যমুনায় পানি বৃদ্ধি, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

  • খন্দকার সুজন হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পানি বেড়েছে যমুনা নদীর

পানি বেড়েছে যমুনা নদীর

গেল ২৪ ঘণ্টায় ৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা পয়েন্টের যমুনা নদীতে। এতে করে বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার পানি। যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে মানিকগঞ্জে।

জেলার অন্যান্য নদ-নদীগুলোর মধ্যে পদ্মা, কালিগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইচ্ছামতি নদীও এখন পানিতে টই-টুম্বুর। বন্যার পানিতে প্রতিনিয়তই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব এলাকার বহু রাস্তাঘাট।

বিজ্ঞাপন

জেলার সিংগাইর উপজেলা ব্যতীত বাকি ছয় উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। বন্যার পানি ও ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার দৌলতপুর, শিবালয় এবং হরিরামপুর উপজেলা।

হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ চত্বর, মানিকগঞ্জ জেলখানা এবং ঢাকা আরিচা মহাসড়কের উথুলী সংযোগ সড়কে প্রবেশ করেছে বন্যার পানি। এছাড়াও মানিকগঞ্জ সদর, ঘিওর এবং সাটুরিয়া উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা বন্যার পানিতে ভরপুর।

বিজ্ঞাপন

এরই মধ্যে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার অধিকাংশ কৃষকের ফসলি জমি। ঘরবাড়ি এবং কৃষি জমি তলিয়ে যাওয়ায় গৃহপালিত পশু নিয়ে বিপাকে রয়েছে তারা। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব রয়েছে বন্যা কবলিত এলাকায়।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত ত্রাণ বিতরণ করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। এখনো ত্রাণ থেকে বঞ্চিত রয়েছে অধিকাংশ মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে রয়েছে চরাঞ্চলের বাসিন্দারা।

পানিতে ডুবে আছে ঘর-বাড়ি

সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের রুহুলী গ্রামের এক কৃষক জানান, বন্যার পানিতে তার গ্রামের অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে ওই গ্রামে এখনো কেউ সরকারি কোনো সহায়তা পায়নি। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব রয়েছে।

দৌলতপুর উপজেলার সমেতপুর গ্রামের জাহাঙ্গির আলম জানান, সরকার ত্রাণ দিচ্ছে বলে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নিকট বহুবার গিয়েছেন। নামও লিখিয়েছেন। তবে এখনো ত্রাণ জুটেনি তার ভাগ্যে।

মানিকগঞ্জ পানি বিজ্ঞান শাখার পানির স্তর পরিমাপক মো. ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘যমুনা নদীতে ৯ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার পানি হচ্ছে স্বাভাবিক। যমুনায় এখন ১০ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার পানি রয়েছে। অর্থাৎ বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার পানি।’

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, ‘জেলার ২৩৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সমন্বয় করে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’

শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্যের জন্য নগদ অর্থ বরাদ্দ রয়েছে বলেও জানান তিনি।