বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির লক্ষ্যে ছাত্রলীগের কর্মসূচি



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী আধুনিক, স্মার্ট ও পলিসি নির্ভর নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানসহ উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগরী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

কর্মসূচিগুলো হলো-

>> ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীর আবাসিক হল ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বুয়েট শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি।

>> আধুনিক, স্মার্ট, পলিসি নির্ভর নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠার কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সাথে মতামত আহ্বান ও আলোচনা।

>> সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী-জঙ্গি কালোছায়া থেকে বুয়েটকে মুক্ত করতে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন।

>> বুয়েটে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে প্রশাসনের সাথে আলোচনা।

সংবাদ সম্মেলনে সাদ্দাম হোসেন বলেন, তুচ্ছ কারণে গত ২৯ মার্চ ছাত্র রাজনীতি বন্ধের নামে স্বৈরাচারী কায়দায় বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীর আবাসিক হলের সিট বাতিল করা হয় এবং তাকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি উত্থাপন করা হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আড়ালে পরিচয় গোপন করে রাখা নিষিদ্ধ ও আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠনের কর্মীদের এই অহেতুক দাবি বুয়েট প্রশাসন অবিবেচকের মতো মেনে নিলে প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে দেশের ছাত্রসমাজ ও রাজনীতি সচেতন গণতন্ত্রকামী মানুষ। এমন পরিস্থিতে ছাত্রলীগ বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের অবৈধ আদেশ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করলে আদালত তা বাতিল করে দেয়। ফলে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি পরিচালনা করতে আর কোনো বাধা নেই।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগ বুয়েটের শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানাচ্ছে। বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে আজকের দিনটি একটি ঐতিহাসিক দিন। বর্তমানে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি পুনরায় শুরু হবে। কিন্তু সেটি কোনো ছাত্র রাজনীতি তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এই রাজনীতি অবশ্যই ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, সেশনজট, র‍্যাগিং-বুলিং, দখল-বাণিজ্য, হত্যা-সন্ত্রাসের ছাত্র রাজনীতি নয়। এই ছাত্র রাজনীতি হবে আধুনিক, যুগোপযোগী, বৈচিত্র্যময়-সৃষ্টিশীল, জ্ঞান-যুক্তি-তথ্য-তত্ত্বনির্ভর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রেখে যাওয়া যে বাংলাদেশকে সবাইকে মিলে পিছিয়ে দিয়েছিল,দারিদ্র্যের অন্ধকারে গত ১৫ বছরে তা আবার আলোর পথে, উন্নয়ন-অগ্রগতির পথে ফিরিয়ে এনেছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। শেখ হাসিনার পরিকল্পিত উন্নত-আধুনিক বাংলাদেশে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বোপরি আমাদের সামগ্রিক ছাত্র রাজনীতি কোনোভাবেই পশ্চাৎপদ ধারায় পরিচালিত হতে পারে না এবং আধুনিক নিয়মতান্ত্রিক ধারার ছাত্র রাজনীতির সূচনা যে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েট থেকেই শুরু হতে যাচ্ছে, বুয়েটের শিক্ষার্থীরাই যে সমগ্র ছাত্র রাজনীতিকে বদলে যাবার পথ দেখাতে যাচ্ছে, আজ সেই শুভ উপলক্ষ্যের উদ্বোধন।

তিনি আরও বলেন, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে এবং বিশ্বের সর্বোচ্চ র‍্যাংকিংধারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র রাজনীতি কীভাবে পরিচালনা হয়, তা থেকে জ্ঞান নিয়ে, নিজেদের চর্চায় সেটি নিয়ে বুয়েট আমাদের ছাত্র রাজনীতিকে পথ নির্দেশ করবে। মহাকাশে কীভাবে অভিযান পরিচালনা করা যায়, রোবোটিকসের মাধ্যমে কীভাবে শিল্পবিপ্লব জয় করা যায়, নিজ দেশের উচ্চ প্রশিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে কীভাবে পদ্মাসেতুর মতো বড় বড় সেতু নির্মাণ করা যায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করা যায়, আধুনিক যন্ত্রপাতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে কীভাবে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় ভূভাগ ও সমুদ্রে কীভাবে অনুসন্ধান করা যায়, দেশের আমদানি কমিয়ে কীভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করা যায়, কোন পদ্ধতিতে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি করে বেকারত্বকে চিরতরে ঘুচিয়ে দেওয়া যায়, এসব বিষয় নিয়ে কাজ করবেন আগামী দিনের বুয়েটে ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীরা।

