে টাকা কামাই করে, চাকুরি তাদের শো। এবং আমাকে ভয় দেখিয়ে ইউসুফ মার্কেট কাপড়ের দোকান দিতে বাধ্য করায় সেখানে আমার ছয় লক্ষ টাকা নষ্ট করে। আর আমাকে ভয় দেখিয়ে দুই বোন অনৈতিক কাজ করে পরে আমি জানতে পারি মনিরার আরও ২ টা বিয়ে হয়েছে, সেখান থেকে মনিরার ছাড়াছাড়ি হয়। তা আমার কাছে গোপন রাখে, পরে আমি জানতে পারি। ফাহিমার কাছে আমি ২,৫০,০০০ টাকা ধার হিসেবে পাওনা আছি। টাকা চাইতে গেলে আমাকে বাসায় ডেকে নিয়ে অপমান করে এবং তার বোনকে আটকিয়ে রাখে। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ফাহিমা, ফাহিমা।

ইতি, মৃত্যু পথের পথিক। আমাকে সবাই ক্ষমা করে দিবেন।’’


প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘরের দরজার সামনে গ্রিলের আরেকটি গেট ছিল। ঘরের দরজা খোলা থাকলেও গ্রিলে তালা লাগানো ছিল। বাইরে থেকে ডেকেও কোনো সাড়া না পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে গ্রিলের তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে পুলিশ। পরে সেই ঘর থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বাড়ির মালিক রেহানা আক্তার জানান, সকাল থেকে তাদের কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পরে দেখি বিছানায় মনির মরদেহ পড়ে আছে এবং সিলিং এর সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছে রুহুল আমিন।

আশুলিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে স্ত্রীকে হত্যা করেই আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। স্বামীর বুক পকেট থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।

;

পতেঙ্গা সি-বিচ এলাকাকে গড়ে তোলা হবে বিশ্বমানের পর্যটন জোন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের অন্যতম দর্শনীয় স্থান পঙ্গেতা সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যকে পর্যটকদের কাছে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। নগরীর ফৌজদারহাট ডিসি পার্ক থেকে পতেঙ্গা সি-বিচ পর্যন্ত পুরো এলাকাটিকে বিশ্বমানের পর্যটন জোন হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি।

সোমবার (২০ মে) সকালে ১১টার দিকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকা পরিদর্শনে যান বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সংশ্লিষ্টরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল মালেক। তারা সৈকত এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির এসব পরিকল্পনার কথা জানান।

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান বলেন, পতেঙ্গা সি-বিচকে দৃষ্টিনন্দন করতে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি কর্তৃক নেয়া হয়েছে মহাপরিকল্পনা। পর্যটকদের সমুদ্রের সৌন্দর্য আকৃষ্ট করতে বিচের দোকানগুলোকে সী সাইড থেকে সরিয়ে কান্ট্রি সাইডে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি দেয়া নির্দিষ্ট মাপ অনুযায়ী স্থানান্তর করাসহ পতেঙ্গাকে পর্যটক বান্ধব জোন হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

তিনি বলেন বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক ডিসি পার্ক থেকে পতেঙ্গা সি-বিচ পর্যন্ত পুরো এলাকাটিকে বিশ্বমানের পর্যটন জোন হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের সুবিধা সম্বলিত অবকাঠামো নির্মাণ, সৈকতের দোকানসমূহ সুশৃঙ্খল ও পুনর্বাসন করা, টয়লেট, শৌচাগার, চেন্জিং রুম ও কাফেটেরিয়া নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ, ফটোগ্রাফারসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারীদের সংখ্যা নির্দিষ্টকরণ, সাময়িক পরিচয়পত্র প্রদান, সেবা মূল্য নির্ধারণ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য টুরিস্ট পুলিশের অফিস নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিচ সংশ্লিষ্ট এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনয়ন করা হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এটা পুনবার্সন না, স্থানান্তর। প্রাথমিক পর্যায়ে সৈকতের মুখে যারা ব্যবসা করছে তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে রাস্তার অন্যপাশে স্থানান্তর করা হবে। সৈকতের মুখে এমন ব্যবসায়ী আছেন ৩২ জন। তবে পর্যায়ক্রমে সব ব্যবসায়ীকে সৈকতের আশপাশ থেকে তুলে রাস্তার অন্যপাশে স্থানান্তর করা হবে।

জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল মালেক বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে পর্যটকরা আসে। কিন্তু অবৈধ দোকানপাটের কারণে বিচের সৌন্দর্য দেখা যায় না। তাই বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমুদ্র পাড় থেকে দোকানগুলোকে তুলে কান্ট্রি সাইডে স্থানান্তর করতে হবে। প্রতিটি দোকানের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাপ ও ডিজাইন দিয়ে দোকান নির্মাণ করা। বিচের সামনে যারা বিভিন্ন দোকান করে ব্যবসা করছে, তাদের তালিকা করছি আমরা। সেই তালিকা অনুযায়ী দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে।

;