১৬ জুলাই : কারারুদ্ধ শেখ হাসিনা ও অবরুদ্ধ গণতন্ত্র



আব্দুর রহমান
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

১/১১-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ২০০৭ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের সভাপতি, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়। শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে সেদিন মূলত বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও রাজনীতিকে অবরুদ্ধ করার অপচেষ্টা চালানো হয়।

২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ভোরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় দুই সহস্রাধিক সদস্য সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বাসভবন সুধাসদন ঘেরাও করে। এমতাবস্থায় জননেত্রী শেখ হাসিনা ফজরের নামাজ আদায় করেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে সুধাসদন থেকে নিয়ে যায় এবং যৌথবাহিনীর সদস্যরা বন্দি অবস্থায় তাঁকে ঢাকার সিএমএম কোর্টে হাজির করে।

বেশ কয়েকটি হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ১০ মাস ২৫ দিন কারারুদ্ধ ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা অর্থাৎ তৎকালীন  বিরোধীদলীয় নেত্রী। সামরিক বাহিনী সমর্থিত ইয়াজউদ্দিন-ফখরুদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কেন সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার না করে তৎকালীন  বিরোধী দলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করছিল- সেটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামাত জোট সরকার সন্ত্রাস, দুর্নীতি, ধর্ষণ ও লুটপাটের মাধ্যমে নরকে পরিণত করেছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে। গ্রেনেড, বুলেট, বোমায় শেষ করতে চেয়েছিল গণতন্ত্রের মানসকন্যাকে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকেই সমূলে নিশ্চিহ্ন করে দেবার চেষ্টা করা হয়। সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছিল জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করার ৫৯ দিন পর। এখানেই জেনারেল নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক ইচ্ছেটা স্পষ্ট। এই স্বাধীনতা-বিরোধী শক্তি বিচ্ছিন্ন কেউ নয়। এদের জন্যই স্বাধীনতা যুদ্ধ এত রক্তক্ষয়ী হয়েছিল। স্বাধীনতা-পরবর্তী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এরাই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।

২০০৬ সালে বিএনপি-জামাত তথা খালেদা জিয়ার সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরে জটিলতা সৃষ্টি করলে সে সময়ে সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইয়াজউদ্দীন আহম্মেদের সাথে সাক্ষাত করেন। জেনারেল মইন তার স্মৃতিচারণ গ্রন্থ 'শান্তির স্বপ্নে' গ্রন্থে লিখেছেন,  তারা আড়াইটার সময় বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন। ভেতরে গিয়ে শোনেন, প্রেসিডেন্ট মধ্যাহ্নভোজ করছেন। তাদের একটি কামরায় অপেক্ষা করিয়ে রাখা হয়। ঘণ্টা দেড়েক অপেক্ষা করবার পর প্রেসিডেন্টের দেখা মেলে। প্রেসিডেন্টকে তারা 'মহা-সংকটময় পরিস্থিতি' থেকে দেশকে উদ্ধার করার অনুরোধ জানান। প্রেসিডেন্ট বিষয়টি ভেবে দেখার সময় নেন। দীর্ঘ নীরবতার পর প্রেসিডেন্ট জরুরি অবস্থা জারির পক্ষে মত দেন। সেই সাথে তিনি নিজে প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে উপদেষ্টা পরিষদ ভেঙে দেবেন বলে জানান।

বইতে ছ'টার সময় বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে আসার কথা লিখেছেন মইনুদ্দীন, অর্থাৎ দু'ঘণ্টার মতো তারা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছিলেন। এই দু'ঘণ্টায় তারা কিভাবে কি বুঝিয়েছিলেন প্রেসিডেন্টকে, কোন প্রেক্ষাপটে গিয়ে প্রেসিডেন্ট জরুরি অবস্থা জারি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভেঙে দিতে রাজী হলেন, তার কোনো স্পষ্ট ধারণা এই লেখায় পাওয়া যায় না।

বঙ্গভবনেই প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন দুটো নাম প্রস্তাব করেছিলেন, একজন শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস, অপরজন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফখরুদ্দীন আহমেদ। প্রফেসর ইউনুসকে প্রথম ফোনটি করেন জেনারেল মইনুদ্দীন। প্রফেসর ইউনুস অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তিনি যেমন দেখতে চান সেরকম বাংলাদেশ গড়তে খণ্ডকালীন সময় যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশকে আরো দীর্ঘ সময় ধরে সেবা দিতে আগ্রহী। সেই মুহূর্তে ড. ইউনুসের কথার মর্মার্থ বুঝিনি...পরবর্তী সময়ে আমরা দেখেছি তিনি একটি রাজনৈতিক দল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। যদিও পরিস্থিতির কারণে তাকে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়েছিল।

