সংগ্রাম, সাফল্য আর অর্জনে আওয়ামী লীগের ৭৫ বছর



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বিজাতি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে ১৯৪৮ সালে দেশ ভাগ হয়ে গঠন হয় পাকিস্তান। নতুন দেশে একক আধিপত্ত্ব মুসলিম লীগের। তবে সেখানে উপেক্ষিত ছিলেন সোহরাওয়ার্দী-আবুল হাশেম নেতৃত্বাধীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের অনুসারী প্রোগ্রেসিভ (উদারপন্থী) নেতারা। অন্যদিকে এক উপনির্বাচনে মুসলিম লীগ প্রার্থীকে হারিয়েও মওলানা ভাসানী এবং শামসুল হকের ফলাফল অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরে এই দুই দলের মিলনেই গঠন হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ এর।

মুসলিম লীগের এই উপেক্ষিত নেতারা ও মওলানা ভাসানী এবং শামসুল হকের নেতৃত্বে আরেকটি দল তখন নতুন দল গঠনের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মওলানা ভাসানী কে সভাপতি আর ইয়ার মোহাম্মদ খান কে সাধারণ সম্পাদক করে একটি সভা ডাকার প্রস্তুতি কমিটি করা হয়। তারা একটি সভা ডাকেন কিন্তু সভা করার জন্য কোনো অডিটরিয়াম পাচ্ছিলেন না।

পরে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন কে এম দাস লেনের কাজী হুমায়ুন রশীদ তার মালিকানাধীন রোজ গার্ডেনে সভা করার আহবান জানান। সেদিন বিকালে আড়াইশো-তিনশো লোকের উপস্থিতিতে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী দলের নাম প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী দলের নামকরণ করা হয় 'পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ'। পুরো পাকিস্তানের ক্ষেত্রে নাম রাখা হয় 'নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ'।

সেখানে সে নতুন দলের জন্য ৪০ জনের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সে প্রথম কমিটির সভাপতি হন মওলানা ভাসানী। সহ-সভাপতি হন আতাউর রহমান খান, আলী আমজাদ খান, আহমেদ আলী খান, শাখাওয়াত হোসেন ও আবদুস সালাম খান।

সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক। ট্রেজারার হন ইয়ার মোহাম্মদ খান, যার মালিকানাধীন রোজ গার্ডেনে প্রথম সভার আয়োজন হয়। তখন শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে আটক থাকলেও তাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

অপরদিকে ‘নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ এর সভাপতি করা হয় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী -কে।

সেদিন শুরু হওয়া সে দলটি নানা সংকটাকীকির্ণ পথ চলতে চলতে আজ ৭৫ বছরে পা রেখেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক নানা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে দলটি। সাম্প্রদায়িকতা থেকে বের হয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৫৫ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়।

দেশের অন্যতম পুরনো, অসাম্প্রদায়িক, সর্ববৃহৎ ও বাঙালির জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। সেই আওয়ামী লীগের হাত ধরেই শুরু হয় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রথম কাজ। যার নেতৃত্ব দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ তথা সশস্ত্র জনযুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন সবখানেই যে দলটি নেতৃত্ব দিয়েছে সেটি আওয়ামী লীগ। এছাড়াও ১৯৫৪ সালের আইয়ুবের সামরিক শাসন-বিরোধী আন্দোলন, ’৬৪-এর দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন ও ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান সবখানেই ছিলো দলটির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। যার নেতৃত্ব দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ধাক্কা খায় আওয়ামী লীগ। তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে তা কাটিয়ে উঠে দীর্ঘ একুশ বছর লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালে আবারও ক্ষমতায় আসে দলটি। যার নেতৃত্বে ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরবর্তীতে ২০০১ সালের নির্বাচনে হেরে গেলেও বিএনপি-জামাত জোট সরকারের অপশাসন, দমন পীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ ‘দিন বদলের সনদ’ঘোষণা দিয়ে ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটে পুনরায় বিজয় অর্জন করে এবং সেই থেকে টানা ৪ বার নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে।

গত ১৫ বছরে দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন সাধন করে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়নের সুফল প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর করা, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা এবং রায়ও কার্যকর করা, সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ করার মত বিভিন্ন সফল উদ্যোগ নেয় দলটি।

