‘অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
‘অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে’

‘অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে’

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপিকে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আগামী নির্বাচনে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাচিপ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।

সরকারকে টিকিয়ে রাখতে নির্বাচন কমিশন ইভিএম পদ্ধতি নিয়েছে বলে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব সরকারের পরিবর্তন যদি চান সোজাসুজি কথা হলো, পরিষ্কার বক্তব্য হলো নির্বাচনে আসতে হবে, নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তনের আর কোন সুযোগ নেই।

“স্থানীয় সরকারের পরীক্ষামূলক ভাবে অনেকগুলো নির্বাচন এই ইভিএমে হয়েছে। এগুলো কি প্রশ্নবিদ্ধ ছিল? বলুন? সিটি করপোরেশন গুলোতেও হয়েছে, সিলেটে হয়েছে, বরিশালে হয়েছে, কুমিল্লাতে হয়েছে। কেউ কি কোন প্রশ্ন করেছে? আমরা জালিয়াতি মুক্ত কারচুপি মুক্ত। সিল মারামারি নির্বাচন চাই না, সে জন্যই ইভিএম চাই।যারা সিল মারামারি নির্বাচনে অভ্যস্ত, যারা নির্বাচন বলতে কেন্দ্র দখল, যারা নির্বাচন বলতে ব্যালট পেপারে সিল মারা এটা বুঝে, যারা নির্বাচন বলতে ভোট কারচুপি বুঝে, ভোট জালিয়াতি বুঝে তারা ইভিএমকে সমর্থন অনেকেই করে না। আমি বিএনপির কথাই বলছি।”

বিএনপির মনে আসলে কি জানতে চেয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা এক দিকে বলে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে নির্বাচনে আসবে না, ইভিএম আসবে না, ইভিএম চান না। তাহলে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে কেন গেলেন না? ওখানে গিয়ে বলতেন।

তাহলে আপনাদের মনে কি? আপনাদের মনে কোন খেলা? কোন চক্রান্তের খেলা? কি চান আপনারা? নির্বাচন চান না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালতের রায়ে বিদায় নিয়েছে, আবার সেখানে যেতে চান? দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় এখানেও রুটিন দায়িত্ব নিয়ে সরকার নির্বাচনে সহযোগিতা করবে। আর নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।”

বিএনপি নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে আসবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আসবেন (নির্বাচনে), আসতে হবে, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে চাইলে আসতে হবে। আমরা কারও দয়ায় টিকে থাকতে চাই না। জনগণ আমাদের ক্ষমতার উৎস। জনগণ ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত না করলে আমরা কি দায় নেব। আমরা কারও দয়ায় বা নির্বাচন কমিশনের ইভিএম দিয়েছে এইসব দেখে আমরা রাজনীতি করি না। পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই।”

বর্তমান সরকারের কাছ থেকে জনগণ মুক্তি চায় বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “জনগণ মুক্তি চায় না, মুক্তি বিএনপি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার। একটা পদ্মা সেতুতেই কাত হয়ে গেছে। একটা পদ্মা সেতুতেই আপনাদের বুকের ব্যথা বেড়ে গেছে। সামনে মেট্রো রেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কর্ণফুলি টানেল, সামনে এলিভেটেড এক্সপ্রেস, আরও কত প্রকল্প।”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাচিপের শাখার সভাপতি আবু নাসার রিজভীর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও বিএমএ এর সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আওয়ামী লীগের স্বাস্ত্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় স্বাচিপের সভাপতি ইকবাল আর্সেনাল, সাধারণ সম্পাদক এম এ আজিজ বক্তব্য রাখেন।

   

চন্দ্রগঞ্জ থানা আ.লীগের সভাপতি-সম্পাদককে শোকজ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম লক্ষ্মীপুর
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

রবিবার (৫ মে) রাতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন স্বাক্ষরিত একটি শোকজের কপি প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে।

জানা গেছে, পূর্ব অবহিতকরণ ছাড়া চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন হাজিরপাড়া ইউনিয়নের একটি আহ্বায়ক কমিটি ফেসবুকে পোস্ট করেন।

এতে পূর্বের কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে পূর্বের কমিটি ভেঙ্গে নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি দেওয়ায় চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

এদিকে, চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে ফেসবুকে ওই ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের শোকজ নোটিশকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে অভিযোগকারী হাজিরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী ভূঁইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ দায়েরের কথা স্বীকার করেন। এ ছাড়া তিনি এ বিষয়ে অন্য কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরীকে মুঠোফোনে কল করে পাওয়া যায়নি।

