জাতীয় পার্টি কি বিএনপির দিকে টার্ন নিচ্ছে!



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাতীয় পার্টি কি বিএনপির দিকে টার্ন নিচ্ছে!

জাতীয় পার্টি কি বিএনপির দিকে টার্ন নিচ্ছে!

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছে জাতীয় পার্টি। চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ বড় একটি অংশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পক্ষে।

এই বলয়টি কোনভাবেই আর আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে চান না। তারা ভেতরে ভেতরে বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা পক্ষে। কারো কারো মতে এই যোগাযোগ বেশ জোরেশোরেই চলছে। কথিত রয়েছে সম্প্রতি জিএম কাদের চিকিৎসার নামে সিঙ্গাপুর সফর করলেও সফরটি ছিল পুরোপুরি রাজনৈতিক। একই সময়ে বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছিলেন। জিএম কাদের যে ফ্লাইটের যাত্রী হয়েছিলেন, একই ফ্লাইটেও বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সিঙ্গাপুর সফল শেষে পুরো বক্তৃতার ধরণ পাল্টে ফেলেছেন জিএম কাদের। তিনি  অবশ্য অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন আমরা আর আওয়ামী লীগের সঙ্গে নেই। ভবিষ্যতে কোন জোটে যোগদেব সেটি সময় বলে দেবে। তার এসব বক্তব্য অনেক পুরনো হলেও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বক্তব্যকে টার্নিং বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বছর খানেক আগেও অনেক ইস্যুতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বিপক্ষে বক্তব্য দিতেন। কিন্তু সম্প্রতি এক সুরে বলতে দেখা যাচ্ছে। অতীতে ইভিএম নিয়ে কথা না বললেও হঠাৎ করে বিএনপি সুরে সুর মিলিয়েছেন জাপা চেয়ারম্যান।

গত ১২ মে ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির মত বিনিময় সভায় বলেন, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেয়া যুক্তি যুক্ত হবে না। ইভিএম এর নির্বাচনে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে না, কারণ ব্যালট পেপার থাকে না। ভোটিং মেশিন যে রেজাল্ট দিবে, তাই ঘোষণা হবে। বিষয়টি হচ্ছে, দেশের মানুষ চাঁদে পাঠাতে চাচ্ছে সরকার কিন্তু সেখানে বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।

২০ মে আরেক অনুষ্ঠানে বলেন, ইতিমধ্যেই সরকার প্রধান ঘোষণা করেছেন আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। সবগুলো আসনে ইভিএম-এ ভোট গ্রহণ না করলেও, যে সকল আসনে সরকার দলীয় প্রার্থীরা প্রকাশ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না সেখানে হয়তো ইভিএম-এ ভোট গ্রহণ চলবে। জাতীয় পার্টি প্রহসনের নির্বাচন চায় না।

নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে জাপার আগের অবস্থান ছিল বিএনপির ঠিক বিপরীতে। তারা শক্তভাবে তত্বাবধায়কের বিপক্ষে কথা বলতেন। দলটির বক্তব্য ছিল তত্বাবধায়ক সরকার তাদের সঙ্গে সঠিক আচরণ করেনি। তাই আমরা তত্বাবধায়কের পক্ষে না। কিন্তু হঠাৎই জিএম কাদের সুর পুরো বদলে ফেলেছেন। যদিও কোন ফরমেটের কথা বলেন নি, তবে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয় এ কথা স্পষ্ট করেছেন।

২০ মে এক বক্তৃতায় জিএম কাদের বলেছেন, কর্তৃত্ববাদী সরকারের সামনে প্রশাসন বা সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো অসহায় হয়ে পড়ে। তাই কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে।