এসব কিছুই করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর গত ৪ দশকেরও বেশি সময় ধরে সফলভাবে এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তার নেতৃত্বেই দলের নেতাকর্মীরা পেয়েছেন উৎসাহ-উদ্দীপনা। সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ হয়েছে সমৃদ্ধ। স্বৈরতন্ত্রের চৌহদ্দি পেরিয়ে গণতন্ত্রের স্বাদ পেয়েছে বাংলার জনগণ। কালের বিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বাপ্নিক অভিযাত্রী বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। তার দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ফলে অনেক ত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি ফিরে পেয়েছে ‘ভাত ও ভোটের অধিকার। শুরু হয় গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা। সুশাসন, স্থিতিশীল অর্থনীতি, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, উন্নয়নে গতিশীলতা, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ, কর্মসংস্থান, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, খাদ্য নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে করেছেন যুগান্তকারী উন্নয়ন। বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ।

আওয়ামী লীগ তার জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত জনগণকে তার শক্তির উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সংগঠনের শক্তির উৎস করেছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের। তাই আওয়ামী লীগের ইতিহাস, বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল অর্জন ও সংগ্রামের ইতিহাস।

আওয়ামী লীগের ২৩ জুন ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী (প্লাটিনাম জয়ন্তী) উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। যারমধ্যে রয়েছে, রোববার (২৩ জুন) সূর্য উদয় ক্ষণে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন।

সকাল ৭ টায় ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বরস্থ ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল সাড়ে ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সমাধিতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একটি প্রতিনিধি দল শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন: সভাপতিম-লীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এমপি, সভাপতিম-লীর সদস্য শাজাহান খান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী এমপি, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন্নাহার এমপি, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা এমপি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।

এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে। এরপর দুপুর ২ টা ৩০মিনিটে আলোচনা সভা ও সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করনে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচির মাধ্যমে জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের জেলা/মহানগর, উপজেলা/থানা, পৌর/ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড শাখাসহ সকল স্তরের নেতা-কর্মী সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বিচারব্যবস্থা রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে: আমীর খসরু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন আমীর খসরু

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন আমীর খসরু

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বিচারব্যবস্থা রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) চট্টগ্রাম মহানগর আদালতে ছয়টি মামলার হাজিরা শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই অভিযোগ করেন।

কয়টা মামলায় হাজিরা আর কী হলো? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মামলা কয়টা ভুলে গেছি, কোনো হিসাব নাই। মামলারও হিসাব নাই, হাজিরারও হিসাব নাই। সুতরাং কয়টা আমি নিজেও জানি না।

এ সময় তিনি পাশে থাকার নেতাকর্মীদেরকে থেকে জিজ্ঞেস করেন বলেন, বেশি না আজকে ৬টা মামলায়।

আমীর খসরু বলেন, একটা দেশের বিচার ব্যবস্থা রাজনৈতিক অস্ত্রে পরিণত হয়েছে, তার পরিণতি ভোগ করছি আমরা। যারা ভিন্ন পথ ও ভিন্ন মত পোষণ করে, তাদেরকে এই পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে। এটায় ফলাফল আর তো কিছু না।

মামলা নিষ্পত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কোনটা দ্রুত আর কোনটা ধীরে যাবে এসব কাদের হাতে হাতে সেটা আপনারা তো জানেন। বিচার ব্যবস্থা আজকে কারা নিয়ন্ত্রণ করছে! এটা তো রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সুতরাং যারা ব্যবহার করছে তারাই তো জানে কোনটা ধীরে করবে আর কোনটা ত্বরান্বিত করবে। বিচারব্যবস্থা হিসেবে যে একটা পদ্ধতি থাকে সেগুলা বাংলাদেশে নাই।

সব নেতাকর্মী তো একের পর এক মামলায় হাজিরা দিচ্ছে, এতে আপনাদের হতাশা ধরছে কিনা? এমন প্রশ্নে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, কোনো হতাশা নেই। বাংলাদেশের মানুষ এখন এইভাবে সাফার করতে করতে, এটা শুধু আমাদের নেতা কর্মী বলে নয়। যারা ভিন্ন মত, ভিন্ন দল পোষণ করে সকলে আজ একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সুতরাং এটাকে নিয়েই চলতে হচ্ছে, দেশ ও নাগরিকদের চলতে হচ্ছে। যারা সরকারের সাথে একমত নেই, তাদেরকেও চলতে হচ্ছে। দেখা যাক এটা কতটুকু যায়, আমরা অপেক্ষা করি!

