বরিশালে চার মাসে ৫৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায়
জাতীয়
বরিশালে গত চারমাসে ৪৩২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে ৫৩ লাখ ৯৮ হাজার ২৮৫ টাকা জরিমানা করেছেন জেলা প্রশাসন। অভিযানে ৮৯৪ জন ব্যক্তি ও ৭৬৬টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এ জরিমানা আদায় করা হয়।
এছাড়াও এসব অভিযানে বিভিন্ন মেয়াদে ৬২ জন ব্যক্তিকে কারাদণ্ড এবং ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অভিযোগে সিলগালা করে দেন জেলা প্রশাসনের নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট।
বিজ্ঞাপন
বরিশাল জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে গেল ১০ মার্চ থেকে শুরু করে চলতি মাসের ১৫ জুলাই রাত পর্যন্ত এ জরিমানার টাকা আদায়, কারাদণ্ড ও সিলগালা করা হয়।
এসব তথ্য বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জানান, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার পর থেকে হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার নিয়ন্ত্রণ ও মাস্ক, স্যানিটাইজার মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৫৩ লাখ ৯৮ হাজার ২৮৫ টাকা জরিমানা আদায় করে জেলা প্রশাসন।
এরআগে শহীদ আবু সাঈদের পোস্ট মর্টেমের রিপোর্ট বিকৃতির অপচেষ্টাকারী ও কলেজে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজার রহমানকে অপসারণের দাবি আন্দোলনে নামেন বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক-ছাত্র ও কর্মচারীরা।
রমেকের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজার রহমানকে ওএসডি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যুক্ত করা হয়েছে। বিতর্কিত অধ্যক্ষকে অপসারণ করায় আন্দোলনের কর্মসূচি বাতিল করেছেন আন্দোলনকারীরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম মণ্ডল।
উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর ডা. মাহফুজার রহমানকে উপাধ্যক্ষ পদ থেকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়ার পরদিন থেকে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী, ছাত্র-জনতা। চলমান বিক্ষোভে আজ দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি শেষে তাদের দাবি মানা না হলে আগামীকাল থেকে কমপ্লিট শাটডাউনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। অধ্যক্ষকে অপসারণ করায় আন্দোলনের কর্মসূচি বাতিল করেছেন তারা।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন এর বিরুদ্ধে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পী দত্ত রনি এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
চাঁদপুর পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, কচুয়া উত্তর বাজার ও পলাশপুর এলাকায় অভিযানে তিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় তিনটি প্রতিষ্ঠানে থেকে ৫শ ৮১ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, সহকারী পরিচালক মো. হান্নান, পরিদর্শক শরমিতা আহমেদ লিয়াসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।
উত্তরের জেলা বগুড়ায় প্রধান ফসল ধান। ধান থেকে উৎপন্ন চাল স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পর দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আর এ কারণেই বগুড়া জেলায় গড়ে উঠেছিল দুই হাজারের বেশি হাস্কিং চাল কল। তবে আধুনিকায়নের এই যুগে অল্প সংখ্যক অটো রাইস মিলের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রাইস মিলগুলো। লোকসানের মুখে ইতিমধ্যে এক হাজারের বেশি হাস্কিং মিল বন্ধ হয়ে গেছে।
এক সময় ধান সিদ্ধ, শুকানো এবং চাল তৈরির কাজে সারা বছর জুড়ে হাস্কিং চাল কলগুলোতে কর্মব্যস্ততা ছিল। নারী ও পুরুষ শ্রমিক দিনরাত কাজ করতো চাল কলগুলোতে। সেই কর্মব্যস্ত মিলগুলোর অধিকাংশই এখন জীর্ণদশা। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় বয়লারে মরীচিকা পড়েছে। ধান শুকানোর চাতালে জন্মেছে ঘাসসহ বিভিন্ন আগাছা।
