অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিরোধে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে: প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সৌজন্যে: ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সৌজন্যে: ফোকাস বাংলা

  • Font increase
  • Font Decrease

আবারও ফিরে এসেছে বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস ও হত্যাকাণ্ড। এর বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কারও উপর নির্ভর করলে চলবে না। এর বিরুদ্ধে জনগণকেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবসের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তার পুরনো রূপে ফিরে এসেছে। জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের মাধ্যমে তারা সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। একটা নিরীহ পুলিশকে সকলের সামনে নির্মমভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। কতটা অমানবিক তারা। তাদের এই ঘটনা এবারই প্রথম না। এর আগেও তারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা, আগুন পোড়ানো, গাড়ি, অফিস-আদালত, রেল-লঞ্চ কি বাদ দিয়েছে তারা, সবই আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। হাজার হাজার গাছ কেটে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ যখনই প্রতিরোধ করেছে, তখনই তারা থেমে গিয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র কখনও সফল হতে দেওয়া হবে না। ২০১৩ সালেও তারা নির্বাচন বানচাল করতে ৫২৫টি স্কুল পুড়িয়ে দিয়েছিল। যেখানে নির্বাচনী কেন্দ্র ছিল। তারপরও কিন্তু নির্বাচন থামাতে পারেনি। তারা জানে যে নির্বাচন করলে কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। কারণ ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ৩০টি পেয়েছিল। আর এখন তাদের অপকর্মের জন্য মানুষ তো আরও তাদের প্রতি বিমুখ। আর নির্বাচন কাকে নিয়ে করবে? নির্বাচন করলে তাদের নেতা কে? কাকে প্রধানমন্ত্রী করবে, কাকে দিয়ে মন্ত্রিসভা করবে? বিএনপির চেয়ারপারসন (খালেদা জিয়া) তো এতিমের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। আর তারেক রহমান তো অস্ত্র ও মানিলন্ডারিং মামলায় সাজাপ্রাপ্ত।

এসময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সকল সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবরোধের নামে বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস করছে। এতে অনেক মানুষ মারা গিয়েছে। আর যাতে এমন কোন ঘটনা তারা ঘটাতে না পারে সেজন্য নেতাকর্মীদের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, যদি কেউ আগুন দেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে তাহলে সাথে সাথে তাকে ওই আগুনেই ফেলতে হবে, হাত পুড়িয়ে দিতে হবে। যে হাত দিয়ে আগুন দেবে, সেই হাতই পোড়াতে হবে। তাহলে এরা সোজা হবে, নাহলে সোজা হবে না। কারণ, যে যেমন তার সঙ্গে তেমনই করতে হবে।

   

টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতা বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতা বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার

টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতা বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে দ্বিতীয় ধাপে টাঙ্গাইলে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে বিএনপির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান তালুকাদার বাবলুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার (০৫ মে) দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শনিবার (০৪ মে) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।

বহিষ্কৃত নেতা মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলু উপজেলা বিএনপি সহ-সভাপতি ও গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের তিন বারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান।

জানা যায়, দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ও দলের সকল পর্যায়ের পদসহ প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার হন তিনি।

উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সেলিমুজ্জামান তালুকদার সেলু বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলুকে গত ২ মে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করে দলের হাই কমান্ড এবং চিঠি প্রাপ্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে চিঠির জবাব দেয়নি।

উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছি। বহিষ্কারে কোনো চিঠি পাইনি।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলুকে কেন্দ্রীয় থেকে তার উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি পদসহ প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

;

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সোমবার ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে ছাত্রলীগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোমবার বেলা ১১টায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেশটির পতাকা উত্তোলন করবে ছাত্রলীগ।

রোববার (৫ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

এর আগে, শনিবার (৪ মে) দুপুরে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি ও নিরীহ মানুষের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিকদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ সংহতি প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ন্যায্যতা-ন্যায়-মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উপর পরিচালিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থী সমাজ, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিকরা যে আন্দোলনের সূচনা করেছে তার প্রতি সংহতি প্রকাশ করছে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী শহিদের রক্তস্নাত সংগঠন ছাত্রলীগ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পৃথিবী আজ দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে শোষক শ্রেণি, আরেক ভাগে শোষিত। আমি শোষিতের দলে। চলার পথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই দৃঢ় ঘোষণাকে সদা ধারণ করে আমরা বিশ্বব্যাপী চলমান এই ন্যায্যতার আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করি।