ড. ফখরুদ্দীন আহমেদকে ফোন করে ঘুম থেকে জাগানো হয় গভীর রাতে। প্রধান উপদেষ্টা হবার আমন্ত্রণ পেয়ে স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার জন্য সময় চান তিনি। আধ ঘণ্টা পর ফিরতি ফোনে সম্মতি জানান। ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের জন্য শপথ নেন প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ।

রাজনৈতিক বোদ্ধাদের ধারণা এখন প্রায় বিশ্বাসে পরিনত হয়েছে এই বলে যে- ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য দুই নেত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এত বছর পরে এসে এ কথা হলফ করে বলা যায়, বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে শুধুমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মাইনাস করাই ছিলো এই ফর্মুলার মূলে। ক্যান্টনমেন্ট থেকে পরিচালিত সরকারের চরিত্র যেমনটা হয় আরকি! কারণ তারা যুগে যুগে গণতন্ত্রকেই হত্যা করতে চেয়েছে।

জননেত্রী শেখ হাসিনা সন্তানসম্ভবা পুত্রবধূকে দেখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই তিনি জানতে পারেন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

২০০৭ সালে ১১ জানুয়ারির পর তাঁর দেশে ফেরার ওপর বিধিনিষেধ জারি করে সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। রাজনীতি থেকে  সরিয়ে দেওয়ার জন্য চলে নানামুখি চক্রান্ত। কিন্তু ব্যর্থ হয় সব ষড়যন্ত্র। সব বাধা অতিক্রম করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে ব্রতী হয়ে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা।

যৌথবাহিনী গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে মিথ্যা মামলায় ১৬ জুলাই গ্রেফতার করে কারারুদ্ধ করে। গণমানুষের নেত্রী যখন কারাগারে, তখন এ দেশের আপামর জনগণ তার অনুপস্থিতি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছে। তার সাব-জেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের উদ্বেগ, গ্রেফতারের সংবাদ শুনে দেশের বিভিন্ন স্থানে মারা যান চার জন। ১/১১-এর সরকারের সময় ঢাকা শহরের ২৫ লাখ মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর দিয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের উৎকণ্ঠা আপামর জনগোষ্ঠীকে স্পর্শ করেছিল। আদালতের চৌকাঠে শেখ হাসিনা ছিলেন সাহসী ও দৃঢ়চেতা; দেশ ও মানুষের জন্য উৎকণ্ঠিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা হিসেবে সত্য কথা উচ্চারণে সবসময়ের মতোই বড় বেশি সপ্রতিভ ছিলেন তিনি। অবশেষে আইনি মোকাবিলার মাধ্যমে ২০০৮ সালের ১১ জুন শেখ হাসিনা কারাগার থেকে মুক্তি পান।

বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। ১/১১ এর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার হাজারো চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে দেশ এবং দেশের জনগণ থেকে তাঁকে বিচ্ছিন্ন করতে। পরবর্তীতে তিনি তাঁর সততা, দক্ষতা এবং দেশপ্রেমের কারণে ২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালে দশম এবং ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের মানুষ আর জোট সরকারের দুঃশাসনে ফিরে যেতে চায় না, শেখ হাসিনার মাঝে তারা খুঁজে পায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয় ছিল, সেই স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তার দূরদর্শী নেতৃত্ব, সাহসী পদক্ষেপে বাংলাদেশ আজ শুধু উন্নয়ন আর অগ্রযাত্রার মাইলফলকই নয়, বরং শেখ হাসিনার মানবিক নেতৃত্ব আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। তিনি আজ বিশ্বনেতাদের কাছে উন্নয়ন আর মানবিকতার প্রতীক।

শত সংকট আর সম্ভাবনায় শেখ হাসিনাই বাংলার মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের শেষ ঠিকানা। যখনই এ দেশের গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ছে, তখনই গণতন্ত্র রক্ষায় ঢাল হিসেবে সামনে দাঁড়িয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এ দেশের মুক্তিকামী, আপামর জনতা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে মানুষের মৌলিক অধিকার, সংবিধানের চার মূলনীতি বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ও ধর্ম নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত এবং অসাম্প্রদায়িক সুখি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিকল্প শুধুই শেখ হাসিনা।

লেখক: সভাপতিমন্ডলীর সদস্যবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

   

উপজেলা নির্বাচনের কেন্দ্রগুলো খাঁ খাঁ করছে: মেজর হাফিজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভোটার ছাড়া দেশের উপজেলা নির্বাচনের কেন্দ্রগুলো খাঁ খাঁ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অবঃ) হাফিজউদ্দীন আহমেদ।

