ছয় মাসে নৌ দুর্ঘটনায় ১৫৩ জন নিহত, আহত ৮৪
অভ্যন্তরীণ নৌ-পথে লঞ্চ দুর্ঘটনা কমলেও অন্যান্য নৌ দুর্ঘটনা থেমে নেই। যাত্রীবাহী ট্রলার বা ছোট নৌযানসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী নৌযান দুর্ঘটনা সারা বছরই ঘটছে। চলতি বছরের গত ছয় মাসেই যাত্রী-পণ্যবাহী মিলিয়ে মোট ১০৬টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৫৩ জন নিহত ও ৮৪ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে নিখোঁজ হয়েছেন আরও অন্তত ২২ জন।
শনিবার (৪ জুলাই) বেসরকারি সংগঠন গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশ (জিসিবি) এবং নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির যৌথ জরিপ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
২৪টি জাতীয় ও ১০টি আঞ্চলিক দৈনিক এবং ৯টি অনলাইন নিউজপোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য-উপাত্ত সংগৃহিত হয়েছে বলে সংগঠন দুটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের জুন মাসে দেশে সবচেয়ে বেশি ২৬টি নৌ দুর্ঘটনায় ৫৯ জন নিহত, ১৩ জন আহত ও ৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এই মাসে উল্লেখযোগ্য দুর্ঘটনা হচ্ছে বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবি। গত ২৯ জুন সকালে এমভি ময়ূর-২ এর ধাক্কায় যাত্রীবোঝাই ছোট লঞ্চ এমএল মর্নিং বার্ড নিমজ্জিত হয়ে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। সেখান থেকে এ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৩৪টি মরদেহ।
এছাড়া জানুয়ারিতে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত ও ১৮ জন আহত হয়, ফেব্রুয়ারিতে ১২টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত, ১৭ জন আহত ও ২ জন নিখোঁজ, মার্চে ২২টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত, ৩৫ জন আহত ও ৪ জন নিখোঁজ, এপ্রিলে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও ১ জন নিখোঁজ এবং মে মাসে ১৬টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত, একজন আহত ও ১০ জন নিখোঁজ হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত) নৌ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৭৬ ও ৭১, যা চলতি বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক কম।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, লঞ্চ দুর্ঘটনা সহনীয় মাত্রায় নেমে আসলেও বছরজুড়ে সারা দেশেই বিচ্ছিন্নভাবে যাত্রী ও পণ্যবাহী ছোট নৌযান দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে লঞ্চের মতো একসঙ্গে অনেক যাত্রী মারা না গেলেও প্রায় প্রতিটি ঘটনায়ই এক বা একাধিক মানুষ নিহত হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, নৌচলাচল ব্যবস্থার ওপর সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর প্রয়োজনীয় নজরদারির অভাব, কঠোর তদারকির ক্ষেত্রে ওইসব সংস্থার জনবল সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতা, বিপুল সংখ্যক অবৈধ নৌযান চলাচল, দক্ষ মাস্টার ও ড্রাইভারের স্বল্পতা, দুর্বল আইন ও বিধিমালা এবং বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়ার কারণেই নৌ দুর্ঘটনা সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে আনা যাচ্ছে না।