বুয়েটের শিক্ষার্থীরাই তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করবে জানিয়ে সাদ্দাম বলেন, প্রথাগত ছাত্র রাজনীতিতে কেন্দ্র থেকে চাপিয়ে দেওয়া নেতৃত্বের মাধ্যমে বুয়েট শিক্ষার্থীরা পরিচালিত হবে না। বুয়েটের শিক্ষার্থীরা নিজেরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। যে নেতৃত্ব হবে আদর্শিক, দেশাত্মবোধসম্পন্ন এবং যে নেতৃত্ব বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকেই তৈরি করবে বিশ্বসেরা উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা।

ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের যে সিদ্ধান্ত অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে গ্রহণ করা হয়েছিল, বাংলার ছাত্র সমাজের পক্ষে ছাত্রলীগ আইনগত ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তা আবার ফিরিয়ে এনেছে। বুয়েট শিক্ষার্থীদের লুণ্ঠিত হওয়া মৌলিক অধিকার ছাত্রলীগ আবার সসম্মানে ফিরিয়ে দিয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, বুয়েটকে আধুনিক, যুগোপযোগী, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার উপযোগী ছাত্র রাজনীতি উপহার দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগের আজকের এই সম্মেলন।

বুয়েটের প্রতি সম্মান জানিয়ে সাদ্দাম বলেন, শিক্ষক, প্রকৌশলী, ছাত্র আন্দোলনের কর্মী, বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা নির্মাণে অবদান রাখা শিক্ষার্থী, বুয়েট খেলার মাঠে অস্ত্রহাতে গেরিলা প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া নারী মুক্তিযোদ্ধা, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বাঙালির মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মত্যাগ ও অংশগ্রহণকারী বুয়েট পরিবারের সকল অগ্রজের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতির প্রতি বাংলার ছাত্রসমাজের পক্ষে যুগে-যুগে অতুলনীয়-অদ্বিতীয় ভূমিকা পালন করা সংগঠন ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে জানাই গভীর শ্রদ্ধা। একইসাথে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে গত ৫৩ বছরে জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি চর্চা ও প্রসার, অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন, স্বনির্ভর, মর্যাদাশীল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েটের যে অনন্য অবদান, তার প্রতিও সম্মান প্রদর্শন করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

১৯৪৭ থেকে শুরু করে ১৯৭১ এ বাঙালির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও বিজয় অর্জনের ক্ষেত্রে এদেশের ছাত্রসমাজ কেবল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই পালন করেনি, অকাতরে নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ সে সময় দেশের ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্বদান করেছে। পুরো এই কালপর্বে ছাত্রসমাজের মাথার মুকুট হয়ে থেকেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের কারণে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ছাত্রলীগের ইতিহাস একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে, একটিকে ছাড়া অপরটি অসম্পূর্ণ। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশেও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো ও রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ছাত্রসমাজের নির্ভরতার প্রিয় ঠিকানা হিসেবে ভূমিকা রেখে চলেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

তিনি জানান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদা সর্বদা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সর্বাগ্রে স্থান দিয়েছেন। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদ, অরাজকতা, সন্ত্রাস, হত্যা ইত্যাদিকে গুরুত্ব না দিয়ে পায়ে হেঁটে, সাইকেল চালিয়ে ৫৬ হাজার বর্গমাইল ঘুরে বঙ্গবন্ধু মানুষকে সজাগ করেছেন। স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন। সংগঠন গড়ে তুলেছেন। নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্রের প্রতি বঙ্গবন্ধুর এই সংকল্প এতোটাই মজবুত ছিল যে, কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ, ফাঁসির দড়ি, খনন করে রাখা কবর, নানাবিধ প্রলোভন কোনোকিছুই তাঁকে সামান্য পরিমাণে বিচ্যুত করতে পারেনি। স্বাধীনতা উত্তর রাষ্ট্র গড়ার ক্ষেত্রেও তাঁর এই চেতনা অপরিবর্তনীয় ছিল। সমকালীন প্রেক্ষাপটে একটি আধুনিক সংবিধান প্রণয়ন এবং সে আলোকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মাত্র আড়াই বছর রাষ্ট্র পরিচালনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক দিক থেকে যে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, তা নবগঠিত একটি রাষ্ট্রের জন্য পৃথিবীব্যাপী বিরল।