জিএম কাদের’র এসব কথাবার্তা ইঙ্গিতবহ বলে মনে করছেন। সম্প্রতি পদ্মাসেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ইস্যুতে একটি ঘটনা বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছেন। আওয়ামী লীগ নেতা আবু হাসনাত আব্দুল্যাহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে বলেছিলেন বরিশাল অঞ্চলের সংসদ সদস্যদের। বরিশাল-৬ আসন থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির এমপি রতনা আমিন হাওলাদকেও ডেকেছিলেন আবু হাসনাত আব্দুল্যাহ। জাপার ওই এমপি ফোনে জিএম কাদের’র পরামর্শ ও যোগদানের অনুমতি চেয়েছিলেন। জিএম কাদের তাকে সাফ জানিয়ে দেন, কোনভাবেই অংশ নেওয়া যাবে না। এক পর‌্যায়ে সাফ জানিয়ে দেন, আবু হাসনাত আব্দুল্যাহ’র ডাকা সভায় যোগ দিলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। পরে ওই সভায় যোগদান থেকে বিরত থাকেন রতনা আমিন হাওলাদার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাপার একাধিক শীর্ষ নেতা বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, বিএনপি জোটে ঝুঁকতে সমর্থন বাড়ছে। তৃণমূলের বড় একটি অংশ চান বিএনপির সঙ্গে জোট হোক। এই মতামতে জিএম কাদের’র সঙ্গে গাটছড়া রয়েছেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব শেখ সিরাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে নির্বাচিত লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি ও অ্যাড. রেজাউল ইসলাম ভূইয়া।

এই গ্রুপটি মনে করে, আওয়ামী লীগ তাদের সঙ্গে সঠিক আচরণ করেনি। জাপার সমর্থনের কারণে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সাল ক্ষমতায় এসেছিল। এরপর ২০০৮ সাল থেকে টানা ক্ষমতায় রয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকেও তারা সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত। জাপাকে ভেঙে টুকরো করতে ভূমিকা রেখেছে আওয়ামী লীগ। তাদের ধারণা আগামীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারছে না। তাই তাদের সঙ্গে থাকার কোন মানে হয় না।

বিএনপির সঙ্গে জোট করা পক্ষের নেতাদের মধ্যে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি ও লিয়াকত হোসেন খোকা এমপিকে স্বপক্ষ ত্যাগী বিবেচনা করা হয়। দু’জনেই আওয়ামী লীগঘেষা হিসেবে পরিচিত। আনিসুল ইসলামের স্বপক্ষ ত্যাগ রহস্যাবৃত হলেও লিয়াকত হোসেন খোকার স্বপক্ষ ত্যাগের বিষয়টি বেশ ওপেন সিক্রেট।

হেফাজত নেতা মামুনুল হকের রিসোর্ট কাণ্ডে খোকার ইন্ধন ছিল বলে কথিত রয়েছে। তখন জাপার বেশকিছু নেতাকর্মীর নামে মামলাও হয়। তখন থেকেই সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে খোকার। আরেকটি বিষয় রয়েছে, সৌদির রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ দেশে ফেরা। রওশন এরশাদের সবচেয়ে আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত মসিহ জন্মস্থান খোকার নির্বাচনী এলাকায়। গোলাম মসিহ অনেকদিন ধরেই নির্বাচনের জন্য দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। রওশন এরশাদের নেতৃত্বে কিছু ঘটলে খোকার কপাল পুড়তে পারে, আর সরকারের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছেই। এসব কারণে খোকা বিএনপির দিকে টার্ন নেওয়ার পক্ষ নিয়েছেন বলে মনে করেন কেউ কেউ।

আরেকটি গ্রুপ রয়েছে যারা আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট গড়ার পক্ষে। এই মতাদর্শের নেতারা রওশন এরশাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখে চলছেন বলে জানা গেছে। মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, সেলিম ওসমান এমপি, পীর মেজবাহ এমপিসহ অনেকে প্রভাবশালীদের নাম শোনা যাচ্ছে।

দলীয় সুত্র জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনের জোট ইস্যুতে ইতোমধ্যেই সিনিয়র নেতাদের মধ্যে মত পার্থক্য বাড়তে শুরু করেছেন। এক গ্রুপ চাচ্ছেন বিএনপির দিকে ঝুঁকতে, অন্যদল চাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে দর কষাকষি করে ভাগ বাড়াতে।

ব্যাংককে চিকিৎসাধীন রওশন এরশাদ চলতি মাসেই দেশে ফিরতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেছে। তিনি দেশে ফিরলে মেরুকরণ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। বিগত কাউন্সিলে রওশন এরশাদকে প্রধান পৃষ্টপোষক করার পক্ষ থেকে জাপার কোন প্রোগ্রামে দেখা যায় নি এরশাদের সহধর্মীনীকে। অন্যদিকে হঠাৎ করে জিএম কাদের’র এর কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করে গাজীপুর কোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে করে জাপা কি আবার ভাঙনের মুখে এমন প্রশ্নই সামনে চলে এসেছে।

   