তবে সাধারন সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব জানান, কেন্দ্রের কোন চিঠি তারা পাননি। চিঠি পাওয়ার আগে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য দিতে রাজি নন তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, কেন্দ্রীয় চিঠির বিষয়টি অবগত হয়েছি। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সম্মেলন ছাড়া কোন কমিটি ঘোষণা করা করা বেআইনি। সে হিসেবে হাজিরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্বের কমিটি বহাল রয়েছে।

;

টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতা বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতা বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার

টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতা বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে দ্বিতীয় ধাপে টাঙ্গাইলে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে বিএনপির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান তালুকাদার বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার (০৫ মে) দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শনিবার (০৪ মে) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।

বহিষ্কৃত নেতা মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলু উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি ও গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের তিন বারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান।

জানা যায়, দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ও দলের সকল পর্যায়ের পদসহ প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার হন তিনি।

উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলুকে গত ২ মে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করে দলের হাই কমান্ড এবং চিঠি প্রাপ্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে চিঠির জবাব দেয়নি।

উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছি। বহিষ্কারে কোনো চিঠি পাইনি।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলুকে কেন্দ্রীয় থেকে তার উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি পদসহ প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

;

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সোমবার ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে ছাত্রলীগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোমবার বেলা ১১টায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেশটির পতাকা উত্তোলন করবে ছাত্রলীগ।

রোববার (৫ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

এর আগে, শনিবার (৪ মে) দুপুরে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি ও নিরীহ মানুষের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিকদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ সংহতি প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ন্যায্যতা-ন্যায়-মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উপর পরিচালিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থী সমাজ, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিকরা যে আন্দোলনের সূচনা করেছে তার প্রতি সংহতি প্রকাশ করছে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী শহিদের রক্তস্নাত সংগঠন ছাত্রলীগ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পৃথিবী আজ দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে শোষক শ্রেণি, আরেক ভাগে শোষিত। আমি শোষিতের দলে। চলার পথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই দৃঢ় ঘোষণাকে সদা ধারণ করে আমরা বিশ্বব্যাপী চলমান এই ন্যায্যতার আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করি।

আরও বলা হয়, নিরীহ-নিরাপরাধ ফিলিস্তিন নাগরিকদের সাথে পরিচালিত জঘন্য হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন পরিচালনা করছে, আন্দোলন-প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাঁধা-নির্যাতনের সম্মুখীন হচ্ছে তা গভীরভাবে অনুধাবন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ থেকে ৫৩ বছর আগে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সময় এবং তৎপরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার স্বার্থে নানা সময় আন্দোলন করতে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং এর নেতাকর্মীরা একই রকম প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছিলো। কেবলমাত্র স্বাধীনতা সংগ্রামেই ছাত্রলীগের সাড়ে ১৭ হাজার নেতাকর্মীকে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন করতে হয়েছিলো।

বাংলাদেশ ফিলিস্তিনিদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব দরবারে সদা-সর্বদা ক্রিয়াশীল একটি রাষ্ট্র উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম দিক ছিলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা অর্জন। একইভাবে তাঁর কন্যা বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অবিকল্প সারথি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিশ্ব মানচিত্রে যে বলিষ্ঠতার সাথে ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের দাবী উত্থাপন করেছেন, তা অতুলনীয়-অভাবনীয়। তাঁদের পদাঙ্কন অনুসরণ করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ১৯৪ নং রেজুলেশন এবং নিরাপত্তা পরিষদের ২৪২ ও ৩৩৮ নং রেজুলেশনে বর্ণিত দ্বি-রাষ্ট্র সামাধানের মাধ্যমে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে শান্তির প্রতি আমাদের অকুণ্ঠ সমর্থন।

;

কারিক্যুলামে ইসলামী শিক্ষা বাস্তবায়নে নতুন কমিশন গঠনের দাবি হেফাজতের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রত্যেকটা স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য আলেমদের পরামর্শের আলোকে নতুন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে, হেফাজতে ইসলাম।

রোববার (৫ মে) রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত বর্তমান ‘জাতীয় শিক্ষা কারিক্যুলাম ও নতুন পাঠ্যপুস্তকের বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা এ দাবি জানান।

এসময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে এক বক্তব্যে বলেছেন, ‘শিক্ষাই সবচেয়ে বড় সম্পদ’।

