বেকার থাকার সুযোগ নেই: প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: যুব সমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুবকরা বেকার থাকুক সেটা আমরা কখনো চাই না।
তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য শিক্ষিত হোক বা অর্ধশিক্ষিত, আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক করেছি; সেখান থেকে যে কোন যুবক বিনা জামানতে দুই লাখ পর্যন্ত টাকা নিতে পারে। সেটা এককভাবে বা যৌভাবে নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে— সেই সুযোগটা আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি। আমরা এত কর্মসূচি নিয়েছি, বেকার থাকার সুযোগ নেই। কেউ যদি ইচ্ছে করে বেকার থাকে!
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম (টিটু) ও বিরোধী দলের প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গার পৃথক দুই সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।
যুব সমাজের কর্মসংস্থানে নেওয়া নানা কর্মসূচি তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। সেখানে যুবকদের কর্মসংস্থান হবে। ডিজিটাল সেন্টার করেছি এবং কমিউনিটি ক্লিনিক করেছি সেখানেও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া আমাদের অনেক উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে সেখানে যে কেউ চাইলে কিছু করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করেছি। আমাদের লক্ষ্য যুবকরা কাজ করবে, সবার কর্মসংস্থানের সুবিধা থাকবে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে যুবকরা নিজেদের ভাগ্য গড়তে পারবে। যুবকদের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, তবে সেটা নির্ভর করে প্রতিটি যুবকের ওপর। তারা কি চাকরির পেছনে ঘুরবে নাকি নিজেরা কিছু কাজ করে অন্য লোকের চাকরি দেওয়ার সুযোগ করবে, উদ্যোক্ততা হয়ে নিজেদের গড়ে তুলতে পারে, সেই দিকে লক্ষ্য রেখে তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। তাছাড়া ছাত্র ছাত্রীদের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাই যেন স্কুলজীবন থেকে নিজেদের ভেতরে প্রতিভা দিয়ে কিছু করতে পারে। নিজে কাজ করবে, নিজের পায়ে দাঁড়াবে।
সংসদ নেতা বলেন, যুবকরা নিজে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে, সে ধরনের অনেক সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করেছি। কেউ যদি ইচ্ছে করে বেকার থাকে.. বেকার থাকার কোন সুযোগ নাই। এতো বেশি কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আমাদের উন্নয়ন প্রকল্প চলছে সেখানে যে কেউ কিছু কাজ করলে কিছু করে খেতে পারবে।
মাদকাসক্তদের বিষয়ে বিশেষ কোন পদক্ষেপ নেবেন কি না? মসিউর রহমান রাঙ্গার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি মনে হয় অনেক পিছনে পরে আছেন। ইতোমধ্যে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে শুরু করে দিয়েছি। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং এটা চলতেই থাকবে। মাদক একটা পরিবারকে ধ্বংস করে, দেশেরও ক্ষতি হয়। যে সেবন করে সে নিজেরও ক্ষতি করে, এর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি।
আহসানুল ইসলামের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, গত দশ বছরে ২০০৯ হতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৯ লাখ ৬ হাজার ৫৭৪ জন তরুণকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দশ বছরে ৪ লাখ ২১ হাজার ৪৪১ জন প্রশিক্ষিত যুব ও যুবমহিলাকে ১ হাজার ২৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৭ লাখ ৪ হাজার ৩৭৩ জন বেকার যুব ও যুবমহিলা সফল আত্মকর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।