বিএনপির প্রচারণায় ভোটার কমে গেছে: সংসদে তথ্যমন্ত্রী

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সংসদ অধিবেশন এবং ইনসেটে তথ্যমন্ত্রী/ ছবি: সংগৃৃহীত

সংসদ অধিবেশন এবং ইনসেটে তথ্যমন্ত্রী/ ছবি: সংগৃৃহীত

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির নেতিবাচক প্রচারণার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে বলে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ইভিএম এর বিরুদ্ধে বিএনপির নেতিবাচক প্রচার না থাকলে আরও ৮-১০ শতাংশ ভোট বেশি হতো।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যে নির্বাচন হয়েছে, এটি যে কোনো বিচারে উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত চমৎকার এবং ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সভাপতিত্ব করছিলেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া।

কলকাতায় সিটি নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের ইতিহাসে, বাংলাদেশের যে কোন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এ নির্বাচন ছিল অত্যন্ত চমৎকার নির্বাচন যে নির্বাচনে কোনো হাঙ্গামা হয়নি। নির্বাচনে কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটেনি। এটি যে কোনো বিচারে উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত চমৎকার এবং ভাল নির্বাচন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, কেউ কেউ কাগজে লিখছে খুব কম সংখক লোক ভোট দিতে গেছে। এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ টেনে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য লোক তাদের ৬০ শতাংশ ভোটার তালিকায় নাম রেজিস্ট্রেশন করে। আর সেই ৬০ শতাংশের মাত্র ৪০-৪২, বা ৫০ শতাংশ ভোটার ভোট দেয় বা ভোট কাস্ট হয়। অর্থাৎ ২৪-৩০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়। অর্থাৎ ভোটার হওয়ার যোগ্য জনসংখ্যার মাত্র ২৪-৩০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২৯ শতাংশ এবং উত্তরে ২৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। এই ভোটের হার অনেক বেশি হত বিএনপির নেতিবাচক প্রচারণা না থাকত।

সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দারিদ্র্যকে জয় করার পথে আমরা অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছি। দেশের প্রতিটি মানুষের উন্নয়ন হয়েছে। শেখ হাসিনা শুধু উন্নত রাষ্ট্র গঠন করতে চান না, একটি উন্নত জাতিও গঠন করতে চান। দেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের রাজনীতি যদি না থাকতো বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারতো। বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির কারণে উন্নয়ন আরও যত হওয়ার কথা ছিলো সেটা হয়নি। বিএনপি আন্দোলনের নামে,নির্বাচন বানচালের নামে পেট্রোল বোমা মেরেছে, জ্বালাও পোড়াও করেছে। ভোট কেন্দ্র পুড়িয়েছে, স্কুল পুড়িয়েছে, বাচ্চারা বই বুকে ধরে কেঁদেছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর বিএনপি বলছে মানুষ ভোট দানের আগ্রহ হারিয়েছে। মানুষ নির্বাচনে যদি ভোট দানের আগ্রহ হারিয়ে থাকে তাহলে সেটা বিএনপির জন্যই হারিয়েছে। কারণ তারা অতীতে জ্বালাও পোড়াও, পেট্রোল বোমা মেরেছে। এই নির্বাচনেও মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে, ইভিএম সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়েছে কারণে ৮ থেকে ১০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি কমেছে।

এ সময় তথ্যমন্ত্রী সরকারের উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলেন, আজ  শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া দেখে পাকিস্তান আক্ষেপ করে। সব সূচকে আজ বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিলো ৩৭৭ ডলার। তখন পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ছিলো ৭৬০ ডলার। ২০১৯ সালের শেষে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিলো ২০০০ ডালার, আর পাকিস্তানের মাথা পিছু আয় ১৭০০ ডলার। বাংলাদেশের রফতানি আয় প্রায় ৪৭ বিরিয়ন ডলার। সেখানে পাকিস্তানের রফতানি আয় মাত্র ২৩ বিলিয়ন ডলার। ডলারের সঙ্গে মুদ্রা বিনিময় হার বাংলাদেশের ৮৪ টাকা আর পাকিস্তানের ১৫৩.৯৬ টাকা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১৫৪ টাকা। শুধু তাই নয় কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভারতকেও বাংলাদেশ ছাড়িয়ে গেছে। সেনিটেশনে বাংলাদেশের অগ্রগতি ৯৯ শতাংশ আর ভারতে ৫৯ শতাংশ। বাংলাদেশে বিশুদ্ধ পানির সুবিধা পাচ্ছে ৯৮ ভাগ মানুষ সেখানে ভারতে ৮৮ ভাগ।