আরও বলা হয়, নিরীহ-নিরাপরাধ ফিলিস্তিন নাগরিকদের সাথে পরিচালিত জঘন্য হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন পরিচালনা করছে, আন্দোলন-প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাঁধা-নির্যাতনের সম্মুখীন হচ্ছে তা গভীরভাবে অনুধাবন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ থেকে ৫৩ বছর আগে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সময় এবং তৎপরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার স্বার্থে নানা সময় আন্দোলন করতে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং এর নেতাকর্মীরা একই রকম প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছিলো। কেবলমাত্র স্বাধীনতা সংগ্রামেই ছাত্রলীগের সাড়ে ১৭ হাজার নেতাকর্মীকে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন করতে হয়েছিলো।

বাংলাদেশ ফিলিস্তিনিদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব দরবারে সদা-সর্বদা ক্রিয়াশীল একটি রাষ্ট্র উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম দিক ছিলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা অর্জন। একইভাবে তাঁর কন্যা বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অবিকল্প সারথি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিশ্ব মানচিত্রে যে বলিষ্ঠতার সাথে ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের দাবী উত্থাপন করেছেন, তা অতুলনীয়-অভাবনীয়। তাঁদের পদাঙ্কন অনুসরণ করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ১৯৪ নং রেজুলেশন এবং নিরাপত্তা পরিষদের ২৪২ ও ৩৩৮ নং রেজুলেশনে বর্ণিত দ্বি-রাষ্ট্র সামাধানের মাধ্যমে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে শান্তির প্রতি আমাদের অকুণ্ঠ সমর্থন।

;

কারিক্যুলামে ইসলামী শিক্ষা বাস্তবায়নে নতুন কমিশন গঠনের দাবি হেফাজতের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রত্যেকটা স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য আলেমদের পরামর্শের আলোকে নতুন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে, হেফাজতে ইসলাম।

রোববার (৫ মে) রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত বর্তমান ‘জাতীয় শিক্ষা কারিক্যুলাম ও নতুন পাঠ্যপুস্তকের বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা এ দাবি জানান।

এসময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে এক বক্তব্যে বলেছেন, ‘শিক্ষাই সবচেয়ে বড় সম্পদ’।

গত রমজান মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে রং তামাশা করেছে, এটাকে কোনো সভ্য জাতি সমর্থন করতে পারে না। কওমি মাদ্রাসাকে যখন স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, সংসদ অধিবেশনে যখন এটা নিয়ে কথা হয়েছে, তখন অনেকে আমাদের নামটাও ভালোভাবে উচ্চারণ করতে পারেনি। একটা জাতিকে ধ্বংস করার মূল হাতিয়ার হলো শিক্ষা এবং সংস্কৃতি।

তারা বলেন, ইসলাম এবং সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার জন্য এদেশে একটা মহল শিক্ষা সিলেবাস নিয়ে পাঁয়তারা করছে। আমরা যখন এগুলো নিয়ে আওয়াজ তুলি, তখন একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়। যারা এদেশ থেকে ইসলামকে ধ্বংস করতে চায়, তাদেরকে নিয়েই এই সাব-কমিটি গঠন করা হয়।

৯০ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশে জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার শিক্ষানীতি শিক্ষা কারিক্যুলাম ও সিলেবাসসহ যতটি শাখা-প্রশাখা রয়েছে, প্রতিটা ক্ষেত্রে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা থাকা উচিত। শিক্ষাব্যবস্থা একটি ব্যাপক বিষয়। শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্মকে ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। তাদের ধর্মহীন হিসেবে গড়ে তোলার অপপ্রয়াস চলছে।

হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ্ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমাদের জাতীয় পাঠ্যবই নিয়ে একের পর এক বিতর্ক হচ্ছে। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। কোনো জাতিকে পরাজিত করতে হলে সেই জাতির শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করাই যথেষ্ট। আজকে রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে সব দিক থেকে আমরা ‘হিন্দুত্ববাদী’ ও ‘ব্রাহ্মণ্যবাদী’ আগ্রাসনের শিকার। বিধর্মী ও মুশরিকদের চোখে আমাদের সবচেয়ে বড় অপরাধ যে, আমরা মুসলিম। আমাদের ঈমান ও মুসলিম পরিচয়কে তারা ধুলোয় মিশিয়ে দিতে চায়। সেজন্যই আমাদের ধ্বংস করার প্রথম ধাপ হিসেবে ‘হিন্দুত্ববাদীরা’ আমাদের জাতীয় পাঠ্যপুস্তককে টার্গেট করেছে। তাদের ষড়যন্ত্রেই আজকে স্কুল-কলেজ ও সরকারি মাদরাসার পাঠ্যপুস্তকের এই বেহাল দশা।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের জাতীয় পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলামী মূল্যবোধ ও ভাবধারার রচনাপত্র বাদ দিয়ে মুসলিমবিদ্বেষী হিন্দু লেখক ও ইসলামবিদ্বেষী সেকুলার কবি-সাহিত্যিকদের লেখা দিয়ে ভরে ফেলা হয়। তখন বিষয়টি হেফাজতে ইসলামের দৃষ্টিগোচর হয়। পাঠ্যবইয়ের হিন্দুত্বায়ন ঠেকাতে আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণসহ প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানাই যে, পাঠ্যপুস্তককে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে।

বাবুনগরী বলেন, দুঃখজনকভাবে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির নতুন ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে আরো নগ্নভাবে ‘হিন্দুত্ববাদের’ আগ্রাসন দেখা যায়। পাঠ্যপুস্তকের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ‘হিন্দুত্ববাদী’ ইতিহাসের বয়ান ও ‘হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি’ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসলামী মূল্যবোধ ও মুসলমানের কোনো পরিচয় রাখা হয়নি। এছাড়া ইসলামবিরোধী বিবর্তনবাদ তত্ত্ব, পৌত্তলিকতা, গ্রিক দেবদেবীর পরিচয়, হিন্দুয়ানি সংস্কৃতি, ট্রান্সজেন্ডারিজমের মতো বিকৃত ধ্যানধারণা, ছেলেমেয়ের অবাধ মেলামেশা, পর্দা বিদ্বেষসহ মুসলমানের ঈমানবিরোধী এমন কিছু নেই যা, পাঠ্যবইয়ে ঢোকানো হয়নি। আমাদের কোমলমতি শিশু-কিশোরদের মুসলিম আত্মপরিচয় ও ঈমানি চেতনা ভুলিয়ে দিতেই এসব করা হচ্ছে বলে আমি মনে করি। এটা অনেক বড় ষড়যন্ত্রের অংশ। কারাবন্দি প্রতিবাদী আলেমদের অনুপস্থিতিতেই এসব ঘটানোর দুঃসাহস করেছে ইসলামবিরোধী অপশক্তি।

আমাদের নেতৃবৃন্দকে জেলে ঢুকিয়ে তারা ভেবেছিল, এদেশের আলেম-ওলামাকে স্তব্ধ করা গেছে। এটা কখনো সম্ভব নয়। আমরা সবর করেছি। আমাদের সবর করার মানে এই নয় যে, আমরা চুপ হয়ে গিয়েছি কিংবা পরাজিত হয়েছি। আমাদের সবর বরং আরো দ্বিগুণ শক্তি সঞ্চয়ের সুপ্ত বারুদ মাত্র।

বাবুনগরী বলেন, কাউকে ক্ষমতা থেকে নামানো বা কাউকে ক্ষমতায় বসানো আমাদের কাজ নয়। এদেশের মুসলমানদের ঈমান-আকিদা ও ইসলামী মূল্যবোধ সংরক্ষণ এবং দাওয়াতি কাজই হেফাজতে ইসলামের মূল উদ্দেশ্য।

হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ, ছবি- বার্তা২৪.কম

সুতরাং, আমরা সরকারকে সতর্ক করে বলতে চাই, ক্ষমতায় থাকার লোভে হিন্দুত্ববাদীদের ষড়যন্ত্রের খেলায় দেশকে ঠেলে দেবেন না। এটা ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ। সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মীয় চেতনা, সংস্কৃতি ও স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা সম্ভব নয়। পাঠ্যপুস্তকের হিন্দুতায়ন ঠেকাতে আমরা ওলামায়ে কেরাম ঐক্যবদ্ধ। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে যারা ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের সহযোগী হয়ে কাজ করছে। তাদের অবিলম্বে চিহ্নিত করুন। তাদের বহিষ্কার করে দেশপ্রেমিক ও ইসলামী মূল্যবোধসম্পন্ন দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিন। সেইসঙ্গে নির্ভরযোগ্য বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শের আলোকে পাঠ্যবইয়ের নতুন সংস্কারের ব্যবস্থা করুন।

