দুশ্চিন্তায় যশোরের মৌসুমি গরুর খামারিরা
ভারত থেকে দেশে কোরবানির গরু আসা বন্ধ হয় ২০১৬ সালে। এতে করে পশু পালনে আগ্রহী হন দেশীয় খামারিরা। বাড়ি বাড়ি গড়ে ওঠে ছোট বড় মৌসুমি গরু ছাগলের খামার।
এমনই একজন খামারি যশোর সদরের বাহাদুরপুর গ্রামের জহুরুল ইসলাম। কাজ করেন যশোর শহরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। প্রতিবছর ঈদকে সামনে রেখে ৬ থেকে ৭টি গরু পালন করেন তিনি। বিগত বছরগুলোতে লাভের মুখ দেখলেও করোনার কারণে এ বছর গরু বিক্রি করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
তিনি জানান, এ বছর গরু মোটাতাজা করতে অন্যান্য বছরের চেয়ে খরচ বেশি হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে অনেকেই এবার কোরবানি দিচ্ছে না। ফলে কোরবানির পশুর হাটে গরু কম বিক্রি হচ্ছে। আর এবার গরু বিক্রি করতে না পারলে লোকসানের মুখ দেখতে হবে তাকে।
জহুরুলের মতো কোরবানিকে সামনে রেখে মৌসুমি পশু পালন করে ক্রেতা সংকটে চরম হতাশায় ভুগছেন অন্য খামারিরাও।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঈদের ৫-৬ মাস আগে থেকেই প্রাকৃতিক উপায়ে সবুজ ঘাস, খড়, ভুসি ও ভিটামিন খাইয়ে গরু মোটাতাজা করেন মৌসুমি খামারিরা। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে অনেকেই কোরবানি দিতে পারছেন না। ফলে কোরবানির গরুর চাহিদা খুব বেশি হবে না।
এবার ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য যশোরে ৬০ হাজার ৫০০টি পশুর চাহিদা রয়েছে। আর জেলার ১০ হাজার ২৮২টি খামারে কোরবানির জন্য ৬৭ হাজার ৯৭৫টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এই হিসাব মতে জেলায় সাড়ে ৭ হাজার কোরবানির পশু বেশি রয়েছে।
মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া এলাকার খামারি ফজলুর হক জানান, অন্য বছরগুলোতে কোরবানির আগেই বরিশাল, নোয়াখালী, ভোলাসহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে গবাদিপশুর পাইকাররা যশোরের খামারিদের কাছে এসে চুক্তি করে টাকা বায়না দিয়ে যেতেন। কিন্তু এবার তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, ব্যাংক ঋণ নিয়ে গরু লালন পালন করেন তিনি। এতে তার অনেক টাকা ব্যয় হয়।
যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শফিউল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে জানান, এবার কোরবানির জন্য জেলায় সাড়ে ৬০ হাজার গবাদি পশুর চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। খামারিদের তথ্য অনুযায়ী ৬৭ হাজারের বেশি গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে। খামারিরা যাতে হাটবাজারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গরু-ছাগল বিক্রি করতে পারেন এবং হয়রানির শিকার না হন, সেদিকে নজর রাখা হবে।