অর্ধযুগেও হয়নি জাবি ছাত্রদলের কমিটি



মাহমুদুল হাসান (জাবি প্রতিনিধি) বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মেয়াদোত্তীর্ণের অর্ধযুগ পেরিয়ে গেলেও নানা জটিলতায় গঠিত হচ্ছে না জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের কমিটি। এর আগে ২০১৬ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারী সোহেল রানাকে সভাপতি ও আব্দুর রহিম সৈকতকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটির ঘোষণা করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ।

এরপর কমিটি বিলুপ্তির একমাসের মধ্যে নতুন কমিটি ঘোষনার কথা উল্লেখ করে ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর সোহেল-সৈকতের নেতৃত্বাধীন কমিটির বিলুপ্তি ঘোষনা করা হয়।

পূর্বের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আর কোনো কমিটি গঠিত না হলেও এই সময়সীমার মধ্যে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি কমিটি গঠিত হয়েছে।

এরপরও অজানা কারণে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের গড়িমসি বিলম্বিত করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি গঠনে।

এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি গঠনের জন্য তিনবার কর্মী সম্মেলন করেছেন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দ। সর্বশেষ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে মতবিনিময় করেন বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল। এ সময় তিনি খুব শীঘ্রই নতুন কমিটি করবেন বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেন। তবে তার সে আশ্বাসও আলোর মুখ দেখেনি।

তবে দীর্ঘদিন কমিটি না থাকলেও কেন্দ্রীয় সকল কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশগ্রহন করতে দেখা গেছে যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি পারভেজ মল্লিকের অনুসারীদের।

হরতাল-অবরোধ কর্মসূচীতে ঢাকার সুপার ইউনিট খ্যাত সকল ইউনিটের ন্যায় কর্মসূচী পালন করেতে রাজপথে অবস্থান করতে দেখা যায় পারভেজ মল্লিকের অনুসারী ক্যাম্পাসের বর্তমান নেতা-কর্মীদের।

জাতীয় নির্বাচনকালীন চলতে থাকা অবরোধ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ ৮টি গেইট একই সময়ে তালা ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবরুদ্ধ করে রাখে তার অনুসারীরা। পরবর্তীতে যেটি দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা-কর্মীদের অনুকরণ করতে দেখা যায়। কর্মসূচিটি দেশে প্রায় শতাধিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হয়েছিল।

কমিটি গঠনে বিলম্ব : উদাসীনতা না জটিলতা?

কারণ অনুসন্ধানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বললে নানা প্রতিবন্ধকতার বিষয় উঠে আসে। নেতা-কর্মীদের অনেকে মনে করেন আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হলেও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতৃত্ব প্রদানের আগ্রহীরা দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থান করতে পারে না এবং তারা দীর্ঘদিন পূর্বেই তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ্যক্রম শেষ করেছে।

আবার অনেকেই মনে করেন শিক্ষকেরা অধিকতর জুনিয়র ছাত্রদের কমিটিতে আনতে আগ্রহী বলে কমিটি গঠন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে থাকতে পারেন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারিতে সোহেল রানাকে সভাপতি ও আব্দুর রহিম সৈকতকে সাধারণ সম্পাদক করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের ১৯ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষিত হয়।

এরপর ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সেই কমিটির সভাপতি সোহেল রানাকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর থেকে সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকতের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৫টি কলেজ ও ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এ তালিকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির নাম উল্লেখ থাকায় সেই সময়কার সোহেল-সৈকতের নেতৃত্বাধীন কমিটিও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

এ ছাড়া কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণার বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, এক মাসের মধ্যে অর্থাৎ সে বছরের ১৫ ই নভেম্বরের মধ্যে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। এরপর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একাধিকবার কমিটির পুনর্বিন্যাস হলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় সংসদের কোনো সদিচ্ছা লক্ষ্য করা যায়নি।

এদিকে মেয়াদোত্তীর্ণের দীর্ঘ ৬ বছরের বেশী সময় পার হলেও একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি না হওয়াকে কারো কারো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের প্রচেষ্টা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই।

তৎকালীন শ্রাবণ-জুয়েলের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কমিটির সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটির দায়িত্বে ছিলেন সিনিয়র সহ সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান। সকল বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দের পরামর্শে তিনি একটি প্রস্তাবিত কমিটি তালিকা দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে জমা দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তবে অদৃশ্য কারনে সেই কমিটিও আলোর মুখ দেখেনি। কারণ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকার অনেক তথ্য, যে তথ্যগুলো দীর্ঘদিন যাবৎ অনেকের কাছেই ছিলো অজানা।