হেফাজতের আমির বলেন, দেশের সচেতন অভিভাবকদের প্রতি আমাদের আহ্বান, আপনারা আরো সরব হন। ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে আপনাদের সন্তানদের গড়ে তুলতে হলে এই বর্তমান বিতর্কিত পাঠ্যপুস্তক প্রত্যাখ্যানের বিকল্প নেই। ইসলামবিরোধী হিন্দুত্ববাদী পাঠ্যবই প্রত্যাখ্যান করুন। স্কুলে আপনার সন্তানদের কী শেখানো হচ্ছে, তা জনসম্মুখে তুলে ধরুন। আমাদের জাতীয় পাঠ্যপুস্তক আজ হিন্দুত্ববাদের কবলে পড়েছে। অঙ্কুরেই মুসলমানের ছেলেমেয়েদের ঈমানি চেতনা ধ্বংস করার আয়োজন করা হচ্ছে। সেক্যুলারিজমের নাম দিয়ে ইসলাম নির্মূল করার এই চক্রান্ত আমরা সফল হতে দেবো না।

এসময় হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান সাতটি দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হচ্ছে-

১. 'ইসলামী শিক্ষা বিষয়' প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সকল শাখায় আবশ্যিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

২. দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়ন তথা বোর্ড পরীক্ষায় 'ইসলামী শিক্ষা বিষয়' পুনর্ববহাল করতে হবে।

৩. বিতর্কিত ও প্রত্যাখ্যাত কুরআনবিরোধী বিবর্তনবাদ ও ট্রান্সজেন্ডারবাদসহ ইসলামবিরোধী সকল পাঠ্যরচনা সিলেবাস থেকে অপসারণ করতে হবে।

৪. আরব দেশগুলোর শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য আরবি ভাষায় পাঠদান সর্বস্তরে বাধ্যতামূলক করতে হবে। উল্লেখ্য, ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরাও এ উদ্দেশ্যে আরবি ভাষা শিখে এগিয়ে রয়েছে।

৫. জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারী ও তাদের সহযোগীদের চিহ্নিতকরণপূর্বক অপসারণ করে দেশপ্রেমিক ও ইসলামী মূল্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তিদের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।

৬. ভবিষ্যতে বিতর্ক এড়াতে দেশের নির্ভরযোগ্য বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শের আলোকে পাঠ্যবইয়ের পুনর্সংস্করণ করতে হবে।

৭. ২০১৩ থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

আমরা সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের প্রতি আমাদের প্রস্তাব ও যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই। একইসঙ্গে দেশের জনগণকে ইসলামবিরোধী ও জাতীয় মূল্যবোধপরিপন্থী এ শিক্ষা কারিক্যুলামের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই।

;

গণতন্ত্র রক্ষা করতে হলে গণমাধ্যম স্বাধীন হতে হবে: মঈন খান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে গণমাধ্যমকে স্বাধীন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড আবদুল মঈন খান।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রের আদর্শে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল। আর গণতন্ত্র রক্ষার মূল কবজ হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম। আজকে সেই গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে নতুন করে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হোক বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আমাদের শপথ।

রোববার (৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজ) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজ) আয়োজিত বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মঈন খান বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। কিন্তু বিশ্বে এমনও আলোচনা হয়েছে গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ নয়, প্রথম স্তম্ভ। মিডিয়া একটি রাষ্ট্রের শক্তির চেয়েও বেশি শক্তিশালী। কারণ, সরকার যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন মিডিয়া অন্যায়কে প্রকাশ করে দিয়ে একটি রাষ্ট্রকে ভাঙতে পারে, নতুনভাবে গড়তেও পারে। এই সত্য আজকের সরকার যতই উপলব্ধি করবে ততই তাদের জন্য ভালো হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে, সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল গণতন্ত্র। দেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে, একদলীয় শাসন কায়েম হয়ে থাকে, মুক্ত চিন্তা বিকাশের সুযোগ না থাকে, ১৮ কোটি মানুষকে যদি আওয়ামী লীগের চিন্তা-ভাবনা অনুযায়ী একই লাইনে চলতে বাধ্য করা হয় সেখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকে না।

বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের মহাসচিব ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সহসভাপতি রাশেদুল হক, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব বাছির জামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদ খান, ডিইউজের দফতর সম্পাদক ইকবাল মজুমদার তৌহিদ প্রমুখ।

;