ছাত্র রাজনীতির ব্যাপারে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির জিঘাংসায় পরিণত হয়ে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণের পর থেকে এদেশ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিপরীতে পরিচালিত হতে থাকে। নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে অস্ত্রের জোরে সামরিক বাহিনী রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। সেনাবাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের সবকটি পদ দখলে চলে যায় অনির্বাচিত একক ব্যক্তির হাতে।

সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ও হুসাইন মহম্মদ এরশাদ দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর এই অসাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্র পরিচালনার কারণে একে একে এই রাষ্ট্রের সব কয়টি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যায়। এই কালো ছায়া থেকে মুক্তি পায়নি এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ছাত্র ও তরুণ সমাজ। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির বদলে বিরাজনীতিকীকরণ, সামরিকতন্ত্র, হত্যা-সন্ত্রাস, অস্ত্র ও অর্থের দাপটে খেয় হারিয়ে ফেলে এদেশের ছাত্র রাজনীতিও। মেধাভিত্তিক আদর্শিক ছাত্র রাজনীতির কর্মী তৈরির ধারাবাহিক প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে সেনা ছাউনি থেকে জারি হওয়া প্রেসকিপশন অনুয়ায়ী শুরু হয় ক্যাডার তৈরির প্রক্রিয়া।

সংস্কৃতিনির্ভর, জ্ঞানভিত্তিক, বিজ্ঞানসম্মত, তত্ত্বনির্ভর আধুনিক ছাত্র রাজনীতি সেসময়ই প্রতিস্থাপিত হয় নৌবিহার, টেন্ডারবাজি, ছাত্র সন্ত্রাস, অস্ত্র ও গুলির ঝনঝনানি, কমিশন বাণিজ্য, মাদকনির্ভর, ধর্মভিত্তিক, লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে। স্বাধীনতা উত্তর একটি দেশের তরুণ প্রজন্ম, ছাত্র ও যুবসমাজের যখন দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার কথা, সেসময় তাদের পরিচালিত করা হয়, দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে। সেনা-সামরিক-স্বৈরশাসক জিয়া-এরশাদের ধারাবাহিকতায় খালেদা-নিজামী গং এদেশের ছাত্র রাজনীতি ও সমাজ কাঠামোকে ধ্বংসের নতুনতর উচ্চতায় উত্তীর্ণ করে। রগকাটা, বোমাবাজি, নকল, প্রশ্নফাঁস, সেশনজট, অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, মেধার বিপরীতে দলীয় বিবেচনায় চাকরি, শোডাউন, পেশিশক্তি, দখল বাণিজ্য ইত্যাদি ছাত্রসমাজকে চূড়ান্তভাবে বিচ্যুত করে।

ছাত্র রাজনীতি পুনঃরুদ্ধারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান উল্লেখ করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, রক্ত ও নীতি-বিশ্বাস-কর্মের উত্তরসূরী, বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অবিকল্প সারথী, বাংলার মানুষের-ছাত্রসমাজের নির্ভরতার একমাত্র ঠিকানা দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে জিয়া-এরশাদ-খালেদা-নিজামীর দ্বারা ক্ষতবিক্ষত দেশকে সংস্কার ও পুনঃরুদ্ধারের কাজ শুরু করেন। সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে গেঁথে যাওয়া অপসংস্কৃতি, অপরাজনীতির কবলে দিশেহারা ছাত্রসমাজকে অস্ত্র ফেলে ক্লাসরুমে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান, হাতে খাতা-কলম তুলে দেন।

সন্ত্রাস, কুশিক্ষা, কুসংস্কার, ধর্মান্ধতায় আবদ্ধ ছাত্রসমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা চালু, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার প্রসার, বহুমাত্রিক ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার প্রচলন, উপবৃত্তি-শিক্ষাবৃত্তি, আবাসন সঙ্কট হ্রাস করা, সেশনজট-নকল মুক্ত করা, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, মেধাভিত্তিক কর্মসংস্থান ইত্যাদি পদক্ষেপের মাধ্যমে নিরক্ষরতা দূরীভূত হয়েছে, শিক্ষার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, কোয়ালিটি ও যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত হয়েছে।

