ঢাকা ওআইসি যুব রাজধানীর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা ওআইসি যুব রাজধানীর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা ওআইসি যুব রাজধানীর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা ওআইসি যুব রাজধানীর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২৭ জুলাই) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ‘ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন ওআইসির মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন, আজারবাইজানের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী আজাদ রহিমভ, গাম্বিয়ার আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রী ডাউডা এ. জালো, আইসিওয়াইএফ এর প্রেসিডেন্ট তাহা আইয়ান ও অন্যান্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দ।

বিজ্ঞাপন

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তারুণ্যের প্রতীক উল্লেখ করে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তারুণ্য, উদ্দীপনা ও এক অনিঃশেষ প্রেরণার নাম। তিনি তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমৃদ্ধ, আত্মনির্ভরশীল ও উন্নত স্বনির্ভর জাতি গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তারুণ্যের প্রতি জাতির পিতার এই আত্মবিশ্বাসের প্রতি সম্মান জানিয়ে আয়োজকদের বঙ্গবন্ধু গ্লোবাল ইয়ুথ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড প্রদানের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা মায়ানমার হতে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত অসহায় প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদান করেছি। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় এই বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে তাদের নিজ মাতৃভূমিতে নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে কাজ করছি।

বিজ্ঞাপন

কোভিড ১৯ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড ১৯ এর কারণে বিশ্ব অর্থনীতির আমূল-পরিবর্তন ঘটছে। অভিবাসনসহ বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। এখন সময় এসেছে মানব সমাজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদার করা। সরকার কোভিড ১৯ মোকাবিলায় সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।

এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী যুব সমাজকে তাদের নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা ও চেতনার মধ্যে দিয়ে বৈষম্যহীন সহনশীল ও টেকসই সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মাণের উদাত্ত আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে ওআইসি যুব রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় ওআইসিকে ধন্যবাদ জানান।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল ও যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. আখতার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

স্বাগত বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এ বছর ওআইসি যুব রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে আন্তর্জাতিক এ স্বীকৃতি জাতি হিসেবে আমাদের গর্বিত করেছে। ঢাকাকে ওআইসি যুব রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়ায় আমি ওআইসি মহাসচিব ও আইসিওয়াইএফ এর প্রেসিডেন্টসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বে আমাদের যুবসমাজের অমিত সম্ভাবনা তুলে ধরা হবে। আমরা বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড এর সুবিধা ভোগ করছি। আমাদের মেধাবী ও দক্ষ যুব শক্তি রয়েছে। এছাড়াও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ সরকার যে মানবিক সহায়তা করছে সেটিও বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপন করা হবে।

মুসলিম বিশ্বের তরুণদের দৃঢ় ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করার প্রয়াসে নানামুখী কৃতিত্বে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে ইসলামিক কো-অপারেশন ইয়ুথ ফোরাম (আইসিওয়াইএফ) ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর ওআইসি সদস্যভুক্ত দেশসমূহকে ‘ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল’ এর স্বীকৃতি প্রদান করে আসছে। বিগত ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া তীব্র প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপ সফলতার সাথে সম্পন্ন করে ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গৌরবজনক এই স্বীকৃতি অর্জন করে।

‘ঢাকা-ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০’-এর প্রতিপাদ্য ‘Resilience for Parity & Prosperity’ যা এই সংকটকালীন সময়ের কথা বিবেচনা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অব্যবহিত পর ২৭ ও ২৮ জুলাই দুইদিনব্যাপী ‘রেজিলিয়েন্ট ইয়ুথ লিডারশিপ সামিট’ নামে একটি যুবসম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত সম্মেলনে অংশ নিতে ৭৫টি দেশের ১২০০ জনের বেশি যুবক আবেদন করেন। সংশ্লিষ্ট কমিটি এদের মধ্যে থেকে ২৫০ জনকে বাছাই করেছে। এদের মধ্যে ১০০ জন বাংলাদেশি ও ১৫০ জন ওআইসিভুক্ত দেশসহ অন্যান্য দেশের। এ বাছাইকালে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী লিঙ্গ সমতার ভারসাম্য রক্ষা করা হয়েছে।

সম্মেলনের অন্যতম অংশ হিসেবে থাকবে কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে যুবসমাজ এবং প্রযুক্তি-এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়ে দেশ ও বিদেশের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ এর সমন্বয়ে সেশন।