;

ক্ষমতায় থেকেও জিয়া হত্যার বিচার করতে পারেনি বিএনপি: হানিফ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
আ. লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ/ছবি: বার্তা২৪.কম

আ. লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে হত্যার স্বীকার হতে হয়েছিল, এটা সাধারণ মৃত্যু ছিল না। জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার সময়ে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। দুইবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকেও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের হত্যার বিচার করতে পারেননি তারা। এখন বিএনপির নেতারা বলছেন তাকে পরিকল্পতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘জেলা রিপোর্ট প্রকাশনা’ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের তিনি এসব কথা বলেন।

জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থেকেও কেন তার স্বামীর হত্যার বিচার করতে পারেননি এটা আমার প্রশ্ন। বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন, সুস্থ হয়ে আবারও তাকে রাজনীতির মাঠে ফিরে আসার আহবান জানান হানিফ।

হানিফ ভারত প্রসঙ্গে বলেন, ভারতকে কী বেশি দেওয়া হয়েছে, সেটা বিএনপি ক্যাটাগরি ঠিক করে স্পষ্টভাবে যদি বলত তাহলে তা বোঝা সহজ হতো। কিন্তু বিএনপি মিথ্যা রাজনীতি ও স্ট্যান্ডবাজি করে টিকে থাকতে চায়। বিএনপিকে এসব অযৌক্তিক কথাবার্তা না বলার আহবান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা সহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

;

আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা অসম্ভব: কামরুল ইসলাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
এডভোকেট কামরুল ইসলাম/ছবি: বার্তা২৪.কম

এডভোকেট কামরুল ইসলাম/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব না; অসম্ভব। মুক্ত করার একমাত্র পথই হচ্ছে আইনি লড়াই। যে পথে তারা হাঁটে না।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন ) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের ৪র্থ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর একাডেমি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার রায় হয়েছে কত সালে, কিন্তু এখনো তারা (বিএনপি) মুক্তির আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারে নাই। এটা হচ্ছে তাদের একটা ভেলকিবাজি, মিথ্যা, ধোঁকা। তারা খালেদা জিয়াকে জেলখানায় রেখে তারেক রহমানকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা কর‍তে চায়। খালেদা জিয়াকে তারা মুক্ত করতে চায় না। মুক্তি সম্ভব একমাত্র আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে। কিন্তু তারা আদালতে যায় না।

আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে তিনি (খালেদা জিয়া) প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় বাসায় বসবাস করছেন মুক্ত মানুষ হিসেবে। চিকিৎসা পাচ্ছেন, নেতাকর্মীরা দেখা করতে পারছেন। সবই করতে পারছেন। কিন্তু তারা (বিএনপি) খালেদা জিয়াকে আবার রাজনীতিতে আনবে, মুক্ত মানুষ হিসেবে রাজনীতিতে আনবে তার জন্য কোনো আইনি লড়াই তারা করে না, করার মতো কোনো মানসিকতাও তাদের নাই। কারণ তারা চায় তারেককে রাজনীতিতে স্ট্যাব্লিজড করতে। এই কারণেই তারা খালেদা জিয়ার আসল মুক্তি চায় না। এখনো তারা বলে যে আন্দোলন করবে। আন্দোলন করে তারা কী করবে ? কোন লাভ নাই। আইনি লড়াই ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি কোনো অবস্থাতেই সম্ভব না। আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব না; অসম্ভব। মুক্ত করার একমাত্র পথই হচ্ছে আইনি লড়াই। যে পথে তারা হাঁটে না।

তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে ক্ষমতায় যাবো এই নিশ্চয়তা পেলে নির্বাচনে যাবো আর এই নিশ্চয়তা না পেলে নির্বাচনে যাবো না, এটা কোনো গণতান্ত্রিক দলের চরিত্র হতে পারে না। বিএনপির সেই চরিত্র, তাই তারা নির্বাচনে আসে না। বারবার নির্বাচনে আসে না আর আমাদের অপবাদ দেয়। কিন্তু আমরাতো চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক সংসদে শক্তিশালী অপজিশন গঠন করুক। কিংবা সরকার গঠন করুক, নির্বাচনের মাধ্যমে যাই হোক হবে। এটাইতো নিয়ম; কিন্তু তারা আসে না। তারা আন্দোলন করে, কিন্তু সফল হয়েছে তা বলা যাবে না। তারা আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস করে, জ্বালাও পোড়াও করে। এটা কোনো আন্দোলন হতে পারে না। আমরাও তো আন্দোলন করেছি। কিন্তু তাদের মতো জ্বালাও পোড়াও করিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অনেকে ষড়যন্ত্র করছে, মিথ্যা গুজব রটাচ্ছে। বলছে যে, আমাদের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ। অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়েছে। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা কিন্তু এখনো ভালো আছে। আমরা ভালো আছি। করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের পরও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে।

মোহাম্মদ নাসিমের স্মৃতিচারণ করে কামরুল ইসলাম বলেন, নাসিম ভাই যে একজন বড় মাপের নেতা কিন্তু র্কর্মীদের সাথে তার ভাবসাবে সেটা বোঝা যায় না। আর আমাদের সাথে সম্পর্কতো ছিল অন্যরকম। একজন কর্মীবান্ধব নেতা ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। তাকে যখন ১৪ দলের দ্বায়িত্ব দেয়া হলো তিনি তখন ১৪ দলকে সক্রিয় করে তুলেছেন। ১/১১ এর সময় তাকে আটক করা হয়েছিল। তাকে অনেক নির্যাতনও করা হয়েছিল, কিন্তু নেত্রীর বিপক্ষে একটা কথাও বের করতে পারেনি। এই হচ্ছে মোহাম্মদ নাসিম।

বাবার স্মৃতিচারণ করে মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয় বলেন, চার বছর হয়ে গিয়েছেন আব্বা নেই, কিন্তু তার এলাকার মানুষ এখনো ভাবে যে আব্বা বেঁচে আছেন। আব্বাই এখনো তাদের নেতা। এটাই কিন্তু পাওয়া। আব্বার সাথে নেতাকর্মীদের খুব ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। তিনি সবসময় নেতাকর্মীদের সাথে কানেক্টেড থাকতেন। আমরা শুক্রবার আসলে দেখেছি আব্বা অস্থির হয়ে থাকতেন তার কর্মীদের সাথে দেখা করতে কথা বলতে। তখন যদি কেউ না আসতে পারতেন আব্বা তাকে ফোন দিয়ে খোঁজ খবর নিতেন। এই যে নেতাকর্মীদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এটাই আব্বার থেকে শিক্ষনীয়।

বঙ্গবন্ধু একাডেমীর সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজির সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পীকার শামসুল হক টুকু, আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম প্রমুখ।

;

নতুন করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান দুদু’র



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশবাসী ও বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে আগামী ২৯ তারিখ থেকে নতুন করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই সরকারকে পতন করে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাজধানী শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এক দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, এরশাদকে পতন করেছেন। উনার হাত দিয়ে এদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস হয়েছে। উনার স্বামী স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন রণাঙ্গনে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে সফল হয়েছেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি নিজে তিন তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। উনার জীবনের কোন নির্বাচনে উনি হারেননি। সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য রাজপথে কর্মসূচি দিতে হচ্ছে। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা, হৃদয় বিদারক ঘটনা বাংলাদেশে আর নাই।

তিনি বলেন, ২৯ তারিখে যে আন্দোলন শুরু হবে। সেই আন্দোলনে চূড়ান্ত হবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আসবে কি আসবে না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবে কি হবে না। তাই আসুন আগামী শনিবার থেকে প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ হই আমরা। সেদিন থেকে নতুন করে আবার আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতন করে বেগম জিয়াকে মুক্ত করি।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের, শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষি এমন কোন কিছু নাই যার উন্নতি ও উন্নতি করার জন্য কাজ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া করেন নাই। নারী শিক্ষার অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাই দেশকে রক্ষা করতে ও বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে আবার নতুন করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিল আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব ইমরান সালেহ্ প্রিন্স, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোজাম্মেল হক, ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুল হোসেন, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ

;