মাঝপথে ২০০১-০৮ পর্যন্ত আবারও হোঁচট খেলেও ২০০৯ থেকে অদ্যবধি শিক্ষা ও ছাত্রবান্ধব নেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করে মেধার ভিত্তিতে কর্মজীবনে প্রবেশ করে শেখ হাসিনার নির্ধারিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন বলেই দেশ আজ অনুন্নত থেকে উন্নয়শীল হয়েছে। উন্নত বাংলাদেশের হাতছানি দেখছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা আজ দেশের গণ্ডি অতিক্রম করে বহির্বিশ্বে নিজের মেধার পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে আসীন করছে।

দেশরত্ন শেখ হাসিনার অভিভাবকত্বে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এদেশের ছাত্রসমাজের যাবতীয় ইতিবাচকতার পক্ষে নিরলস ভূমিকা পালন করে চলেছে। সবকিছুর পরেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ত্রুটি স্বীকার করতে কুণ্ঠাবোধ করে না যে, জিয়া-এরশাদ-খালেদা-নিজামীর দীর্ঘকালের ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতির আগুনের আঁচ ছাত্রলীগের শরীরেও অনুভূত হয়েছে, ছাত্রলীগকেও দগ্ধ করেছে। এই অপরাজনীতির আগুনকে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে চিরস্থায়ীভাবে প্রতিস্থাপন করতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যেন তার অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো থেকে সব ধরনের ভুল-ভ্রান্তি-বিচ্যুতি ধুয়ে মুছে-সাফ করে ফেলতে পারে, সে লক্ষ্যে প্রতিটি নেতা-কর্মীকে প্রস্তুত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, সাংগঠনিক মূলমন্ত্র।

   

আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা বসবে শনিবার। এদিন সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

শুক্রবার (৩ মে) আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

এর আগে, গত ২৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ ফরম বিক্রি শুরু হয়ে ২৯ এপ্রিল বিকেল পর্যন্ত চলে। এসময়ের মধ্যে ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান ২৫ জন।

শনিবারের সভায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড ওই আসনের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করবে।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই গত ১৬ মার্চ ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এ আসনে আগামী ৫ জুন ভোটগ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

;

জনগণের কাছে হেরে যাওয়ার আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিন: ফারুক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেছেন, জনগণের কাছে হেরে যাওয়ার আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিন।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতকালের সংবাদ সম্মেলনে একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকলে বড় কথা বলা যায়। ক্ষমতায় থাকলে গ্রেফতারও করা যায়। ক্ষমতায় থাকলে বিনা কারণে খালেদা জিয়াকে জেলে রাখা যায়। কিন্তু জনগণ যখন রাস্তায় নেমে পড়বে তখন এ সকল কথায় কোন কাজ হবে না। তখন ক্ষমতা আপনাকে ছাড়তেই হবে। তাই বলবো, জনগণের কাছে হেরে যাওয়ার আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইনটা পাস করে দিয়ে নিরবে বিদায় নেন।

শুক্রবার (৩ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে 'দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু সহ সকল জাতীয় নেতৃবৃন্দের নিঃশর্তে মুক্তির দাবিতে' আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশেটির আয়োজন করে স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন।

জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেন, বিএনপির তো অস্তিত্বই নাই। বিএনপি নাকি টিকবে না, বিএনপি অসত্য কথা বলে। বিএনপি বাসে আগুন দেয় বিএনপি মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তাই বিএনপি'র অস্তিত্ব থাকতে পারে না। এই সকল কথাগুলো আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখ থেকে ১ টি বছর যাবত শুনে আসছি এবং এখনো শুনতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর একটি সংবাদ সম্মেলন পত্রিকায় এসেছে। যে দেশে মানবাধিকার এবং সংবিধান লুন্ঠিত হচ্ছে এমন একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন , আমাকে ছাড়া আর এদেশে কাকে প্রধানমন্ত্রী করবে, কেইবা আছে। কিন্তু আমি বলব আপনাকে সরাবার ইচ্ছা আমাদের ছিল না। কারণ বিএনপি এমন একটি নেতার দল যে নেতা বাংলাদেশকে তলা বিহিন ঝুড়িতে রূপান্তরিত করেছে। তাই এমন নেতার দল কস্মিনকালেও ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করতে পারে না।

ষড়যন্ত্র মূলত আওয়ামী লীগ করে এমন মন্তব্য করে জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেন, আপনারা যদি ষড়যন্ত্র না করতেন তাহলে ২০১৪ সালে কেন বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে গেলেন। কেন ২০১৮ সালে বিএনপি'র সঙ্গে অঙ্গীকার করার পরও দিনের ভোট রাতে করলেন। কেন ২০২৪ সালের ৭ই জানুয়ারি ভাই ভাই ডামি ভোট করলেন। এ সকল কথার উত্তর আপনাকে একদিন দিতে হবে।

জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেন, বিএনপি আপনাকে এবং আপনার দল আওয়ামী লীগ কে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায় এই কারণে যে জনগণ চায় না আপনারা আর ক্ষমতায় থাকেন। কারণ জনগণ চায় না তিন টাকার কলা ১৪ টাকায় কিনুক। দ্রব্যমূলের এই ঊর্ধ্বগতির মধ্যে আপনি বিরোধী দলের নেতাদেরকে যেভাবে বিনা কারণে জেলখানায় রাখছেন, তাতে জনগণ মনে করে আপনার দ্বারা সুষ্ঠু নির্বাচন কখনোই সম্ভব না। আর আপনার আমলে অর্থনৈতিক কোন কালেই চাঙ্গা হবে না। তাই জনগণ চাচ্ছে আপনি সরে যান। যার প্রমাণ জনগণ ৭ জানুয়ারির ভোটে দিয়েছে, কয়েক পার্সেন্টও ভোট পড়েনি।

জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেন, ক্ষমতায় থাকলে বড় কথা বলা যায়। ক্ষমতায় থাকলে গ্রেফতারও করা যায়। ক্ষমতায় থাকলে বিনা কারণে খালেদা জিয়াকে জেলে রাখা যায়। কিন্তু জনগণ যখন রাস্তায় নেমে পড়বে তখন এ সকল কথায় কোন কাজ হবে না। তখন ক্ষমতা আপনাকে ছাড়তেই হবে। তাই বলবো জনগণের কাছে হেরে যাওয়ার আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইনটা পাস করে দিয়ে নিরবে বিদায় নেন।

স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলনের ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবীব, বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দীকী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন, ওলামা দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আলমগীর হোসেন, সাবেক ছাত্র দলের সহসভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, মৎস্যজীবী দলের ইসমাইল হোসেন সিরাজী, আদর্শ নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।

;

নওগাঁয় আ. লীগ নেতার নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ: ছাত্রদলের ২ নেতাকে শোকজ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: সংগৃহীত, বিল্লা ও সৌরভ - নওগাঁ পত্নীতলার ছাত্রদল নেতা

ছবি: সংগৃহীত, বিল্লা ও সৌরভ - নওগাঁ পত্নীতলার ছাত্রদল নেতা

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁর পত্নীতলায় প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ‘ঘোড়া’ মার্কার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক চৌধুরীর নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ করায় ছাত্রদলের দুই নেতাকে শোকজ করা হয়েছে।

আব্দুল খালেক চৌধুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। বৃহস্পতিবার রাতে নওগাঁ জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক ফরহাদ হোসেনের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

শোকজ পাওয়া ছাত্রদলের দুই নেতা হলেন, নজিপুর পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ হোসেন সৌরভ ও নজিপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ন আহ্বায়ক আবু হোরাইরা বিল্লা।

শোকজ নোটিসে উল্লেখ করা হয়, পত্নীতলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আপনি এক প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছেন। দল যেখানে নির্বাচন থেকে দূরে আছে, যা দলীয় শৃঙ্খলা, এমন অবস্থায় আপনার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় কেন সাংগঠনিক চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, চিঠি পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি উপস্থিত হয়ে নওগাঁ জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিকট লিখিত জবাব প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হইলো৷ অন্যথায়, আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শোকজের বিষয়ে জানতে ছাত্রদল নেতা বিল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সবাই জানে যে, চৌধুরী সাহেবের সঙ্গে বেশি চলাফেরা। তার সঙ্গে থাকি। একটু ঘোরাঘুরি করেছি। সেজন্য জেলা থেকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে।

অন্যদিকে, আরেক ছাত্রদল নেতা আরিফ হোসেন সৌরভের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মামুন বিন ইসলাম দোহা বলেন, নজিপুর পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ হোসেন সৌরভকে আমরা ভিডিওতে প্রচারণায় দেখতে পেয়েছি। এই জন্য আমরা তাকে বহিষ্কার করবো এবং নজিপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হোরাইরা বিল্লাকে ফোন করা হলে ‘পরবর্তীতে এমন ভুল হবে না’ জানিয়ে আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

;

বিএনপি নেতাদের অবহেলার জন্য বেগম জিয়ার বিচার প্রলম্বিত হচ্ছে: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি নেতাদের অবহেলার জন্য বেগম জিয়ার বিচার প্রলম্বিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।