নেতাকর্মীদের দৃষ্টিতে কমিটি ঘোষণায় দীর্ঘসূত্রিতার কারন

বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলের স্ত্রী শামীমা পারভীন শিল্পী বর্তমান পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক নেত্রী ছিলেন।

পুলিশের চাকুরিতে কর্মরত থেকেও তিনি তার সাবেক অনুসারীদের পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আগামী নেতৃত্ব গঠন করার জন্য তার স্বামী বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদককে ব্যবহার করছেন। অনেকে এটিকেও কমিটি গঠনে দীর্ঘসূত্রিতার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন।

আবার অনেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা পারভেজ মল্লিকের অনুসারীদের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার জন্যেও এই দীর্ঘসূত্রিতা হতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন।

নেতা-কর্মীদের অনেকের মতেই কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির রকিবুল ইসলাম বকুলের নির্দেশে বিভিন্ন সময় যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা জাবি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পারভেজ মল্লিকের বিরোধীতা করতে অনেককেই অনুপ্রাণিত করে থাকেন।

যত দ্রুত সম্ভব নিয়মিত ছাত্রদের দিয়ে কমিটি গঠন এখন সময়ের দাবী উল্লেখ পূর্বক নেতা-কর্মীরা আরও জানান, ছাত্র রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়, অছাত্র, পোষ্য, ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী ও ঢাকার অধিবাসী ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের কমিটিতে স্থান দিতে একটি মহলকে সক্রিয় হতে দেখা যায় এবং তাদের পক্ষে বিভিন্ন সময় কথা বলতে শোনা যায় বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদককে।

ব্যক্তিগত রাজনৈতিক বিরোধ চরিতার্থ করতে গিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি মুখথুবড়ে পড়ে আছে, যেটি কোনো মহলের জন্যই স্বস্তিকর নয়।


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি গঠনে সংশ্লিষ্টজনদের ভাবনা

কমিটি গঠনের ব্যাপারে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সদ্য সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকত বার্তা২৪.কমকে বলেন, জাবি ছাত্রদলের কমিটি না থাকার পরও কেন্দ্র ঘোষিত হরতাল অবরোধসহ সকল কর্মসূচী যেভাবে পালন করেছে তা অন্য যেকোনো ইউনিটের জন্য অনুকরণীয়। জাবির কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে যোগ্য, ত্যাগী, সক্রিয় এবং ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রত্বের বিষয়টি সংগতি রেখে কমিটি হলে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এই কমিটি ভারসাম্যপূর্ন হবে। এ ছাড়া যারা বাদ পড়বে তাদের সাথে বৈষম্য না করে তাদেরকে যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা উচিৎ।

তিনি আরও বলেন, কমিটি গঠনে জাবির জাতীয়তাবাদী শিক্ষক নেতাদের ও জাবির সাবেক সভাপতি পারভেজ মল্লিক ভাইসহ যেসকল নেতৃবৃন্দ কর্মীদের সার্বিক সহায়তা ও দিকনির্দেশনা দিয়ে ছাত্রদলকে সক্রিয় রেখেছেন তাদের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাবি অফিসার্স সমিতির বর্তমান সভাপতি আব্দুর রহমান বাবুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নিয়মিত কমিটি দেওয়া হলে ছাত্র রাজনীতি বিকশিত হয়। নতুন নতুন নেতা তৈরি হয়। কমিটি না দেওয়াতে রাজনীতিতে বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি হয়, নেতৃত্বে গতিশীলতা আসে না। ঠিক সময়ে কমিটি দিলে এতদিনে দুই-তিনটা কমিটি হয়ে যেত, নতুন নতুন নেতৃত্ব উঠে আসতো, রাজনীতিতে গতিশীলতা আসতো। আমি মনে করি দ্রুতই কমিটি দেয়া উচিত।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও সাবেক ছাত্রদল নেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অভিমত দীর্ঘদিন ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি নাই, এটা দ্রুত হওয়া উচিৎ। কারণ, একটা সংগঠনের কমিটি না থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই সংগঠনটা দূর্বল হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় যাবৎ কমিটি না থাকলে নেতা-কর্মীদের মাঝে একটা হতাশা চলে আসে। যদি কমিটি থাকতো তাহলে ছাত্রদলের জাহাঙ্গীরনগর ইউনিটটা আরও শক্তিশালী হতো। অন্যান্য সংগঠন যদি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারে তাহলে ছাত্রদলও নিশ্চয়ই পারবে, কেননা এ সংগঠন তো নিষিদ্ধ কোনো সংগঠন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনেট মেম্বার হিসেবে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের সহাবস্থানের ব্যাপারে প্রায়ই আমরা সিনেট অধিবেশনে কথা বলি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলসহ অন্যান্য যারাই এখানকার স্টুডেন্ট তাদের স্বার্থে কোন ব্যাঘাত ঘটলে অবশ্যই কথা বলবো। বিষয়গুলো নিয়ে সিনেটে আমাদের কথা বলার একটা সুযোগ থাকে, আমরা যারা জাতীয়তাবাদী প্যানেলের আছি প্রত্যেকেই প্রতিবারই এ নিয়ে কথা বলি। যেহেতু কথা বলার সুযোগ আছে, সিনেটের পরবর্তী অধিবেশনে আমরা এটা নিয়েই কথা বলবো।’

নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে কমিটির রদবদল কাম্য মন্তব্য করে কমিটি গঠনের বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক কামরুল আহসান বার্তা ২৪.কমকে জানান, ‘যেহেতু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় সেহেতু ছাত্রত্ব থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিয়মিত কমিটি গঠিত হলে সেটি অধিক কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে ছাত্রনেতারা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে যারা রাজনীতি করেন তারা প্রত্যাশা করেন কমিটি পাওয়ার। তবে ছাত্রদলের কমিটি প্রদানে দীর্ঘসূত্রিতার দায়ভার কিন্তু শিক্ষার্থীদের না। আমি মনে করি যারা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে, সংগঠনের স্বার্থে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের রাজনীতি যারা করছেন তাদেরকে ও বর্তমান শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে নতুন কমিটি গঠনের ব্যাপারে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাবা উচিৎ।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এতোদিন কমিটি না দেয়ার দায় আমাদের উপর-ও বর্তায় মন্তব্য করে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বার্তা২৪.কমকে জানান, ‘এটা সত্য বেশ কয়েক বছর যাবত আমাদের অন্যতম সুপার ইউনিট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আমরা কমিটি ঘোষনা করতে পারিনি। তবে আমরা খুব দ্রুতই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি গঠন করতে পারবো বলে আশাবাদী। এ নিয়ে আমরা কাজ-ও শুরু করেছি। এ ছাড়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও আমাদেরকে এ ব্যাপারে দ্রুত কাজ করার ব্যাপারে তাগাদা দিয়েছেন।’

কমিটিতে কারা থাকছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘সিনিয়র-জুনিয়র যেই আসুক শিক্ষার্থীদের কল্যাণে, সংগঠনের স্বার্থে যারা কাজ করবেন তাদের নিয়েই কমিটি গঠন করা হবে। এক্ষেত্রে আমরা সকলের মতামতের প্রেক্ষিতে গ্রহণযোগ্য পথ বিবেচনায় নিবো।’

খুব দ্রুতই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষনার হবে মন্তব্য করে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘দেশের অগনতান্ত্রিক পরিবেশসহ রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে এতোদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি দিতে পারিনি। এখন জেলা কমিটিগুলো দেওয়ার কাজ চলছে। দুই-তিনটে জেলা কমিটি হয়ে যাওয়ার পরই আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করে দেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘সকল সংকট উপেক্ষা করে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী তাদেরসহ গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ছাত্রলীগের হামল-মামলা উপেক্ষা করে যারা রাজপথে থেকে এতোদিন ছাত্রদলের রাজনীতি করে গেছেন, তাদের নিয়ে শীঘ্রই কমিটি দিতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী।’

এদিকে কমিটি গঠনে বিলম্ব, দীর্ঘসূত্রিতা ও সার্বিক বিষয়ে জানতে বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের দুইবারের সাবেক সভাপতি পারভেজ মল্লিকের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

;

চন্দ্রগঞ্জ থানা আ.লীগের সভাপতি-সম্পাদককে শোকজ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম লক্ষ্মীপুর
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

রবিবার (৫ মে) রাতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন স্বাক্ষরিত একটি শোকজের কপি প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে।

