রংপুরে সাড়ে ৩ লাখ টাকার নকল সুরক্ষা সামগ্রী উদ্ধার
দেশের অন্যান্য জেলার মতো রংপুরেও করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর চাহিদা বেড়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজারে নকল সামগ্রী বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ বাড়িতেই কারখানায় গোপনে তৈরি করছে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ফ্লোর ক্লিনার, টাইলস পুডিং, ভিক্সলসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী।
বাজারে ওই সব নকল পণ্য বিক্রি হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি দামে। অভিজাত ব্র্যান্ডের মোড়কে বাজারজাত করা মানহীন এসব নকল সুরক্ষা সামগ্রীর বিক্রি বন্ধ করাসহ অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে প্রশাসন।
বুধবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় নগরীতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে রংপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযানে নগরীর মধ্য বাবুখাঁর একটি বাড়ি ও বেতপট্টি মোড়ের দুটি দোকান হতে সাড়ে ৩ লাখ টাকার বিপুল পরিমাণ নকল পণ্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জড়িত তিন ব্যক্তিকে ৩৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়।
বার্তা২৪.কমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি এন্ড মিডিয়া) উত্তম প্রসাদ পাঠক।
তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর মধ্য বাবুখাঁ এলাকার মৃত আব্দুর করিম মিয়ার ছেলে মোস্তাফিজার রহমানের (৪০) বসত বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এসময় সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ নকল স্যানিটাইজার, ভিক্সল টাইলস ক্লিনার, ভিক্সল টাইলস ক্লিনার তৈরির ক্যামিকেল, পাউডার, খালি বোতল, ড্রাম ও বোতলের গায়ে ব্যবহারের জন্য মজুদ করা স্টিকারসহ সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। এসব নকল সামগ্রীর অনুমানিক মূল্য ২ লাখ টাকা। মোস্তাফিজার রহমান নগরীর গোমস্তাপাড়ার আবু হোজাইফা ডিস্ট্রিবিউশন এর সত্ত্বাধিকারী।
এছাড়াও একই দিন সন্ধ্যায় সাড়ে সাতটায় নগরীর বেতপট্টি মোড়ের ধিরেন্দ্র নাথ সরকারের প্রতিষ্ঠান বেনকো হার্ডওয়ার এবং জাহিদ হোসেনের প্রতিষ্ঠান কালার কালেকশান হার্ডওয়ারে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল ভিক্সল উদ্ধার করা হয়।
পরে অসাধু ওই তিন ব্যবসায়ীকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন জাহানের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করাসহ অনাদায়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। একই সাথে উদ্ধার করা নকল পণ্য সামগ্রী ধ্বংস করা হয়।
এসময় মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) উত্তম প্রসাদ পাঠক, সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আলতাফ হোসেন, ইন্সপেক্টর রাজেশ কুমার, ইন্সপেক্টর ফিরোজ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে একই দিন রাতে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সন্ধ্যা ৭টার পরে দোকান খোলা রাখায় রংপুর চিড়িয়াখানা মোড়ের ক্যাপ্টেন ব্যাকোলজিকে ১০ হাজার টাকা এবং সিটি বাজারের সামনে ভ্যানে ফল বিক্রয় করায় এক ব্যবসায়ীকে ২শ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ জুলাই) নগরীর খাসবাগ থেকে বিপুল পরিমাণ নকল স্যাভলন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হারপিক উদ্ধার করা হয়। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবহৃত সকল নকল ও অবৈধ পণ্য বিক্রি ও সংরক্ষণের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।