উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে রাজনীতি করে বিএনপি: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ওবায়দুল কাদের/ফাইল ছবি

ওবায়দুল কাদের/ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্বাচনকে ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য ধর্মের মানুষের ওপর প্রভাব সৃষ্টি করতে বিএনপি বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি হলো পাকিস্তানি ভাবাদর্শের রাজনীতি। উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে তারা (বিএনপি) রাজনীতি করে।’

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে‍ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরেরেএক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রবিবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি হলো পাকিস্তানি ভাবাদর্শের রাজনীতি; উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে তারা রাজনীতি করে। ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় উপসনালয়, বাড়ি-ঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সেসময়কার মন্ত্রী, এমপিদের সরাসরি নির্দেশে বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালিয়েছিল বিএনপির সন্ত্রাসীবাহিনী। তাদের পাশবিক অত্যাচারের হাত থেকে শিশু থেকে বৃদ্ধা কেউই রেহাই পায়নি। এখন নির্বাচন যত কাছে আসছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য ধর্মের মানুষের উপর প্রভাব সৃষ্টি করতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং পরোক্ষভাবে তাদের হুমকি দিচ্ছে।’

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডারবাহিনী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিল, তা ইতিহাসে নজিরবিহীন। সারাদেশে প্রায় ৫০ হাজার নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় এক রাতে বিএনপি ক্যাডারবাহিনী কর্তৃক ২০০ জন নারী গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল।’

‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায় শুধু নয়, বিএনপির সন্ত্রাসের শিকার হতে হয়েছে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে। বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে আওয়ামী লীগের ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। অসংখ্য নেতাকর্মী এখনো ক্ষতের দগদগে চিহ্ন বহনের পাশাপাশি মানবেতর জীবযাপন করছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতের বাবরি মসজিদের ঘটনার সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছে। অথচ সেসময় বিএনপির ক্যাডারবাহিনী ও তাদের উৎসাম্প্রদায়িক নোসরদের হামলায় রক্তাক্ত প্রান্তরে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। হিন্দু সম্প্রদায় ও তাদের উপাসনালয়, বাড়ি-ঘরের সুরক্ষা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছিল তৎকালীন বিএনপি সরকার। সে সময় শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই অসংখ্য মন্দির ভাংচুর ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর পৈচাশিক হামলা ও নির্যাতন করা হয়েছিল। শুধু হিন্দু সম্প্রদায়াই নয় বিএনপি তখন সাধারণ মানুষের ন্যূনতম নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি ধর্মকে পুঁজি করে এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির ওপর নির্ভর করে পরিচালিত হয়ে আসছে। যার প্রমাণ ২০০১ পরবর্তী সময়েও পরিলক্ষিত হয়। তাদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ জঙ্গি নেতার সৃষ্টি হয়েছিল। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশ: একুশে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলা এবং একসাথে দেশের ৬৩টি জেলায় পাঁচ শতাধিক স্থানে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়েছিল। মির্জা ফখরুলরা যতই মিথ্যাচার করুক না কেন, বাংলাদেশের মানুষ বিএনপি শাসনামলে তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সেই ভয়াবহ উত্থানের কথা ভুলে যায়নি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমায় ১৯৭১ সালে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি শাসক ও তাদের দোসর সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে পরাজিত করে অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল জাতিরাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের আখরে রচিত পবিত্র সংবিধানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শক্তিশালী ভিত রচিত হয়। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং ধর্ম-বর্ণ জাতি-লিঙ্গ শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়।’

‘আওয়ামী লীগ সেই অঙ্গীকারকে ধারণ করেই রাজনীতি করে আসছে। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, দেশের সকল নাগরিক সমান; সকলের ধর্ম পালনের সমান স্বাধীনতা ও অধিকার রয়েছে। শেখ হাসিনা সেই নীতি অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছেন।’

   

