তারেক রহমান ঝাড়ুদার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্টও হতে পারবে না

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সঙ্গে খালেদা জিয়ার পরিবারের তুলনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, তুলনাটা খারাপ লাগে। জয়, পুতুল, ববি ও টিউলিপ। টিউলিপ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তৃতীয়বারের মতো এমপি। তারেক রহমান ওইখানে পালিয়ে না থেকে নাগরিকত্ব নিয়ে একটু চেষ্টা করে দেখুক ঝাড়ুদারের অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হতে পারে কি না? সেইটাও তো সন্দেহ পোষণ করি। কেন না, যে নাকি ওই ধরনের ক্রিমানল। ওই খানে বসে ক্যাসিনোকে আয়ের উৎস হিসেবে বলে তাকে ওই দেশের লোক ভোট দেবে না।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

মতিয়া চৌধুরী বলেন, তারেক রহমান ‘লাইক ফাদার লাইক সান’ এখন ‘লাইক মাদার লাইক সান’। উনি ক্যাসিনো নিয়ে কথা বলেছেন। উনি ভুলে যান লন্ডনে আয়কর রিটার্নে তারেক রহমান আয়ের উৎস ক্যাসিনো দিয়েছে। লিখিত ডকুমেন্ট আছে। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্যাসিনোর বিরেুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি ব্যবস্থা নিয়েছেন। এই দেশে অস্প্রদায়িক রাজনীতির মানসিকতা সেটা শেখ হাসিনার যেমনটি আছে তেমনটি আর কারো ভেতরে নাই। দেশের মানুষ এখন খেয়ে পড়ে আছে। এই শীতে গায়ে কাপড় আছে, মাথার ওপর ছাউনি আছে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে তিনি বলেন, টিউলিপের পথটা ফুলের বিছানা ছিল না। এক একটি ডিগ্রি নেয় আবার কিছুদিন চাকরি করে। তারা একদিকে শিক্ষিত, মার্জিত, আলোকিত মানুষ। আরেক দিকে তারেক রহমান দস্যুতা, বিকৃত মানসিকতার। মানুষ হত্যার মানসিকতা নিয়ে চলে। তাই তুলনা করাটা খুব খারাপ লাগে।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির জীর্ণ অবস্থার বর্ণনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি নির্বাচন বয়কট করে এই অবস্থায় এসেছে। আপনার (বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে) গণতন্ত্র চর্চা করেন, রাজনীতি করেন। ষড়যন্ত্র বাদ দেন। ডাক্তার যখন ভুল করে তখন রোগী মারা যায়, আর নেতা যখন ভুল করে, দল যখন ভুল করে পার্টি ছত্রখান হয়ে যায়। আর হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে নিপতিত হয়। যেটি বেগম জিয়া অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে তার পার্টি এবং দেশের ভেতরে করার চেষ্টা করেছেন।

ক্যাসিনো নিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের দেওয়া বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান সংবিধানকে বেয়নেটের খোঁচায় ক্ষতবিক্ষত করে চার মূলনীতিকে বিসর্জন দিয়েছিল। শাহ আজিজ মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘে গিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে ওকালতি করেছিল। বাংলাদেশে কিছুই হয়নি বলে সেখানে সাফাই সাক্ষী দিয়েছিল, সেই শাহ আজিজকে জিয়াউর রহমান প্রধানমন্ত্রী করে। আব্দুল আলীমসহ যত স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি সবাইকে পুনর্বাসিত করে। আমাদের চার মূলনীতিকে বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে একদম বাদ দিয়ে দেয়। সব কিছু করে যে পার্টি গঠন করলেন সেই পার্টির নাম দিলেন বিএনপি। সেই দলের অর্থ যদি এভাবে দেখি বাংলাদেশ নাও পাকিস্তান (বিএনপি)। অর্থাৎ পাকিস্তানকে জানিয়ে দিল আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমি সম্পন্ন করেছি। ১৫ আগস্টের পরে বাংলাদেশকে আমি পাকিস্তানে পরিণত করেছি।

তিনি বলেন, বিএনপি’র সদস্যরা ক্যাসিনো নিয়ে কথা বলেন। কে এই ক্যাসিনোর প্রবক্তা? প্রবক্তা হলেন জিয়াউর রহমান। একদিকে বিসমিল্লাহির রহমানের রাহিম লিখলেন অন্যদিকে মদ আর জুয়া এই দেশে চালু করলেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আজ থেকে বাংলাদেশে মদ, জুয়া নিষিদ্ধ আর সেই দেশে হাউজি মদ এবং লাকি খানের ঝাকি নৃত্যকে প্রচলন করেছিলেন জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশ একটা অদ্ভুদ উটের পিঠে চড়িয়ে বাংলাদেশকে পরিচালনা করা শুরু করেছিল জিয়া। যে নলে জন্ম, সেই নলে বিনাশ। হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল, একদিন সেই হত্যার মাধ্যমে সার্কিট হাউজে পড়ে ছিল।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতায় থাকলে দেশে উন্নতি হয়। আর বিএনপি ক্ষমতায় আসলে কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের ওপরে অত্যাচারের খড়গ নেমে আসে। এ ব্যাপারে তারা (বিএনপি) অত্যন্ত পারদর্শী। ওঠার ব্যাপারের তাদের কোন যোগ্যতাও নাই, ইচ্ছাও নাই, স্বপ্নও নাই এই হল বিএনপি।

তিনি বলেন, কই শেখ হাসিনার ছেলের তো কোন ভবন নাই, হাওয়া ভবন কার ভবন? বেগম জিয়ার সন্তানের ভবন, আর খাওয়া ভবনও ওই একই ভবন। খোয়াব ভবনও ওই একই ভবন। অন্য দিকে তার আর এক সন্তান কোকো খাম্বার কাহিনী।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের কথা বলে। ২১ আগস্ট গ্রেনড হামলার মাধ্যমে আমাদের নারী নেত্রী আইভী রহমানসহ ২১ জনকে হত্যা করা হল। সেদিনের হামলায় আমাদের প্রধানমন্ত্রীর একটি কান নষ্ট হয়ে গেছে। এখনো তিনি হেয়ারিং যন্ত্র ছাড়া কানে কিছুই শুনতে পান না। উনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) মাঝে মাঝে ঠাট্টা করে বলেন ওই দিকে বিএনপি যখন অশ্রাব্য কুশ্রাব্য কথা বলে আমি কানের হেয়ারিং যন্ত্র খুলে রাখি, আমি কিছুই শুনতে পাই না। এই হল প্রধানমন্ত্রী এটাকে খুব লাইকলি নেন।

বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল, তাদেরই কু-কর্মের জন্য মানুষ তাদের প্রত্যাখান করেছে। এই কথা তাদের মাথায় রাখা উচিত।