সরকার এখনো নারীদের নিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, একজন নারী, একজন মা বা একজন বোন তাদের প্রাপ্য নিরাপত্তা এবং মর্যাদা পাচ্ছেন না, যা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল নিশ্চিত করা।
শনিবার (৮ মার্চ) জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কর্তৃক নারী দিবস নিয়ে আয়োজিত এক বিক্ষোভে এই কথা বলেন সারজিস আলম।
এসময় সারজিস আলম বলেন, “আমরা আমাদের আন্দোলনে দেখেছি, প্রতিটি মিছিলের সামনে আমাদের মা-বোনেরা ছিলেন। তারা যখন সামনে দাঁড়াতেন, তখন আমাদের সাহস আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পেত। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা দেখছি, নারীদের সুরক্ষা দিতে রাষ্ট্র ব্যর্থ হচ্ছে।”
তিনি উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মাগুরার এক তরুণী মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন, যা নারীদের নিরাপত্তাহীনতার আরেকটি উদাহরণ। তিনি বলেন, “শকুনের দৃষ্টি থেকে আমাদের বোনদের রক্ষা করা এখন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “একজন নারীর পোশাক দেখে তাকে অপমান করা হয়েছে, তার ওপর মতবাদ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এসব ঘটনা আমাদের সমাজ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।”
নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রকে অবশ্যই সব ধর্ম, মতাদর্শ এবং চিন্তাধারার মানুষকে সমানভাবে গ্রহণ করতে হবে। একজন ব্যক্তি তার নিজস্ব বিশ্বাস অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে পারেন না, চাইলেই তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।”
সারজিস আলম অভিযোগ করেন, রাজপথে আন্দোলনরত নারীদের সমর্থন দেওয়া হলেও রাজনীতিতে প্রবেশের পর তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের বোনেরা শুধু প্রতীকি উপস্থিতি নয়, তারা যোগ্যতার ভিত্তিতেই নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অংশগ্রহণ করবে। সংসদে নারীদের শুধু প্রতিনিধিত্ব নয়, কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।”
তিনি সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা বুঝতে হবে। যদি কেউ বিদেশি সংস্কৃতি বা অন্য কোনো কৌশল ব্যবহার করে আমাদের নারীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ব্যর্থ বলে প্রমাণিত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। এখন থেকে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চাই। নারীরা যেন তাদের প্রাপ্য মর্যাদা ও নিরাপত্তা পান, সেটাই হোক আমাদের নারী দিবসের প্রতিজ্ঞা।”