আওয়ামী লীগের ‘গোপন শাস্তি’তে নির্বিকার নেতারা



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে চলছে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। চার ধাপের এই নির্বাচনের প্রথম ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৮ মে। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন মঙ্গলবার (২১ মে)। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ভোটার টানতে বাদ দিয়েছে নিজেদের প্রতীক নৌকা। মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের ওপরও আসে নিষেধাজ্ঞা, নির্দেশ না মানলে দেওয়া হয় শাস্তির হুমকি! তবে সব কিছুকে উপেক্ষা করে নির্বাচন থেকে সরেননি মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা।

দলীয় প্রধান ও কেন্দ্রের কড়া নির্দেশনা উপেক্ষার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, নেতাদের প্রকাশ্য শাস্তি না দেওয়া, লঘু শাস্তি এবং শাস্তি দিয়ে সেটা আবার ক্ষমা করে দেওয়ার মতো ঘটনা কাজ করছে নির্দেশ অমান্যের পিছনে।

অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন যে, কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশনায় দেয়া হউক, যদি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসা যায় তাহলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে না। আবার যেসব নেতাদের জনপ্রিয়তা আছে, জনভিত্তি আছে তারা মনে করছেন, শাস্তি দিলেও সেটা টিকবে না বেশি দিন। লঘু কোন শাস্তি দিলেও দল তার নিজের প্রয়োজনেই ক্ষমা করে সুযোগ করে দিবে আবার।

এদিকে প্রকাশ্যে শাস্তির কথা বললেও সেটার বাস্তবায়ন দেখতে না পাওয়ায় উৎসাহিত করছে দলের নির্দেশ অমান্যের বিষয়ে।

বার বার শাস্তি দেওয়া ও ক্ষমা করার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রথমবারের মতো দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে বহিষ্কার হন তিনি। প্রায় এক বছর পর ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীর আলমের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে ক্ষমা করে দলটি।

তবে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ থেমে থাকেননি গাজীপুরের প্রভাবশালী এ নেতা। গত বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ছিলেন গাজীপুর আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আজমত উল্লাহ খান। সে নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে গিয়ে, আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্য করে প্রার্থিতা জমা দেন নিজের ও মা জায়েদা খাতুনের। এর জেরে আবারও দল থেকে বহিষ্কার করা হয় জাহাঙ্গীর আলমকে। তবে সে বহিষ্কারাদেরশও টেকেনি বেশিদিন। বরং দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমের বিশাল কর্মী বাহিনী কাজে লাগানোর জন্য মাত্র পাঁচ মাস পর প্রত্যাহার করে নেয় বহিষ্কারাদেশও।

দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা ও আদর্শিক স্থান ধরে রাখার স্বার্থে গঠনতন্ত্রে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা থাকলেও তা পালনে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে বরাবরই ঢিলেঢালা নীতি অনুসরণ করতে দেখা যায়। কখনো ব্যবস্থা নিলে সেটাও প্রত্যাহার করা হয় দ্রুতগতিতে। এর মধ্যে আছেন, চার জেলা ও উপজেলা চেয়ারম্যান, সাবেক এমপি, দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাসহ অনেকেই।

যদিও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বলছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের কাউকে কখনো ছাড় দেওয়া হয় না। অনেক সময় কৌশলগত কারণে প্রকাশ্য শাস্তি না দিলেও পরে বড় ধরনের শাস্তিতে পড়তে হয় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের।

এনিয়ে দলটির ভাষ্য, দলীয় নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাসময়ে ব্যবস্থা নেন দলীয় প্রধান। প্রকাশ্যে কোন শাস্তি দিতে দেখা না গেলেও অনেক ক্ষেত্রেই দেওয়া হয় অপ্রকাশ্য শাস্তি। যা প্রকাশ্য শাস্তির চেয়েও বড় হয়। বাদ দেওয়া হয় দলীয় পদ-পদবি থেকেও। দেয়া হয় না মনোনয়ন। বাদ পড়তে হয় মন্ত্রিসভা থেকেও।

গত ১৭ মে বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। যারা ডিসিপ্লিন ভঙ্গ করবে অবশ্যই তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে। শেখ হাসিনার শাস্তি দেওয়ার কায়দা একটু ভিন্ন রকম। যারা বুঝেছেন, পেয়েছেন তারা ঠিকই বুঝেন। আর যারা পাননি তাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।