গত রমজান মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে রং তামাশা করেছে, এটাকে কোনো সভ্য জাতি সমর্থন করতে পারে না। কওমি মাদ্রাসাকে যখন স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, সংসদ অধিবেশনে যখন এটা নিয়ে কথা হয়েছে, তখন অনেকে আমাদের নামটাও ভালোভাবে উচ্চারণ করতে পারেনি। একটা জাতিকে ধ্বংস করার মূল হাতিয়ার হলো শিক্ষা এবং সংস্কৃতি।

তারা বলেন, ইসলাম এবং সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার জন্য এদেশে একটা মহল শিক্ষা সিলেবাস নিয়ে পাঁয়তারা করছে। আমরা যখন এগুলো নিয়ে আওয়াজ তুলি, তখন একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়। যারা এদেশ থেকে ইসলামকে ধ্বংস করতে চায়, তাদেরকে নিয়েই এই সাব-কমিটি গঠন করা হয়।

৯০ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশে জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার শিক্ষানীতি শিক্ষা কারিক্যুলাম ও সিলেবাসসহ যতটি শাখা-প্রশাখা রয়েছে, প্রতিটা ক্ষেত্রে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা থাকা উচিত। শিক্ষাব্যবস্থা একটি ব্যাপক বিষয়। শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্মকে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। তাদের ধর্মহীন হিসেবে গড়ে তোলার অপপ্রয়াস চলছে।

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ্ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমাদের জাতীয় পাঠ্যবই নিয়ে একের পর এক বিতর্ক হচ্ছে। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। কোনো জাতিকে পরাজিত করতে হলে সেই জাতির শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করাই যথেষ্ট। আজকে রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে সব দিক থেকে আমরা ‘হিন্দুত্ববাদী’ ও ‘ব্রাহ্মণ্যবাদী’ আগ্রাসনের শিকার। বিধর্মী ও মুশরিকদের চোখে আমাদের সবচেয়ে বড় অপরাধ যে, আমরা মুসলিম। আমাদের ঈমান ও মুসলিম পরিচয়কে তারা ধুলোয় মিশিয়ে দিতে চায়। সেজন্যই আমাদের ধ্বংস করার প্রথম ধাপ হিসেবে ‘হিন্দুত্ববাদীরা’ আমাদের জাতীয় পাঠ্যপুস্তককে টার্গেট করেছে। তাদের ষড়যন্ত্রেই আজকে স্কুল-কলেজ ও সরকারি মাদরাসার পাঠ্যপুস্তকের এই বেহাল দশা।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের জাতীয় পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলামী মূল্যবোধ ও ভাবধারার রচনাপত্র বাদ দিয়ে মুসলিমবিদ্বেষী হিন্দু লেখক ও ইসলামবিদ্বেষী সেকুলার কবি-সাহিত্যিকদের লেখা দিয়ে ভরে ফেলা হয়। তখন বিষয়টি হেফাজতে ইসলামের দৃষ্টিগোচর হয়। পাঠ্যবইয়ের হিন্দুত্বায়ন ঠেকাতে আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণসহ প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানাই যে, পাঠ্যপুস্তককে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে।

বাবুনগরী বলেন, দুঃখজনকভাবে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির নতুন ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে আরো নগ্নভাবে ‘হিন্দুত্ববাদের’ আগ্রাসন দেখা যায়। পাঠ্যপুস্তকের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ‘হিন্দুত্ববাদী’ ইতিহাসের বয়ান ও ‘হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি’ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসলামী মূল্যবোধ ও মুসলমানের কোনো পরিচয় রাখা হয়নি। এছাড়া ইসলামবিরোধী বিবর্তনবাদ তত্ত্ব, পৌত্তলিকতা, গ্রিক দেবদেবীর পরিচয়, হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি, ট্রান্সজেন্ডারিজমের মতো বিকৃত ধ্যানধারণা, ছেলেমেয়ের অবাধ মেলামেশা, পর্দা বিদ্বেষসহ মুসলমানের ঈমানবিরোধী এমন কিছু নেই যা, পাঠ্যবইয়ে ঢোকানো হয়নি। আমাদের কোমলমতি শিশু-কিশোরদের মুসলিম আত্মপরিচয় ও ঈমানি চেতনা ভুলিয়ে দিতেই এসব করা হচ্ছে বলে আমি মনে করি। এটা অনেক বড় ষড়যন্ত্রের অংশ। কারাবন্দি প্রতিবাদী আলেমদের অনুপস্থিতিতেই এসব ঘটানোর দুঃসাহস করেছে ইসলামবিরোধী অপশক্তি।

