বিএনপিকে প্রেসক্রিপশন দিলেন শাজাহান খান
জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: বিএনপির বর্তমান অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান।
তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে? আজকে তা প্রমাণিত হয়েছে। মানুষ হত্যা করে সন্ত্রাস করে বাড়ি গাড়ি পুড়িয়ে নারী ধর্ষণ করে যারা ক্ষমতায় আসতে চায় বা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় তারা কখনো পারে না। এর পরিণতি ভয়াবহ, যার প্রমাণ বার বার হয়েছে ইতিহাসের শিক্ষা এইটা। সেই শিক্ষা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেনি। তাই বিএনপিকে একটা ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) দিতে চাই।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কিত আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। এসময় সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বিএনপি’র প্রেসক্রিপশনে শাজাহান খান বলেন, আপনারা যত অপরাধ করেছেন তার জন্য জনগণের কাছে করজোরে ক্ষমা চান। প্রতিজ্ঞা করুন আর কোনোদিন এসব অপকর্ম করবেন না। জামায়াত- শিবির, রাজাকার, আলবদরদের অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করেন, যুদ্ধ অপরাধী ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকার করুন। বলিষ্ঠ কণ্ঠে উচ্চারণ করুন জয়বাংলা ধ্বনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করুন। এসবের পর বাঙালি জাতি হিসাব করে দেখবে আপনাদেরকে ক্ষমা করা যায় কি যায় না।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা ঐক্য নিয়েই এগিয়ে চলছি। বিএনপি’র একজন সদস্য (হারুনুর রশীদ) এইখানে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন আওয়ামী লীগ সরকার নাকি জাতিকে বিভক্ত করেছে। বিভক্ত করেছে কারা? যারা রাজাকার, আলবদরদের নিয়ে রাজনীতি করেন তাদের জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি একটা আর আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি তাদের ঐক্যের ভিত্তি একটা।
শাজাহান খান বলেন, বিএনপি নেতারা জাতীয় ঐক্যের কথা বলে তারা জনগণকে তথা জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চায়। আমি বিশ্বাস করি জনগণ এতে বিভ্রান্ত হবে না। বিএনপি জামাতের ঐক্য ২০০৪ সালের ৪ জুনে জামায়াতের রুকনদের নিয়ে সম্মেলন হয়েছিল, সেখানে তারেক জিয়া এবং বিএনপি নেতারা বলেছিলেন আমরা অর্থাৎ বিএনপি এবং জামায়াত এক পরিবার। সুতারাং এতে প্রমাণিত হয় তারা কি চেয়েছে বাংলাদেশকে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপির মধ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তাদেরকে বলব সত্যকে মেনে নিয়ে আপনারা এগিয়ে আসুন। বিএনপি অপরাজনীতিকে ছেড়ে দিয়ে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালি জাতির ঐতিহ্য রক্ষার জন্য এগিয়ে আসুন।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতির এবারের যে সংগ্রাম সেটা হলো যুদ্ধাপরাধী জামায়াত শিবির খুনিদের নিশ্চিহ্ন করার সংগ্রাম। এই সংগ্রামে বাঙালি জাতি বিজয় লাভ করেছে।
তিনি বলেন, যে জয়বাংলা বলে রাষ্ট্রপতি প্রথম অধিবেশনে বক্তব্য দিয়েছিলেন এবং শেষ করেছিলেন। এবারও তাই করেছেন। জয়বাংলা ধ্বনি দিয়ে শেষ করে রাষ্ট্রপতি একটা ইঙ্গিত করেছেন। আমি জয়বাংলা ধ্বনিকে জাতীয় ধ্বনি হিসেবে ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানিত ভাতা ২০ হাজার করার দাবি জানান।