তিনি বলেন, ‘তার (দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা) নির্দেশনার বাইরে কেউ যেন আমরা কোনো অপকর্ম না করি। অপকর্ম যারা করেন শুদ্ধ হয়ে যান। মনে করছেন চুপচাপ আছে? কেউ শাস্তি পাচ্ছে না কেন? পাবে! শাস্তি পাবে। গত নির্বাচনে ৭৫ জন এমপি নমিনেশন পায়নি। এটিও শাস্তি। কাজেই এখানেই সব শেষ নয়। শাস্তি দেওয়ার অনেক সময় আছে। সময়মতো হিসাব হবে। কেউ রেহাই পাবে না।’

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, প্রকাশ্য শাস্তি যেহেতু দেখা যায়, তাই তার প্রতিক্রিয়াটাও হয় সরাসরি। সেক্ষেত্রে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গে নেতাকর্মীরা নিরুৎসাহিত হয়। আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় থাকায় নানা উপকারভোগী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। ফলে সবসময় চাইলেই সাথে সাথে শাস্তি দেওয়া যায় না। আবার অনেক সময় দলের প্রয়োজনে দ্রুত সময়ে ক্ষমাও করে দিতে হয়। প্রকাশ্যে শাস্তি না পেলেও দলীয় প্রধান কাউকে ছেড়ে দেন না। তিনি সময় মতো ঠিকই ব্যবস্থা নেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নেতারা বলেন, অপ্রকাশ্য শাস্তি দেওয়া হয়, সেটার প্রতিক্রয়া তৃণমূলে পৌঁছায় না। যার ফলাফল আমরা দেখতে পাচ্ছি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। দল থেকে বার বার কড়া নির্দেশনার পরও তৃণমূলে গিয়ে ঠিক সেভাবে পালন হয়নি। এমপি-মন্ত্রীর স্বজনেরা সরে দাঁড়ায়নি নির্বাচন থেকে। তবে রাজনীতি করতে গেলে সকল বাস্তবতা মেনেই করতে হবে। আমরা সে লক্ষেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। যতটা পারা যায় যেনো দলীয় শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখা যায়।

প্রার্থীদের প্রকাশ্য শাস্তি না দেওয়ায় কেন্দ্রের নির্দেশ মানার ব্যাপারে প্রার্থীদের অনীহা আসছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা চাচ্ছি নির্বাচনটা যেনো প্রভাবমুক্ত থাকে। আমরা সে লক্ষেই কাজ করছি। নির্বাচন কমিশন তাদের নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে। তাই আমরা মনে করি এতে কোন সমস্যা হবে না।

;

নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে বহিষ্কার বিএনপির ৩ নেতা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে বহিষ্কার বিএনপির ৩ নেতা

নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে বহিষ্কার বিএনপির ৩ নেতা

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে দলের নির্দেশনা না মেনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী এসএম রাশেদুল আলমের পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করার অভিযোগে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের তিন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সোমবার (২০ মে) হাটহাজারী পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান দৌলতের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

দল থেকে বহিষ্কৃতরা হলেন- তালুকদার হাটহাজারী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও একই ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য সচিব ফখরুল ইসলাম এবং সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শরিফ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপি চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে ভোটাধিকার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করেছে। হাটহাজারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আপনারা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মোটরসাইকেল প্রতীক প্রার্থী এসএম রাশেদুল আলমের পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী সভায় অংশগ্রহণ করেছেন। যার ছবিসহ তথ্য প্রমাণ দফতরে সংরক্ষিত আছে।

এবিষয়ে হাটহাজারী পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মান্নান দৌলত জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

;

রাইসি বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন: জিএম কাদের



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি’র মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

সোমবার (২০ মে) এক শোকবার্তায় প্রয়াতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলী খামেনির প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।

