পানির তোড়ে ব্রিজের সংযোগ সড়কে ধস, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ব্রিজের সংযোগ সড়কের দুইপাশ ভেঙে গেছে/ছবি: বার্তা২৪.কম

ব্রিজের সংযোগ সড়কের দুইপাশ ভেঙে গেছে/ছবি: বার্তা২৪.কম

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীতে ফেঁপে ফুঁলে উঠেছে বন্যার পানি। হু হু করে পানি বাড়া-কমায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। ঝুঁকিতে আছে তিস্তার ডানতীর রক্ষা বাঁধটি (মূলবাঁধ)। নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে আছে হাজারও মানুষ।

কাকিনার রুদ্রেশ্বর গ্রামে একটি ব্রিজের সংযোগ সড়কের দুইপাশ ভেঙে গেছে। এতে করে গঙ্গাচড়ার লক্ষীটারী ও কোলকোন্দ ইউনিয়নের প্রায় ত্রিশ হাজার পরিবার দুর্ভোগে পড়েছে। বানভাসি এসব মানুষদের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বের ৮ হাজার পরিবারের সাথে নতুন করে আরও প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে পাকা সড়কও।

বিজ্ঞাপন
ত্রিশ হাজার পরিবার দুর্ভোগে পড়েছে

জানা গেছে, গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতু সংলগ্ন লালমনিরহাটের কাকিনা ইউনিয়নে রোববার (১২ জুলাই) রাতে পানির তীব্র স্রোতে লালমনিরহাটের কাকিনায় রুদ্রেশ্বর গ্রামের একটি ব্রিজের সংযোগ সড়কের দুইপাশ ভেঙে গেছে। এতে করে গঙ্গাচড়ার লক্ষীটারী ইউনিয়নের বাগেরহাট, ইচলী, শংকরদহ এবং কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা ও চিলাখাল গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। ওইসব গ্রামে ত্রাণ পৌঁছে দিতেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

 দুই হাজার ৫'শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে

এদিকে লক্ষীটারী ইউনিয়নের চর ইচলী, শংকরদহ, বাগেরহাট, জয়রাম ওঝা, চর চল্লিশাসাল গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল, মটুকপুর, বিনবিনার চরের প্রায় দুই হাজার ৫'শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও গজঘন্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, জয়দেব, রাজবল্লভের কিছু অংশ নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ওই ইউনিয়নের ১ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মর্ণেয়া ইউনিয়নের চর মর্ণেয়া, নীলারপারসহ আরও দুটি গ্রামের প্রায় এলাকার ২ হাজার পরিবার, নোহালী ইউনিয়নের চর বাগডোহরা, চর নোহালী, বৈরাতি’র প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানির তীব্র স্রোত

গেল কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে প্লাবিত নিম্নাঞ্চলে ফসলি খেত, ঘর-বাড়ি ডুবে গেছে। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে উচুঁ স্থানে গবাদি পশু-পাখিসহ নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করছে। বানভাসি এসব মানুষদের মধ্যে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

আশ্রয়ের খোঁজে পশু-পাখি

লক্ষীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল হাদী জানান, রোববার রাতে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আগেই দুর্গম চর থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়ায় ক্ষতির পরিমাণ একটু কম হয়েছে। তবে রুদ্রেশ্বর গ্রামের ব্রিজের সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়াতে লক্ষাটারী ও কোলকোন্দ ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে

এদিকে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান বলেন, রোববার রাতে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে তা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিস্তার পানি এখন কমছে। তবে পানি আবারও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।