রংপুরের মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল থেকেই অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম দেখা গেছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে ধারণা করছেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।
সরজমিনে দেখা গেছে, মিঠাপুকুর উপজেলার বালার হাট ইউনিয়নের খোর্দ্দ শেরপুড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ১১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১২৭টি। এখানে মোট ভোটার ২৭০৪ জন।
শেরুডাঙ্গ স্কুল এন্ড কলেজ, মাঝগ্রাম দারুল উলুম দাখিল মাদরাসা, আরিফপুড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমড়া পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নেই বললেই চলে।
রংপুর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ্ আল মোতাহসিম জানান, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি, বিজিবি, আনসার ও ডিবি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জ উপজেলায় কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতিই বড় চ্যালেঞ্জ। প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ হওয়ায় বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই উপজেলায় মোট ভোটার ৪ লাখ ৪০ হাজার ৩৩৫। চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কামরুজ্জামান কামরু, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোতাহার হোসেন মন্ডল মাওলা ও সাবেক এমপি শাহ সোলায়মান আলমের ছেলে সাদমান ইশরাক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অপরদিকে পীরগঞ্জ উপজেলায চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলায় এবার মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৭২ জন।
তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে দু’জন আওয়ামী লীগের ও একজন জাতীয় পার্টির। তারা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য নুর মোহাম্মদ মণ্ডল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোকাররম হোসেন চৌধুরী জাহাঙ্গীর এবং জাতীয় পার্টির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম যাদু মিয়া।
তবে দুই উপজেলায় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রার্থী হওয়ায় দলের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। কাকে ভোট দেবেন সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন নেতাকর্মীরা। তবে প্রার্থীরা বলছেন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা তাদের পক্ষে কাজ করানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।
কৃষি অঞ্চল হওয়ায় অনেক ভোটারই ব্যস্ত ধান কাটতে বলে দাবি করেছে মিঠাপুকুর উপজেলা চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মোতাহার হোসেন মন্ডল মাওলা ও কামরুজ্জামান কামরু। তবে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে কাজ করছেন বলে তারা জানান।
এদিকে পীরগঞ্জের প্রার্থী নূর মোহাম্মদ মন্ডল বলেন, ১০ বছর সংসদ সদস্য এবং ১০ বছর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি মানুষের সেবা করার। আশাবাদী জনগণ আমাকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী করবে।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হাসিবুল হাসান রুমি জানান, দুই উপজেলায় রয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার বাহিনী নিয়োজিত করার পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং র্যাব ও বিজিবির টহল রয়েছে।