তেঁতুল তত্ত্ব কাজে লাগালে ধর্ষণ কমত: এমপি বাবলু

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নারীবাদীরা নারী স্বাধীনতার কথা বলে তাদেরকে উন্মুক্ত করে চলছে বলে দাবি করেছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। তিনি বলেন, আল্লামা তেঁতুল হুজুরের তেঁতুল থিংকটা যদি কাজে লাগানো যেত তাহলে ধর্ষণকারীরা ধর্ষণ থেকে পিছপা হতো এবং ধর্ষণে নিরুৎসাহিত হত। তাদের ভেতর একটা ধর্মীয় অনুভূতি আসত। এখানে কি দেখতে পারছি নারীবাদীরা নারী স্বাধীনতার কথা বলে তাকে উন্মুক্ত করে চলছে। যার কারণে ধর্ষকরা ধর্ষণে আরো উৎসাহিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০২০’ পাসের আগে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাব তুলে তিনি কথাগুলো বলেন।

বিজ্ঞাপন

রেজাউল করিম বাবলু বলেন, এই আইন প্রয়োগের আগে আমাদের ধর্ষণের কাজে উদ্বুদ্ধ না হয় তাদের ভেতর যেন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে, একটা মানবতা যেন তাদের ভেতর তৈরি হয় এমন একটা পরিবেশ বানাতে হবে। তাহলে এতো কঠিন আইনের প্রয়োগও হবে না। একটা ফাঁসি কার্যকর করে একজন নাগরিককে কমানোর প্রয়োজন হবে না। আইনের চেয়ে ধর্ষকের সংখ্যা যেন না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেহেতু এটি গুরুত্বপূর্ণ সেনসিটিভ আইন তা আর একটু জনমত দরকার ছিল।

সংসদে রিপোর্ট উত্থাপনের তথ্য তুলে ধরে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ মতামতের জন্য সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, জাতীয় মহিলা পরিষদের চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব এবং স্টেপ স্টুয়ার্টস ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। যেহেতু ধর্ষণের বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে কোরআন এবং সুন্নাহ’র আলোকে আইন রয়েছে সেক্ষেত্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, শীর্ষ আলেম, বায়তুল মোকাররমের খতিবের মতামত নেওয়া জরুরী ছিল।

বিজ্ঞাপন

এ সময় ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, পুরুষতান্ত্রিক পরিবার রাষ্ট্র বা সমাজে বাস করে। তারা অত্যন্ত নারী বিদ্বেষী একটি সমাজ। এই দেশে ধর্ষণ বর্বরতার শিকার নারীর ক্ষেত্রে বলা হয় সেই নারীর সম্ভ্রম হারিয়ে গেছে। অথচ যেখানে সম্ভ্রম যাওয়ার কথা ধর্ষকের সেখানে এই দেশে সম্ভ্রম হারায় নারী। সমাজের এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ধর্ষণের পর বহু নারী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

তিনি বলেন, বহু নারী এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চায় না, বহু নারী বিষয়টিকে পরিবারের চাপে এবং সমাজের চাপে ধামাচাপা দেয়। এই অবস্থায় মামলা করবার পর একজন নারীকে যে চোখে সমাজ দেখে মামলাটি যখন আদালতের ওঠে তখন যে ধরণের প্রশ্নের মুখোমুখি তাকে হতে হয়, একারণে নারীরা মামলা করতে আগ্রহী হন না। খুব অল্প সংখ্যক কিন্তু মামলার দরজা পর্যন্ত যান। মামলার দরজা পর্যন্ত যে ঘটনাগুলো যায় পরিসংখ্যান বলে সেখানে সাজার হার অত্যন্ত কম। আমাদের পরিসংখ্যানে দেখাচ্ছে মামলা হওয়া ঘটনাগুলোর মধ্যে ধর্ষণের সাজা হয় মাত্র ৩ শতাংশ। বাকি ৯৭ শতাংশ অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সাজা যেখানে নিশ্চিত করতে পারছি না সেখানে আইন পরিবর্তন করে ধর্ষণের সাজা বাড়িয়ে আমরা আসলে কতটুক সাজা নিশ্চিত করতে পারবে সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।