বুধবার (৮ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মেজর (অবঃ) হাফিজউদ্দীন আহমেদ বলেন, আজকে দেশে উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে। টেলিভিশনে দেখাচ্ছে কেন্দ্রগুলো খাঁ খাঁ করছে। কোনো ভোটার সেখানে যায়নি। কেন এই অবস্থা হলো ? কেন আজকে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনা? কেন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বিলুপ্ত হলো ? কেন দেশে আইনের শাসন নাই, মৌলিক অধিকার নাই ? যে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ডা. জাফরুল্লাহ ও আমরা যুদ্ধ করেছিলাম কোথায় গেলো সেই সামাজিক মূল্যবোধ, মানবিক মর্যাদার মূল্য, সবার জন্য সুবিচার ? বর্তমান সরকারের দুঃশাসনের কারণে এসব বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তাই আজকে আবার দরকার ডা. জাফরুল্লাহ মতো ব্যক্তিদের।

গগণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আমাদের স্মরণীয় বরণীয় একজন ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন বিচিত্র ব্যক্তি। তিনি কোনো দল করতেন না। তার মতো স্পষ্টভাসি ব্যক্তি আমার চোখে তেমন একটা পড়েনি। যেটিকে তিনি ন্যায্য মনে করতেন সেটিকে তিনি নিঃসংকোচে উচ্চারণ করতেন। তার কথা যখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যেতো তখন আমরা বিএনপির সবাই হাত তালি দিতাম। আবার যখন তার কথা যখন বিএনপির বিরুদ্ধে যেতো তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা খুব উল্লাসিত হতো। যখন যা বলার প্রয়োজন তিনি তখন সেটা নির্ভয়ে নিঃসংকোচে বলেছেন। তার চোখের সামনে ছিল দেশ। তিনি দেশের স্বার্থে কথা বলেছেন। জনগণকে লক্ষ্য করেই তিনি বক্তব্য রাখতেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, অনেকে বলেন তিনি বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ছিলেন। কিন্তু না, তিনি কোনো পন্থার বুদ্ধিজীবী ছিলেন না। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী। তিনি বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে ছিলেন, মানুষের মত প্রকাশের পক্ষে ছিলেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী তীব্রভাবে সবার মধ্যে বেঁচে থাকবেন। যতদিন আমি কাজ করব আমার মতো অন্যরা কাজ করবেন ততদিন তিনি তীব্রভাবে বেঁচে থাকবেন।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, আমি একটি রুরাল এলাকা থেকে এসে রাজনীতি করেছি। আমার এই ক্ষেত্রে সবসময় জাফরুল্লাহ চৌধুরী সহায়তা করেছেন। আমার রাজনৈতিক অভিভাবক হিসেবে উনাকেই পেয়েছি।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এবি পার্রটির সদস্য সচিব মুজিবুল হক মঞ্জু, জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য নাসিরুল হক, বিএনপির নির্বাহী কমিটি সদস্য মিজানুর রহমান প্রমুখ।

;

প্রহসনের উপজেলা নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে: রিজভী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জালিয়াতি ও প্রহসনের উপজেলা নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (৮ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

রিজভী বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পর এখন আবার আওয়ামী সাদা পোশাকধারী গেস্টাপো বাহিনী নতুনরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবীসহ অধিকার বঞ্চিত জনগণের ওপর দমন-পীড়ন অত্যাচার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, মিথ্যা মামলায় আটক, খুন, ধর্ষণ, শত শত মানুষের নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া, উচ্ছেদের রাজনীতি আর সীমাহীন সন্ত্রাস অবাধে চলছে রাষ্ট্রের মদদে। নতুন করে গুম ও বিরোধী দলের ওপর হিংস্র আক্রমণ প্রতিদিনের সংবাদে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন,নতুন করে ক্ষমতা করায়ত্ত করে নিজেদের সুবিধাভোগী শ্রেণি আওয়ামী অলিগার্কির লুটপাট ও টাকা পাচারের লোমহর্ষক কাহিনী, ক্ষমতাসীনদের নিজের আর পরিবারের আর্থিকভাবে গুছিয়ে নেওয়ার ধান্দাতে সারাদেশ বিপর্যস্ত। আর তাই ডাকাতি আর লুটের সব অভিনব ঘটনা ঢাকতেই আওয়ামী হিংস্রতার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।

রিজভী বলেন, লুন্ঠনের রাজনীতি ও অর্থনীতির দেউলিয়াপনার বাতাবরণ, বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেকে আড়াল রাখার বিধি-নিষেধের বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে মানুষের মনোযোগ ভিন্ন খাতে সরিয়ে দেওয়ার জন্য দেশকে অশান্তিময় রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে দখলদার সরকার।

