হাসপাতালের প্রতি রোগীদের আস্থা ফিরেয়ে আনুন: কাদের
ছবি: সংগৃহীত
রোগীর অভাবে অনেক কোভিড-১৯ জন্য নির্ধারিত হাসপাতাল তাদের কার্যক্রম বন্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। সেই খবরের সূত্র ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'হাসপাতাল বন্ধ রাখা সমাধান নয়। রোগীদের আস্থা ফিরিয়ে আনুন, হাসপাতালমুখী করুন জনগণকে'।
শনিবার (১৮ জুলাই) সরকারি বাসভবন থেকে ব্রিফিংকালে তিনি একথা বলেন। এ সময় তিনি বিশেষজ্ঞগণের মতামত তুলে ধরে বলেন, সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। নমুনা পরীক্ষা আক্রান্তের সংখ্যা একদিন কমলে আবার পরদিন বাড়ছে, বিশেষজ্ঞগণ বলছেন আসন্ন ঈদে সমাগম এড়ানো না গেলে সংক্রমণ উচ্চ মাত্রায় পৌঁছে যাবে।
তিনি বলেন, সরকার গণপরিবহন চলাচল অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ যাত্রায় প্রত্যেককে নিজের সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সর্তক থাকতে হবে। সামাজিক দূরত্ব মানার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। মাস্ক পরিধান করতে হবে। জীবনকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য জীবিকা অর্জনে চলাচল যেন জীবনহানির ঝুঁকিতে না পরে সেদিকে সর্বোচ্চ খেয়ালে রাখতে হবে। ঈদে গণপরিবহন বন্ধের সুপারিশ ছিল, কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে গণস্বার্থে গণপরিবহন চলাচলের সুযোগ দিয়েছে। পরিবহন মালিকরা এ সুযোগের সৎ ব্যবহার করবেন এটাই আশা করি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি মহল সরকারের বিরুদ্ধে বিষোধগার করাকে দেশ ও জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনের ব্রত হিসেবে বেছে নিয়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের চলমান অভিযানকে তারা সমর্থন সহযোগিতা না দিয়ে বরং অন্ধ সমালোচনায় মেতে উঠেছে। সরকারি নাকি পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে অনিয়মকারীদের, প্রশ্রয় দিচ্ছে দুর্নীতিবাজদের?
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনাদের সময়তো দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছিল। ছিল দুর্নীতিবাজদের অভয়ারণ্য। তখন কি এ ধরনের একটি সাহসী উদ্যোগ আপনার নিতে পেরেছিলেন? শাস্তি কি দিতে পেরেছিলেন আপন দলের অপকর্মকারীদের? পেরেছিলেন দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে কিছু করতে? পারেননি। গ্রেনেড হামলার বিচার করতে গিয়ে জজ মিয়া নাটক সাজায় যারা, চলমান অভিযানকে নাটক বলে অভিহিত করা তাদের মুখে মানায় না। যারা নাটক সাজায়, নাটক করে যাচ্ছেন অব্যাহতভাবে তারা সবকিছুতেই নাটক দেখতে পাবে এটাই স্বাভাবিক।
তিনি আরো বলেন, চলমান অভিযান অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা স্বপ্রণোদিত হয়ে নিজ উদ্যোগে এসব অভিযান পরিচালনা করছেন। কোনো দল বা মহল থেকে এসব অনিয়মের কথা আগে তুলে ধরা হয়নি। সরকারই উৎঘাটন করেছে এবং কঠোরভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এ থেকে বোঝা যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা আন্তরিক এবং কঠোর অবস্থানে। শেখ হাসিনার কাছে কোনো অনিয়ম দুর্নীতি প্রশ্রয় পাবে না। দুর্নীতিবাজদের দুর্বৃত্তদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। গুটি কয় মানুষের লোভ, প্রতারণা ,চাতুর্যের কাছে জনসাধারণের আশা আকাঙ্ক্ষা জিম্মি হতে পারে না। জনগণের স্বপ্ন সাধনা পরিশ্রম কর্মহীন হতে পারে না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার এদেশের জন মানুষের প্রত্যাশাকে প্রাধান্য দেয়। তাই যারা জনস্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যক্তি স্বার্থ সুরক্ষার অপপ্রয়াস চালাবে তারা যেই হোক, যে ক্যাম্পেই অবস্থান করুক তাদের রক্ষা নেই। জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহি করতেই হবে।
সরকার ও শেখ হাসিনার অর্জন গুটি কয়েক ব্যক্তির লোভের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হতে দিতে পারি না। রোগীর অভাবে কোনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে গণমাধ্যমে রিপোর্ট আসছে সংক্রমণে বর্তমানে রোগীর সংখ্যা অনেক তাছাড়া সাধারণ রোগী তো রয়েছেই এ প্রেক্ষাপটে হাসপাতাল বন্ধ রাখা সমাধান নয়। আমি বলব রোগীদের আস্থা ফিরিয়ে আনুন হাসপাতালমুখী করুন জনগণকে। অনেক বেসরকারি হাসপাতালের ওপর রোগীদের নানান কারণে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। তাই আশা করি আস্থা ফিরিয়ে আনবেন। এই ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।
দলীয় নেতাকর্মীদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, বন্যার্তদের পাশে মানবিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসুন। ঢাকা বসে যারা বক্তৃতা বিবৃতি দিচ্ছেন তাদের প্রতি অনুরোধ করবো বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ান।