শোকবার্তায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্টসহ প্রয়াত শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুতে শোক এবং শোকার্ত পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানান। ইরান সরকার ও সেদেশের জনসাধারণের প্রতি সহমর্মিতা ও সংহতি প্রকাশ করেছেন তিনি।

শোকবার্তায় বলেন, ইব্রাহিম রাইসি’র মৃত্যু সংবাদে আমরা স্তম্ভিত ও শোকাভিভূত। এমন হৃদয়বিদারক সংবাদ মেনে নেওয়া সহজ নয়। ইরানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করেছেন। ইব্রাহিম রাইসি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অসাম্যান্য অবদান রেখেছেন।

তার কর্মের মাঝেই অমর হয়ে থাকবেন ইব্রাহিম রাইসি। শুধু ইরান নয়, মধ্যপ্রাচ্যের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় ইব্রাহিম রাইসি অক্ষয় হয়ে থাকবেন। ইব্রাহিম রাইসি’র মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হলো তা সহসাই পূরণ হবার নয়।

বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আশা প্রকাশ করে বলেন, ইরান সরকার ও সেদেশের জনগণ অবশ্যই এই শোক কাটিয়ে ইরানকে আরও এগিয়ে নেবেন।

;

দামি ঘড়ি পরা লোকরা রিকশা চালকদের করুণ কাহিনী জানবে কীভাবে: রিজভী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

যাদের ঘড়ি এবং সানগ্লাসের দাম লক্ষ লক্ষ টাকা তারা কি করে ব্যাটারি চালিত রিকশা চালকদের করুন কাহিনি জানবে- বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (২০ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক চা দিবস ও 'মুল্লুক চলো' আন্দোলন উপলক্ষে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, 'হঠাৎ করে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধ করে দিলেন ওবায়দুল কাদের সাহেব। তিনি নিজেই বলেছেন তার হাতের যে ঘড়ি এই ঘড়ির দাম অনেক টাকা। অনেক মানুষ বলে ৫০ লাখ টাকা। তিনি যে সানগ্লাস পড়েন সেটারও অনেক দাম লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। যার সানগ্লাসের দাম এত, ঘড়ির দাম ৫০ লাখ টাকার উপরে তিনি এই ব্যাটারি চালিত রিকশাওয়ালাদেরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন। তিনি কীভাবে তাদের মর্ম বুঝবেন। উনি কি জানেন এরা একবেলা খায় নাকি দুই বেলা খায়? ওবায়দুল কাদের কি জানেন তারা যে পরিশ্রম করে রিকশা চালায় সেই টাকা দিয়ে সেই উপার্জন দিয়ে তার সন্তানদেরকে স্কুলে পাঠাতে পারে কিনা?'

রিজভী আরও বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সন্তানরা তো বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে। কেউ বলে দুবাইয়ে, কেউ বলে কানাডায় আবার কেউ বলে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম এবং বিভিন্ন ধরনের বাড়ি তারা সেখানে নির্মাণ করেছেন। তারা তো এদের বিষয়ে জানেনা। এ অসহায় মানুষগুলো এক বেলা চাল কিনতে পারছে না। যে দেশে আলুর দাম এই সিজনেও ৫০ টাকা এটা কি ওবায়দুল কাদের সাহেব জানেন? ওবায়দুল কাদের সাহেব জানেন না উনার নেত্রী শেখ হাসিনাও জানেন না। কারণ ওনাদের প্রত্যেকটি নেতা এবং তাদের আত্মীয়-স্বজন বিদ্যুৎ খাত থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে গেছে। বিভিন্ন উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন। শুধু টাকা পাচারের এই আরব্য উপন্যাসের কাহিনী প্রতিদিন আমরা সংবাদপত্রের পাতায় পড়ছি। সুতরাং তারা কি করে ওই ব্যাটারি চালিত রিকশাওয়ালাদের করুণ কাহিনী জানবে।'

ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, 'এই ব্যাটারি চালিত রিকশা নিশ্চয়ই কোন দেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। এই আমদানি করার লাইসেন্স কে দিল? ঢাকাসহ প্রতিটি শহরেই আমি দেখেছি এই ব্যাটারি চালিত যান চলাচল তাদেরকে এই রোড পারমিশন কারা দিল? আপনার সরকারই দিয়েছে। এগুলো যারা ইমপোর্ট করেছে তারা তো আওয়ামী লীগের লোক। তারা তো আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী। আর যারা ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছে তাদেরই দোষ হয়ে গেল?আপনাদের পেট ভরে বদ হজম হবে তারপরও আপনাদের টাকা দরকার। তারপরও এরা কিন্তু এমনি এমনি চালাতে পারে না। আপনার প্রশাসনের লোকদেরকে টাকা দিতে হয়, স্থানীয় যুবলীগ ছাত্রলীগকে চাঁদা দিতে হয়। এত ঘাটে ঘাটে টাকা দেওয়ার পরও যতটুকু তাদের উপার্জন হয় সেটা দিয়ে কোনোরকমে তারা দিন যাপন করে। আর এদের উপরেই আপনারা চালাচ্ছেন স্টিম রোলার। এদের উপরই আওয়ামী লীগের তরবারি মাথার উপর ঝুলছে।ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি গরিবের আহার কেড়ে নিয়ে, ভাত কেড়ে নিয়ে আপনি রাজত্ব করবেন। আপনারা স্বর্গে বসবাস করবেন, ওই স্বর্গ থেকে আপনাদের বিদায় নিতেই হবে। ওই স্বর্গে আপনারা আর বেশি দিন বসবাস করতে পারবেন না।'

শেয়ার বাজারেও নতুন করে ধস নেমেছে উল্লেখ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, 'তরুণ শিক্ষিত যুবকেরা, অল্প আয়ের মানুষেরা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করে, সেই শেয়ার মার্কেটেও আবার নতুন করে এমন পতন হচ্ছে। ওই পতন থেকে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না শেয়ার মার্কেট। এতে বেকার হচ্ছে তরুণরা-যুবকেরা। তারা এখন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে ফতুর হয়ে গেছেন।'

তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা অনেক কথা বলেন, আমি এই করেছি সেই করেছি, এত উন্নয়ন করেছি। এগুলোতো উনার হচ্ছে গলাবাজি আর উনার নেতা মন্ত্রীদের চাপাবাজির কথা। দিন দিন কত মানুষকে যে ওনারা গরীব বানিয়েছেন, গরিব থেকে চরম গরিব বানাচ্ছেন সেইটা তারা কোনদিনও বলেন না। তারা বলবেন কি করে! এবারও বাজেটে ভর্তুকি বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুৎ খাত থেকে সব খাতে। কারণ ভর্তুকি না দিলে বিদ্যুৎখাতের যে দেনা সেই দেনা তারা পরিশোধ করতে পারবে না। আইএমএফ থেকে শুরু করে অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদেরকে শর্ত দিচ্ছে। শর্ত দেওয়ার পরেও তারা ভর্তুকি বাড়াচ্ছে। এই ভর্তুকি কে দেয়? এটা কি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার টাকা দিয়ে চলে? এই গরিব মানুষ এই শ্রমজীবী মানুষদের ঘরের টাকায় এই ভর্তুকি দেয়া হয়।'

রিজভী আরও বলেন, 'আজকের এই দিনে ঘুমন্ত চা শ্রমিকদের উপর গুলি চালায় ইংরেজ শাসকদের এ দেশীয় তাবেদার পুলিশ বাহিনী। তাদের এই আক্রমণের মধ্য দিয়ে অধিকার আদায়ের যে তীব্র আকুতি যে আকাঙ্ক্ষা আজও বাংলার আকাশে বাতাসে, বাংলার নদী নালায় যে দাবি প্রবাহিত হয় সেখান থেকে এখনো তাদের আওয়াজ মুছে যায়নি। আজও এদেশের নিপীড়িত মানুষকে এক বেলা খাবারের জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয়। সেদিনের সেই মুল্লুক চলো আন্দোলন যে শিক্ষা দিয়েছে সেই শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিপীড়িত নির্যাতিত শ্রমজীবী মানুষ লড়াই করছে।'

জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি'র চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খানসহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

;