তিনি বলেন, দেশ যে শূন্যগর্ভ; তা আজ নির্মম সত্য। আবারও নতুন করে গুমের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, হামলা করে রক্তপাতের ধারা বইছে সর্বত্র। গতকাল আসরের নামাজের সময় মসজিদে যাবার পথে সিদ্ধেশরী মাঠ থেকে ঢাকা বিশ্ব‌বিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাহিদুল হাসান হিরুকে সাদা পোশাকধারীরা মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। যে গাড়িতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তার নম্বর হলো ঢাকা মেট্রো-চ, ৫২-১৪৫০।

সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপি'র বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা এই দুর্যোগের সময় বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে, আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সেসব নেতাদের বিরুদ্ধে সম্মানহানি, নানা ধরনের অভিযোগ, দুর্নীতির অভিযোগে রিপোর্ট করা হচ্ছে। আমার মনে হয় এটা বস্তুনিষ্ঠতার পরিপন্থী হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী এডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম,কেন্দ্রী যুবদ‌লের যোগা‌যোগ সম্পাদক গিয়াস উ‌দ্দিন মামুন প্রমুখ।

;

স্পিকারের কাছে ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি চুন্নুর



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু আলোচিত আইনজীবী ও সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে নালিশ দিয়েছেন। সম্প্রতি সংসদ সদস্যদের ভাতা ও উন্নয়নকাজে বরাদ্দ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেওয়ার জের ধরে চুন্নু এ নালিশ করেন।

মঙ্গলবার (৭ মে) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ইঙ্গিত করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমাদের হাউজের একজন সংসদ সদস্য, নামটা বলতে চাই না। তিনি নতুন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ফেসবুকে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আমরা সবাই ভুক্তভোগী।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “তিনি (সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমন) বলেছেন, ‘আপনারা জানেন, এমপিরা কত টাকা বেতন পান? তারা তো বলে না, গোপন করে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘১ লাখ ৭২ হাজার টাকা বেতন (মাসিক) পেয়েছেন।’ আমরা কত টাকা বেতন পাই, তা লুকানোর কিছু নেই, ওয়েবসাইটে গেলে পাওয়া যাবে।”

স্পিকারের উদ্দেশে চুন্নু আরও বলেন, ‘ওই সংসদ সদস্য বলেছেন, তিনি তিন মাসে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। এই ২৮ কোটি টাকা কি আমি পেয়েছি, আপনি (স্পিকার) পেয়েছেন? প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন? ইতোমধ্যে ফেসবুক দেখে আমাকে অনেকেই বলছেন, ২৮ কোটি টাকা পেয়েছেন, এই টাকা কই?’

বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘তিনি (ব্যারিস্টার সুমন) বলেছেন, এমপি হলে যদি এত লাভ হয়, তাহলে আরও আগে এমপি হতাম।’ স্পিকারের উদ্দেশে চুন্নু বলেন, ‘কোনো সংসদ সদস্য যদি এমন কোনো কথা বলেন, যে কথায় প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ ৩৪৯ জন এমপি সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে। তার সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করার জন্য যদি এ ধরনের কথায় ভুল বার্তা যায়, বিষয়টা আপনি দেখতে পারেন। আমরা এখানে অনেক কথা বলব, বিতর্ক করব। এমন কথা বলবার অধিকার নেই, যাতে ৩৪৯ জন এমপির ইজ্জত যাবে। তাই অভিভাবক হিসেবে ওই সংসদ সদস্যকে ডেকে তাকে কী করবেন, একটা ব্যবস্থা নেবেন।’

উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সংসদ সদস্যদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত ওই স্ট্যাটাসটি দিয়েছিলেন।

 

;

বিশ্বকাপের আগে টাইগারদের এই বিজয় গুরুত্বপূর্ণ: জিএম কাদের



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই ম্যাচ হাতে রেখেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি।

মঙ্গলবার (০৭ মে) এক অভিনন্দন বার্তায় খেলোয়াড়দের পাশাপাশি ক্রিকেট কোচ ও বোর্ড সংশ্লিষ্টদেরও অভিনন্দন জানান তিনি।

অভিনন্দন বার্তায় বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, বিশ্বকাপের আগে টাইগারদের এই বিজয় গুরুত্বপূর্ণ। এই বিজয় টাইগারদের এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যোগাবে এবং বিশ্বকাপে টাইগারদের প্রত্যাশা পূরণে সহায়ক হবে।

আগামী ম্যাচগুলোতেও বিজয়ের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকবে। এই সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে একইভাবে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি।

;