আমাদের নেতৃবৃন্দকে জেলে ঢুকিয়ে তারা ভেবেছিল, এদেশের আলেম-ওলামাকে স্তব্ধ করা গেছে। এটা কখনো সম্ভব নয়। আমরা সবর করেছি। আমাদের সবর করার মানে এই নয় যে, আমরা চুপ হয়ে গিয়েছি কিংবা পরাজিত হয়েছি। আমাদের সবর বরং আরো দ্বিগুণ শক্তি সঞ্চয়ের সুপ্ত বারুদ মাত্র।

বাবুনগরী বলেন, কাউকে ক্ষমতা থেকে নামানো বা কাউকে ক্ষমতায় বসানো আমাদের কাজ নয়। এদেশের মুসলমানদের ঈমান-আকিদা ও ইসলামী মূল্যবোধ সংরক্ষণ এবং দাওয়াতি কাজই হেফাজতে ইসলামের মূল উদ্দেশ্য।

হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ, ছবি- বার্তা২৪.কম

সুতরাং, আমরা সরকারকে সতর্ক করে বলতে চাই, ক্ষমতায় থাকার লোভে হিন্দুত্ববাদীদের ষড়যন্ত্রের খেলায় দেশকে ঠেলে দেবেন না। এটা ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ। সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মীয় চেতনা, সংস্কৃতি ও স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা সম্ভব নয়। পাঠ্যপুস্তকের হিন্দুতায়ন ঠেকাতে আমরা ওলামায়ে কেরাম ঐক্যবদ্ধ। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে যারা ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের সহযোগী হয়ে কাজ করছে। তাদের অবিলম্বে চিহ্নিত করুন। তাদের বহিষ্কার করে দেশপ্রেমিক ও ইসলামী মূল্যবোধসম্পন্ন দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিন। সেইসঙ্গে নির্ভরযোগ্য বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শের আলোকে পাঠ্যবইয়ের নতুন সংস্কারের ব্যবস্থা করুন।

হেফাজতের আমির বলেন, দেশের সচেতন অভিভাবকদের প্রতি আমাদের আহ্বান, আপনারা আরো সরব হন। ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে আপনাদের সন্তানদের গড়ে তুলতে হলে এই বর্তমান বিতর্কিত পাঠ্যপুস্তক প্রত্যাখ্যানের বিকল্প নেই। ইসলামবিরোধী হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যবই প্রত্যাখ্যান করুন। স্কুলে আপনার সন্তানদের কী শেখানো হচ্ছে, তা জনসম্মুখে তুলে ধরুন। আমাদের জাতীয় পাঠ্যপুস্তক আজ হিন্দুত্ববাদের কবলে পড়েছে। অঙ্কুরেই মুসলমানের ছেলেমেয়েদের ঈমানি চেতনা ধ্বংস করার আয়োজন করা হচ্ছে। সেক্যুলারিজমের নাম দিয়ে ইসলাম নির্মূল করার এই চক্রান্ত আমরা সফল হতে দেবো না।

এসময় হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান সাতটি দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হচ্ছে-

১. 'ইসলামী শিক্ষা বিষয়' প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সকল শাখায় আবশ্যিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

২. দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়ন তথা বোর্ড পরীক্ষায় 'ইসলামী শিক্ষা বিষয়' পুনর্ববহাল করতে হবে।

৩. বিতর্কিত ও প্রত্যাখ্যাত কুরআনবিরোধী বিবর্তনবাদ ও ট্রান্সজেন্ডারবাদসহ ইসলামবিরোধী সকল পাঠ্যরচনা সিলেবাস থেকে অপসারণ করতে হবে।

৪. আরব দেশগুলোর শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য আরবি ভাষায় পাঠদান সর্বস্তরে বাধ্যতামূলক করতে হবে। উল্লেখ্য, ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরাও এ উদ্দেশ্যে আরবি ভাষা শিখে এগিয়ে রয়েছে।

৫. জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের সহযোগীদের চিহ্নিতকরণপূর্বক অপসারণ করে দেশপ্রেমিক ও ইসলামী মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তিদের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।

৬. ভবিষ্যতে বিতর্ক এড়াতে দেশের নির্ভরযোগ্য বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শের আলোকে পাঠ্যবইয়ের পুনর্সংস্করণ করতে হবে।

৭. ২০১৩ থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

আমরা সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের প্রতি আমাদের প্রস্তাব ও যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে দেশের জনগণকে ইসলামবিরোধী ও জাতীয় মূল্যবোধপরিপন্থী এ শিক্ষা কারিক্যুলামের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই।

;