বেগম জিয়ার বিদেশে চিকিৎসায় সরকার বাধা দিচ্ছে বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আওয়ামী লীগ করেনি। সেই মামলায় গ্রেফতার ও বন্দি হয়েছেন। আমি বলবো বিএনপি নেতাদের অবহেলার জন্য, বেগম জিয়া আদালতের হাজিরা প্রলম্বিত করা, এক বছরের বিচার দশ বছরেও শেষ হয়নি এটার জন্য বিএনপির নেতারা দায়ী। রাজপথেও তারা মুক্তির দাবিতে দেখার মতাও বিক্ষোভ মিছিলও করতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং শেখ হাসিনার উদারতার জন্য শাস্তি স্থগিত রেখে বাড়িতে থাকা ও চিকিৎসা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে চিকিৎসা করায় সহযোগীতা করেছে।

দেশি-বিদেশি চাপের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যুক্তিযুক্ত কতটা সেটা আমরা দেশ চালাচ্ছি, সেটা তো আমরা উপলব্ধি করি। কিভাবে আমাদের উপর চাপ দেয়া হয় সেটা আমরা দেশ শাসন করতে গিয়ে, দেশের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এই চাপগুলো আমরা অনুভব করি। নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে হুমকি, ধমকি ছিলো, নিষেধাজ্ঞার ভয় ছিলো। এগুলো তো প্রকাশ্যেই দেয়া হয়েছিলো। এখানে কোনো গোপনীয়তার বিষয় ছিলো বলে আমার জানা নেই। এখানে তো কোনো সিক্রেট বিষয় ছিলো না। এই বিষয়ে আমাদের বক্তব্যও পরিষ্কার।

আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র কিভাবে মোকাবেলা করবে এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের সুসংগঠিত হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ১৪ দলীয় জোটকেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে কাছে টানতে হবে। সব কিছু মিলিয়ে আমাদের নিজেদের সাবজেক্টিভ প্রিপারেশন এর উপর নির্ভর করে আমরা বাস্তব কঠিন পরিস্থিতি কে মোকাবেলা করতে সক্ষম।

উপজেলা নির্বাচনে অনেকেই দলের নির্দেশনা মানেনি, তাদের বিষয়ে দল কি ব্যবস্থা নিবে এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, অনেকেই এর মধ্যে প্রত্যাহার করতে শুরু করেছেন। আমাদের কয়েকজন আগেই প্রত্যাহার করেছেন। আমাদের গোলাম দস্তগীরের ছেলে প্রত্যাহার করেছেন। আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন, আমার স্বজনও একজন উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন। সেখানে প্রশ্ন টা হচ্ছে, আমাদের সমর্থন আছে কি না। আমি তার পক্ষে প্রশাসন বা নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে কি না সেটাই সেটাই দেখার বিষয়। পার্টির কারো এর সঙ্গে কোন সংযোগ নেই, নেতৃস্থানীয় কারো এর সঙ্গে কোন সমর্থন নেই। আমার সমর্থনের তো প্রশ্নই উঠে না। শেষ পর্যন্ত সরে যাবে না সেটাও বলা যায় না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর যে গাইডলাইন সেটা আমি মুখে বলবো একটা আর কাজে করবো আরেকটা এটাই আমি বিশ্বাসী নই। কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি আমি কোন অবস্থাতেই প্রশ্রয় দিবো না।

স্বজন বলতে প্রধানমন্ত্রীর যে সংজ্ঞা সে বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার কথা হচ্ছে, ভাই হউক, স্বজন হউক আমি তাকে দাঁড় করিয়েছি কি না। আমি তার পক্ষে সমর্থন দিচ্ছি কি না, আমার দল সমর্থন দিচ্ছে কি না সেটা হচ্ছে বড় কথা। আমি বা আমার দল যদি পক্ষে না থাকে তাহলে কেউ বিচ্ছিন্নভাবে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার বিষয়ে জড়িত নেই।

প্রধানমন্ত্রীর বলা পরিবারের মধ্যে যেনো সব কিছু কেন্দ্রীভূত না করে এমন বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বজনদের সব কিছু দেয়ার জন্য যদি সব কিছু কেন্দ্রীভূত করা হয় দলের দীর্ঘ দিনের ত্যাগী নেতারা যাবে কোথায়? একথা আমাদের সভাপতি বলেছেন। আমাদের সকলের বক্তব্য সেটাই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

;