জানা গেছে, পূর্ব অবহিতকরণ ছাড়া চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন হাজিরপাড়া ইউনিয়নের একটি আহ্বায়ক কমিটি ফেসবুকে পোস্ট করেন।

এতে পূর্বের কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে পূর্বের কমিটি ভেঙ্গে নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি দেওয়ায় চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

এদিকে, চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে ফেসবুকে ওই ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের শোকজ নোটিশকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে অভিযোগকারী হাজিরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী ভূঁইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ দায়েরের কথা স্বীকার করেন। এ ছাড়া তিনি এ বিষয়ে অন্য কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরীকে মুঠোফোনে কল করে পাওয়া যায়নি।

তবে সাধারন সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব জানান, কেন্দ্রের কোন চিঠি তারা পাননি। চিঠি পাওয়ার আগে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য দিতে রাজি নন তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, কেন্দ্রীয় চিঠির বিষয়টি অবগত হয়েছি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সম্মেলন ছাড়া কোন কমিটি ঘোষণা করা করা বেআইনি। সে হিসেবে হাজিরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্বের কমিটি বহাল রয়েছে।

;

টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতা বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতা বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার

টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতা বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে দ্বিতীয় ধাপে টাঙ্গাইলে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে বিএনপির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান তালুকাদার বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার (০৫ মে) দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শনিবার (০৪ মে) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।

বহিষ্কৃত নেতা মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলু উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি ও গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের তিন বারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান।

জানা যায়, দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ও দলের সকল পর্যায়ের পদসহ প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার হন তিনি।

উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলুকে গত ২ মে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করে দলের হাই কমান্ড এবং চিঠি প্রাপ্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে চিঠির জবাব দেয়নি।

উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছি। বহিষ্কারে কোনো চিঠি পাইনি।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলুকে কেন্দ্রীয় থেকে তার উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি পদসহ প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

;

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সোমবার ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে ছাত্রলীগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোমবার বেলা ১১টায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেশটির পতাকা উত্তোলন করবে ছাত্রলীগ।

রোববার (৫ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

এর আগে, শনিবার (৪ মে) দুপুরে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি ও নিরীহ মানুষের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিকদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ সংহতি প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ন্যায্যতা-ন্যায়-মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উপর পরিচালিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থী সমাজ, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিকরা যে আন্দোলনের সূচনা করেছে তার প্রতি সংহতি প্রকাশ করছে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী শহিদের রক্তস্নাত সংগঠন ছাত্রলীগ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পৃথিবী আজ দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে শোষক শ্রেণি, আরেক ভাগে শোষিত। আমি শোষিতের দলে। চলার পথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই দৃঢ় ঘোষণাকে সদা ধারণ করে আমরা বিশ্বব্যাপী চলমান এই ন্যায্যতার আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করি।

আরও বলা হয়, নিরীহ-নিরাপরাধ ফিলিস্তিন নাগরিকদের সাথে পরিচালিত জঘন্য হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন পরিচালনা করছে, আন্দোলন-প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাঁধা-নির্যাতনের সম্মুখীন হচ্ছে তা গভীরভাবে অনুধাবন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ থেকে ৫৩ বছর আগে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সময় এবং তৎপরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার স্বার্থে নানা সময় আন্দোলন করতে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং এর নেতাকর্মীরা একই রকম প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছিলো। কেবলমাত্র স্বাধীনতা সংগ্রামেই ছাত্রলীগের সাড়ে ১৭ হাজার নেতাকর্মীকে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন করতে হয়েছিলো।

বাংলাদেশ ফিলিস্তিনিদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব দরবারে সদা-সর্বদা ক্রিয়াশীল একটি রাষ্ট্র উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম দিক ছিলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা অর্জন। একইভাবে তাঁর কন্যা বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অবিকল্প সারথি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিশ্ব মানচিত্রে যে বলিষ্ঠতার সাথে ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের দাবী উত্থাপন করেছেন, তা অতুলনীয়-অভাবনীয়। তাঁদের পদাঙ্কন অনুসরণ করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ১৯৪ নং রেজুলেশন এবং নিরাপত্তা পরিষদের ২৪২ ও ৩৩৮ নং রেজুলেশনে বর্ণিত দ্বি-রাষ্ট্র সামাধানের মাধ্যমে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে শান্তির প্রতি আমাদের অকুণ্ঠ সমর্থন।

;