‘নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় হত্যার হুমকি পাচ্ছি’
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে হত্যার হুমকি পাচ্ছি বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের বিএনপির সাবেক নেতা মেজর আখতারুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে এসে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বিকেল ৫টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে আসেন তিনি।ডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হুমকির কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচনে আসার কারণে হুমকি দিতে পারে। এছাড়া আমি বিএনপির নেতা ছিলাম, এখন কেন ছাড়লাম। কিন্তু কেউ জানতে চায় না যে বিএনপিতে গত ১৫ বছর ধরে আমার কোনো পদ নেই। এই তথ্য কেউ নিতে চায় না। গত দুই আড়াই বছর ধরে আমাকে কোনো আন্দোলনে রাখা হয় নাই। আমি তো দলছুট হয়ে গেছি। নির্বাচনে মানুষের জন্য কিছু করতে হবে। মানুষ যদি আমাকে চায় তাহলে ভোট দিবে। আমি সাধারণ মানুষের যে সাড়া পাচ্ছি। সব কিছু মিলিয়ে আমার নিরাপত্তার জন্য এখানে আসা। আসলে এই অপরাধটা তো কোনো থানা কেন্দ্রীক হবে না। এটা সারা বাংলাদেশে হতে পারে। ব্যক্তিগত আক্রমণ, অপবাদ, চরিত্র হনন হতে পারে। এই বিষয়গুলোকে জানিয়ে গেলাম। আজ আমার নমিনেশন নিশ্চিত হয়েছে।
নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিখিত দেইনি। কিন্তু ফেসবুকে দেশে ও বিদেশে বসে যে সকল কথাবার্তা বলা হচ্ছে তা ব্যক্তিগত আক্রমণ। অনেক সময় জীবনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
অপর এক প্রশ্নে বিএনপির এই সাবেক নেতা বলেন, আমরা পুলিশকে কোনো না কোনো দলের প্রতি অনুগত পাচ্ছি। আমরা যখন বিএনপির ক্ষমতায় ছিলাম তখন এমন সেবা নেই যেটা বিএনপির লোককে করত না। আমরা ১/১১ এর সময়ে দেখেছি। পুলিশের ধর্মই হলো যিনি ক্ষমতায় আছে তার কাজ করা। পুলিশ তার কাজটি সঠিকভাবে করলে অপরাধী ভয় পাবেই। তারা তাকে অপবাদ দিবেই। এখন যেহেতু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। ফলে পুলিশ যদি তার সঠিক কাজটি করে অপরাধ দমন করতে পারে সরকারের শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ে রাখতে পারে তখন তো তাকে সবাই আওয়ামী লীগ বলবে। তবে আমার আওয়ামী লীগে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। এটা প্রধানমন্ত্রীও জানে। তবে বঙ্গবন্ধু কণ্যার পক্ষে দাঁড়িয়েছি একটা কারণে, আমাদের দেশটা আগে। আজকে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে, দেশটা হুমকির মুখে পড়বে। আর বাইরে থেকে সমালোচনা করে নির্বাচন বানচাল করে দিলাম। এতে আরেকটা পক্ষ ক্ষমতায় চলে আসবে। তারা দেশটাকে ধবংসের দিকে নিয়ে যাবে। ফলে আমি যেকোনো মূল্যে চাই এই সরকার ধারাবাহিক ক্ষমতায় থাকুক। আমরা বিএনপি পাসের প্রস্তুতি নেই। পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য রাজনীতি করি। আমরা আবার ফিরে আসব। আমি আগে ছিলাম বহিস্কৃত বিএনপি, এখন সতন্ত্র বিএনপি। ৭ই জানুয়ারির পর আবারও আমি বহিস্কৃত বিএনপি হবো এটাই আমার পরিচয়।
নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না জানি না। তবে প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বলেছেন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করাতে চান। আমি তার ওপর বিশ্বাস রেখেছি। দেখি নির্বাচন সুষ্ঠু হয় কি না। আমি ৭ই জানুয়ারি বিকেল চারটার পরে বলব নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে কি হয় নি।
অতীতে দলছুট হয়ে রাজনৈতি নিজের অবস্থার উন্নয়ন করতে পারেনি, এবার আপনি কতটা আশাবাদী এমন প্রশ্নের জবাবে দীর্ঘদিন ধরে দলের বাইরে থাকা এই নেতা বলেন, আমার রাজনীতি করার বয়স নেই। রাজনীতি করতে হলে সংগঠন ও মানুষ লাগবে। এরপরও আমি আমার এলাকার মানুষের কল্যাণের জন্য কিছু করতে চাই। যদি এখানে সুযোগ পাই আমার জাতীয় রাজনীতিতে যাওয়ার দরকার নেই। যেহেতু আমি দল ছাড়া, দলছুট। আমার কোনো পরিচয় নেই। আমি যদি সংসদ সদস্য হতে পারি। আমি পাঁচটা বছর আমার এলাকার মানুষদের শান্তিতে রাখতে চাই। পাশাপাশি একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই যেটা আজ থেকে শুরু করেছি সেটা হলো খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন। যদি পদ থাকে সে আন্দোলনটা বেগবান হবে আরও গুরুত্ব পাবে। আমি জীবনের শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করব, খালেদা জিয়া যেন মুক্ত মানুষ হিসেবে মৃত্যু বরণ করে। আমার লক্ষ একটা খালেদা জিয়ার মুক্তি।