তৃণমূল নেতাদের সভা ডেকেছেন জাপার বিক্ষুব্ধরা
জাতীয় পার্টির বিক্ষুব্ধ নেতারা ১৪ জানুয়ারি তৃণমূল নেতাদের সভা আহ্বান করেছেন। রাজধানীর আইডিইবি ভবনে ওই সভা আহ্বানে তথ্য বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়।
তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। এই আল্টিমেটামের মেয়াদ শেষ হবে ১২ জানুয়ারি। আমরা চেয়েছিলাম ১৩ জানুয়ারি পরবর্তী সভা করে সিদ্ধান্ত নিতে। কিন্তু হলরুম না পাওয়ায় সভাটি ১৪ জানুয়ারি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখান থেকেই পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) দিনভর বিক্ষোভ শেষে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগের আল্টিমেটাম বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। বিক্ষুব্ধ নেতারা আসতে শুরু করেছিলেন বেলা ১১টা থেকে আর ফিরে যান ৩টার দিকে।
তবে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এদিন অফিসে আসেন নি। তারা দুপুরে সংসদে গিয়ে শপথ নেন, সেখান থেকে নিজ নিজ বাসায় ফিরে যান। দুপুরে বনানী অফিসে যখন নজিরবিহীন বিক্ষোভ হচ্ছিল তখন তারা ছিলেন সংসদ ভবনে।
চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে যোগ দেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান, বেশ কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক ছাত্রনেতারাসহ কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। বাসে করেও লোক আনা হয় বিক্ষোভের জন্য। তাদের পার্টি অফিসে আসার খবরটি আগেই জানাজানি হয়ে যায়, এমনও খবর রটে যায় তারা বনানীস্থ পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয় দখল নিতে যাচ্ছেন। এ খবরে আগেই পার্টি অফিসের মূল ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। অফিস স্টাফ ছাড়া সকলের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বাড়ানো হয় পুলিশের নিরাপত্তা। পুলিশ সদস্যরা মূল ফটকের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে পথ গেট বন্ধ করে দেয়।
বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম সেন্টু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব সাইদুর রহমান টেপা, প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল আলম রুবেল, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম শাহজাদা পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে মূল ফটকের ভেতরে প্রবেশ করেন।
তারা অফিসের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ সদস্যরা ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তখন প্রায় ৩০ মিনিটব্যাপী উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলে। এক পর্যায়ে সিনিয়র নেতারা বাইরে বের হয়ে বিক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। অফিসের বিপরীত দিকের ফুটপাতে চেয়ার নিয়ে বসে যান নেতারা। আর কর্মীরা রাস্তার উপরে অবস্থান নিয়ে নানা রকম স্লোগান দিতে থাকেন।
সেখানে এসে একে একে যোগদান করেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল ইসলাম জহির, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল হামিদ ভাসনী, সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন, ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু, ছাত্র সমাজের সাবেক সভাপতি সৈয়দ ইফতেখার আহসান হাসান।
এসময় পার্টি অফিসের সামনে ভিড় সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ তলব করা হয়। বেলা ১টার দিকে দাবি দাওয়া নিয়ে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিং করা হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব সাইদুর রহমান টেপা। তিনি বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের পদত্যাগের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলাম। এরমধ্যে তারা পদত্যাগ না করলে আমরা ধরে নেব তারা পদত্যাগ করেছেন।