আদমদীঘি উপজেলার হাস্কিং চালকল মালিক জয়নাল আবেদিন জানান, অটো রাইস মিলগুলো দিনে তিন হাজার মেট্রিকটন ধান থেকে চাল উৎপন্ন করতে পারে। সেখানে হাস্কিং চাল কলগুলোতে ১০ টনের বেশি ধান থেকে চাল উৎপন্ন করা যায় না। উৎপাদন ক্ষমতার এই বিশাল ব্যবধানের কারণে তাল মেলাতে না পেরে ও মূলধন হারিয়ে একের পর এক মিল ও চাতাল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালোড়া অটোমেটিক রাইসমিল মালিক সুভাষ প্রসাদ কানু বলেন, ‘সরকারি সহযোগিতা পেলে আকার অনুযায়ী ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় করলেই হাস্কিং মিলে চাল উৎপন্নের পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদিত চালের মানও উন্নত হবে। একই সঙ্গে ধানের তুষ থেকে রাইস ব্রান অয়েল ও ফিড তৈরির করা যাবে। দেশের বন্ধ হয়ে যাওয়া হাস্কিং মিলগুলো চালু করলে ফিড আর ভোজ্য তেলের আমদানি কমে যাবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারি গুদামে ধান-চালের দাম বাজারে চেয়ে কম হওয়া, অটোরাইস মিলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা ও চড়া সুদে ব্যাংক ঋণসহ নানাকারণে হাস্কিং বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বগুড়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি এটিএম আমিনুল হক বলেন, গত চার বছরে দুই হাজার ৩৫ টির মধ্যে এক হাজারের বেশি হাস্কিং মিল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মিল মালিকসহ প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়েছেন।
হাস্কিং চালকলগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে অটোরাইস মিলগুলোকে দায়ী করে তিনি বলেন, অটো রাইস মিলগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা বেশি। এ কারণে তারা সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করে থাকে চাহিদা মত। কিন্তু হাস্কিং মিলগুলো চাল সরবরাহ করতে কেজি প্রতি লেকসান হয় ৫ থেকে ৬ টাকা। আবার সরকারি খাদ্য গুদামে চাহিদামতো চাল সরবরাহ না করলে লাইসেন্স বাতিল করা হয়। এসব কারণে প্রতি বছরই হাস্কিং মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বগুড়ার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, হাস্কিং মিলগুলো অটোমেটিক মিলের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। এ কারণেই মূলত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হাস্কিং মিলগুলো চালু রাখার জন্য চালকল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা দিলে তাদের প্রস্তাবনা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হবে।
ঢাকা জেলার সাভারে অবৈধ দুই ইটভাটা ও আটটি ব্যাটারি কারখানায় অভিযানে ৪ জনকে বিভিন্ন শাস্তি দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়নের বলিয়ারপুর এলাকায় সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বকর সরকারের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে পরিবেশের ক্ষতি করে অবৈধভাবে এ ইটভাটা ও ব্যাটারি তৈরির কারখানা পরিচালনা করা হচ্ছিল। সকালে এতে অভিযান চালানো হয়।
এ সময় ব্যাটারি তৈরির কারখানা সংশ্লিষ্ট ৩ জন ও ইটভাটা সংশ্লিষ্ট ১ জনকে আর্থিক দণ্ডসহ বিভিন্ন শাস্তি দেওয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- আমিনবাজারের হোম ব্রিকসের অফিস সহকারী মুক্তার হোসেন (৫৫) ও ম্যানেজার জাকির হোসেন (৫০)। দুজনকেই ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩ এর ৫ ধারা অনুযায়ী ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের সাজা দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে ব্যাটারি কারখানার ম্যানেজার আউয়াল হোসেনকে (৪০) ৩ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর কারখানার হেল্পার মো. সুজন (৩৮) ও মুক্তার হোসেনকে (৩৫) এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আবু বকর সরকার বলেন, সাভারের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ সীসা কারখানা, ব্যাটারি কারখানা ও অবৈধ ইটভাটা রয়েছে এমন খবরে এখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অবৈধ সীসা কারখানায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে একজনকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও দুইজনকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনা আইন ২০১৩ এর আলোকে একজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, অনাদায়ে অর্থদণ্ড দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে সাভারবাসীকে জানাতে চাই, যেসব অবৈধ ইটভাটা রয়েছে, তাদের ভাটা বন্ধ করতে আহ্বান জানাই। আর অবৈধ সীসা, টায়ার কারখানাগুলো পরিবেশের জন্য ভয়ঙ্কর। তাদেরও এসব কারখানা বন্ধের আহ্বান জানাই। তা না হলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
অভিযানে সাভারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাসেল ইসলাম নূর ও আমিনবাজার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বাসিত সাত্তারসহ উপজেলা প্রশাসন ও সাভার মডেল থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।