বর্তমানে ১২ লাখ সরকারি চাকরিজীবী, শূন্য পদ ৩ লক্ষাধিক

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন, ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন, ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: দেশে মোট ১২ লাখ ১৭ হাজার ৬২ জন সরকারি চাকরিজীবী রয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে ২৯০ জন কর্মকর্তা বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া এই মুহূর্তে দেশে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৪৮ পদ শূন্য রয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে একাদশ সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশনে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে পৃথক তিনটি প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী সংসদকে এ তথ্য জানান। এরআগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।

রেওয়াজ অনুযায়ী চলতি সংসদের কোনো সংসদ সদস্য মারা গেলে ওই দিনের কার্যসূচি মুলতবি ঘোষণা করা হয়। বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা।

বিজ্ঞাপন

সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা ১২ লাখ ১৭ হাজার ৬২ জন।

এ সময় সরকারি কর্মকর্তাদের ওএসডি’র ব্যাখ্যা দেন প্রতিমন্ত্রী। বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকারি কর্মকর্তাগণকে দাপ্তরিক বিভিন্ন কারণে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে পদায়ন করা হয়। জনস্বার্থে যে কোনো কর্মকর্তার ক্ষেত্রেই এটি একটি নিয়মিত পদায়ন হিসেবেই বিবেচিত হয়। সাধারণত বিশেষ কিছু কারণে কর্মকর্তাগণকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওএসডি হিসেবে পদায়ন করা হয়।

ওএসডি হয় যেসকল কারণে:

বিজ্ঞাপন

উচ্চতর পদে পদোন্নতি প্রদানের পর, উচ্চতর শিক্ষা/লিয়েন/ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য/অংশগ্রহণ শেষে ফেরত আসা। অবসরোত্তর ছুটি বা (পিআরএল) এর অব্যবহিত পূর্বে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার অসুস্থতা ব্যক্তিগত কারণে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, বিভাগীয় মামলা দুর্নীতি মামলা রুজু হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে, ‌তিন মাসের বেশি ছুটির ক্ষেত্রে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে উল্লেখিত সকল কারণে বিভিন্ন স্তরে মোট ২৯০ জন কর্মকর্তা বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগ এবং সংযুক্ত অধিদপ্তর পরিদপ্তর দপ্তর, সংস্থায় বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বমোট ১৭৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যক্তিবর্গ চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত আছেন।

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দলীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৪৮ পদ শূন্য আছে।

তিনি বলেন, শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ক্যাডার পদসমূহে নিয়োগ প্রদান করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে নিয়মিত নিয়োগ প্রদান করা হচ্ছে। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৭তম বিসিএসের মাধ্যমে ১ হাজার ২৪৮ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন ক্যাডারে, ৩৯তম বিসিএসের মাধ্যমে ৪ হাজার ৬১২ জনকে স্বাস্থ্য ক্যাডারে। সর্বমোট ৫ হাজার ৮৫৯ জন কর্মকর্তাকে নিয়োগ করা হয়। এছাড়া ৪০ তম বিসিএস এর মাধ্যমে ১ হাজার ৯১৯টি বিভিন্ন ক্যাডারে শূন্যপদে নিয়োগের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সরকারি অফিসসমূহ শূন্য পদে লোক নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া।

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ২০১৯ সালের জানুয়ারি হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগ এবং দপ্তরে ৮৮ হাজার ১২৩ টি পদ সৃজনের সম্মতি প্রদান করা হয়েছে। এই সময়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ৯ম থেকে ২০ তম গ্রেডের সর্বমোট ৮৬৪টি পদে নিয়োগের ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। আদালতে মামলা থাকায় নিয়োগবিধি কার্যক্রম শেষ না হয় এবং পদোন্নতি যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া কিছু শূন্যপদ পূরণ করা যায় না।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৯ সালের ১ অক্টোবর হতে সরকারি চাকরি আইন কার্যকর করা হয়েছে। এর আওতায় প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান তৈরি করা প্রক্রিয়াধীন।’