করোনা ও ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় ইউএসএআইডি’র অর্থ সহায়তা
অতিমারি করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা করার লক্ষ্যে আমেরিকান সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি উপকূলীয় দুটি জেলা খুলনা ও সাতক্ষীরার চারটি উপজেলায় (দাকোপ, কয়রা, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর) প্রায় ২ কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা বিতরণ করেছে। নবযাত্রা প্রকল্পের মাধ্যমে এ টাকা বিতরণ করেছে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ও উইনরক ইন্টারন্যাশনাল।
খুলনা জেলার দাকোপ ও কয়রা এবং সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার ১২ হাজার ৮৬৯টি দরিদ্র ও অতিদরিদ্র পরিবারকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এককালীন ৩০০০ তিন হাজার টাকা করে মোট তিন কোটি ছিয়াশি লাখ সাত হাজার টাকা বিতরণ করবে প্রকল্পটি, বাকি টাকা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিতরণ সম্পন্ন হবে।
করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্যাভ্যাস নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নগদ টাকার পাশাপাশি স্যানিটেশন ও হাইজিন কিট বিতরণ করেছে প্রকল্পটি। এর আওতায় প্রতিটি পরিবারে ১০টি সাবান, ১ কেজি ডিটারজেন্ট পাউডার, ঢাকনা ও ট্যাপসহ ০১টি বালতি।
সেই হিসাবে এ পর্যন্ত ১০ হাজার পরিবারে এক লাখ সাবান, ১০ হাজার কেজি ডিটারজেন্ট পাউডার এবং ঢাকনা ও ট্যাপসহ ১০ হাজার বালতি বিতরণ করা হয়েছে। জনসাধারণের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঝুঁকি হ্রাসের মাধ্যমে মহামারি প্রতিরোধে এই উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
করোনার সময়েই গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পান উপকূলে আঘাত হানে। কয়রা উপজেলার মহারাজপুর, দক্ষিণ বেদকাশি, উত্তর বেদকাশি ও কয়রা সদর ইউনিয়নের ১৫০০টি পরিবার এবং শ্যামনগর উপজেলার কাশিমারি ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ১০০০টি পরিবারের মধ্যে পরিবার প্রতি ৩ হাজার টাকা করে মোট ৭৫ লাখ টাকাসহ গ্লাভস্, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার এবং ট্যাপসহ বালতি প্রদানের লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে প্রকল্পটি; যা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিতরণ সম্পন্ন হবে।
করোনায় সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে প্রকল্পটি বিভিন্ন সামাজিক ও আচরণগত পরিবর্তন বিষয়ক বার্তা প্রচার করছে। ইতিমধ্যে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ৭ হাজার ২৩০ জন গর্ভবতী ও প্রসূতি মা এবং ৪৪৮টি অতি-দরিদ্র পরিবারকে বিকাশের মাধ্যমে নগদ অর্থ প্রদান নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বিভিন্ন তথ্য ও নারী নির্যাতন রোধে ৬৩ হাজার ২০০টি লিফলেট এবং পোস্টার বিতরণ করেছে। ৪টি উপজেলায় ১০৯টি বিলবোডের্র মাধ্যমে কোভিড-১৯ বিষয়ে সচেতনতামূলক বার্তা প্রদর্শনসহ ৪৪ হাজার ৬০০ পরিবারকে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে সচেতনতামূলক বার্তা প্রেরণ করছে। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষভাবে সল্প শিক্ষিত, নারী, বয়ষ্ক ও শিশুদেরকে লক্ষ্য করে গণসচেতনতামূলক কার্যক্রমে ৪০টি ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা কমিটি ও ৪০৭ জন যুব স্বেচ্ছাসেবককে যুক্ত করা হয়েছে, যারা মেগা ফোন ব্যবহার করে গ্রামে গ্রামে সচেতনতামুলক বার্তা প্রচার করছে।