রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসকারীদের রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে বিচার চান রওশন
কোনো নাগরিক তার দেশের সম্পদ এভাবে ক্ষতি করতে পারে না, যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তারা দেশের শত্রু। তাদের রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে বিচার করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (রওশন) চেয়ারম্যান ও সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
শনিবার (২৭ জুলাই) আন্দোলনকারীদের আগুনে বিধ্বস্ত সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনকালে এমন মন্তব্য করেন। সেতু ভবনের সামনে গাড়িতে বসেই ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখেন। এরপর স্বাস্থ্য অধিদফতর পরিদর্শন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে যান।
১৮ ও ১৯ জুলাই দুই দফায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয় সেতু ভবনে। এই হামলায় ৫৫টি গাড়ি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। এছাড়া ভবনের নিচতলায় বঙ্গবন্ধু কর্নার, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, মিলনায়তন, ডে-কেয়ার সেন্টার পুড়ে গেছে পুরোপুরি। নিচ থেকে ৭ তলা পর্যন্ত ক্ষতচিহ্ন জ্বল জ্বল করছে। নিচতলা ও সামনের পার্কিং এরিয়া অনেকটা ভাগাড়ের মতো দেখাচ্ছে। ভবনের দক্ষিণ দিকে পার্কিং এলাকায় থাকা সবগুলো গাড়ি পুড়ে বিবর্ণ আকার ধারণ করেছে। আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর বৃষ্টিতে এরইমধ্যে মরিচার আস্তরণ পড়েছে। এতে করে বুঝবার উপায় নেই কয়েকদিন আগে গাড়িগুলো সচল ছিল, মনে হচ্ছে কতকাল আগে ডাম্প করা।
সেতু ভবনের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করে হাতের বামে ভবনের সিঁড়ির গোড়ায় যাত্রী নামিয়ে একটু এগিয়ে গিয়ে ডানে টার্ন নিয়ে পার্কিং অথবা বেরিয়ে যাওয়ার পথ। সেই পথটুকু শুধু ফাঁকা ছিল। সেই গাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার পথে অস্থায়ী তাবু টানিয়ে চলছে সেতু বিভাগের কাজকর্ম। অন্যদিকে ১৯ জুলাই শুক্রবার দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ২৩টি গাড়ি পুড়ে যায়। ভাঙচুর করা হয় আরও ২৮টি গাড়ি।
রওশন এরশাদ বলেন, সন্ত্রাসীরা যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে তার নিন্দা জানানোর ভাষাও আমি হারিয়ে ফেলেছি। মিডিয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসের ছবি দেখে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। তাই আজকে নিজে চোখে দেখতে এসেছি। এই ক্ষতি হয়তো পুষিয়ে উঠতে সরকারের কষ্ট হবে, কিন্তু মনের ক্ষত আমরা মুছতে পারবো না।
তিনি বলেন, কোমলমতি ছাত্র সমাজ ন্যায় সঙ্গত কিছু দাবি জানিয়েছিল, আমরাও তাদের দাবির প্রতি সমর্থন দিয়েছিলাম। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ছাত্রদের দাবি বাস্তবায়িত হয়েছে। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে চক্রান্তকারীদের অনুপ্রবেশ ঘটায় আন্দোলনে সহিংসতা দেখা যায়। তার জন্য অনেক ছাত্রের অমূল্য জীবন হারিয়ে যায়। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্য প্রাণ হারিয়েছে। এই ক্ষতি পূরণ হবার নয়।
আমি সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি ও যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। নিহতদের পরিববার পরিজনকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানান রওশন এরশাদ।